img

আব্দুল হামিদকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়নি, জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশিত :  ০৭:৩০, ০৯ জুন ২০২৫

আব্দুল হামিদকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়নি, জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট নেই বলেই গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

আজ সোমবার (০৯ জুন) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

\r\nস্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আব্দুল হামিদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট না থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, সরকার চেষ্টা করছে অপরাধ করেননি এমন কারও যাতে শাস্তি না হয়। তাই প্রতিটি মামলার গভীর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সাবেক রাষ্ট্রপতির বিদেশ যাওয়াকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জের এসপি ও তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, সেগুলোরও তদন্ত চলছে বলেও জানান তিনি।

\r\nএর আগে রোববার (৮ জুন) দিবাগত রাত দেড়টায় থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে (টিজি-৩৩৯) ঢাকায় আসেন আব্দুল হামিদ। অবতরণের পর ১টা ৪৫ মিনিটে তিনি হুইল চেয়ারে করে ইমিগ্রেশন কাউন্টারে যান। সেখানে তাকে দীর্ঘক্ষণ হুইল চেয়ারে বসে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। পরে রাত পৌনে ৩টার সময় তার ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হলে তিনি বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। এ সময় তার পরনে ছিল শার্ট ও লুঙ্গি।

\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করা মো. আবদুল হামিদ গত মে মাসের শুরুতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশ ছেড়েছিলেন। আবদুল হামিদের দেশত্যাগে কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকায় চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যান তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ তুষার ও শ্যালক ডা. আ ন ম নৌশাদ খান যান। দেশের চিকিৎসকদের পরামর্শেই তিনি বিদেশে গিয়েছিলেন বলে জানা যায়।
\r\nবিষয়টি জানাজানি হলে শুরু হয় তোলপাড়। তার দেশ ছাড়ার সহযোগীদের চিহ্নিত করতে পুলিশ সদর দপ্তর উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটিও করে। তাকে দেশত্যাগে সহযোগিতায় জড়িতদের শনাক্ত করতে গঠিত ওই কমিটি কাজ শুরু করে।
\r\nআবদুল হামিদ ২০১৩ সালে ২৪ এপ্রিল প্রথম দফায় দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি, ২০১৮ সালে ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথগ্রহণ করেন। তার মেয়াদ শেষে ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মোঃ সাহাবুদ্দিন। বঙ্গভবন ছাড়ার পর আবদুল হামিদ রাজধানীর নিকুঞ্জে তারা বাসায় উঠেছিলেন।
\r\nছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলি করার ঘটনায় কিশোরগঞ্জে সদর মডেল থানায় ১৪ জানুয়ারি সাবেক রাষ্ট্রপতি আবুদল হামিদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহেনা, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সামা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১২৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়।
\r\nআবুদল হামিদের দেশত্যাগের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এরই প্রেক্ষিতে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

জাতীয় এর আরও খবর

img

ঢাকায় ভিসা কার্যক্রম ফের চালু করায় অস্ট্রেলিয়াকে ধন্যবাদ জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশিত :  ১৫:০৯, ১৭ জুন ২০২৫

ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রম পুনরায় চালু করায় দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুসান রাইলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এই ধন্যবাদ জানান।

হাইকমিশনার রাইল জানান, এখন থেকে ভিসা আবেদন অনলাইনের মাধ্যমে জমা দেওয়া যাবে। বর্তমানে ৬৫ হাজারের বেশি বাংলাদেশি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন এবং সেখানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪ হাজারের বেশি।

সাক্ষাৎকালে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, নির্বাচন, প্রশাসনিক সংস্কার ও রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন,“বিশৃঙ্খল একটি সময় পার করে আমরা সাংবিধানিক, বিচারিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি। একটি শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কাজ করছি, যাতে মসৃণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করা যায়।”

তিনি জানান, আগামী জুলাই মাসে ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন করা হবে।

জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন,“এই প্রথমবার জনগণ, বিশেষত তরুণ ভোটাররা স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবে। আমি বিশ্বাস করি, এটি একটি উৎসবমুখর ও আশাব্যঞ্জক মুহূর্ত হবে।”

নির্বাচনী সহায়তার অংশ হিসেবে ইউএনডিপির মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের দক্ষতা বৃদ্ধিতে অস্ট্রেলিয়া ২০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার দেবে বলে জানান হাইকমিশনার রাইল।

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রসঙ্গে তিনি জানান, বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার বাণিজ্য ৫ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারে পৌঁছেছে, যা গত পাঁচ বছরে গড়ে বছরে ১৬.২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

রাইল আরও জানান,“অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডসের মাধ্যমে তিন হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এখন অ্যালামনাই নেটওয়ার্কে যুক্ত, যারা দেশের অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখছেন।”

প্রফেসর ইউনূস এই বৃত্তির সংখ্যা আরও বাড়াতে অনুরোধ জানান।

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,“বাংলাদেশে অবস্থানরত ১০ লাখ রোহিঙ্গার জন্য মানবিক সহায়তা আরও বাড়ানো জরুরি।”

এর জবাবে হাইকমিশনার রাইল জানান, ২০১৭ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশে ৫৫৩.৬ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারের মানবিক সহায়তা দিয়েছে এবং সম্প্রতি আরও ৯.৬ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়েছে।

তিনি বলেন,“মিয়ানমারে পরিস্থিতি অনুকূল হলে, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের পাশে থাকবে।”

বাংলাদেশে নতুন দায়িত্ব পেয়ে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে রাইল বলেন,“বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক গতিশীলতা দীর্ঘদিন ধরে আমাকে আকৃষ্ট করেছে। এখানে এসে আমি সত্যিই রোমাঞ্চিত।”

সাক্ষাতে সিনিয়র সচিব ও এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অনুবিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ নূরে আলম উপস্থিত ছিলেন।