img

বানিয়াচঙ্গে শিশু ইয়াছিন হত্যাকারী সৎ বাবা আটক

প্রকাশিত :  ১৪:৫৫, ২৯ মে ২০১৯

বানিয়াচঙ্গে শিশু ইয়াছিন হত্যাকারী সৎ বাবা আটক

জনমত ডেস্ক: বানিয়াচঙ্গে সৎ বাবার হাতে ছেলে খুনের ১০ দিনের মাথায় হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যার দায় স্বীকার করে ঘাতক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৫ মে বানিয়াচং উপজেলার ৫নং দৌলতপুর ইউনিয়নে। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শিশু ইয়াসিন এর মা রোকসানা বেগমের বিয়ে হয় শাল্লা থানার দুলাল মিয়ার সাথে। বিয়ের পর থেকেই তাদের সংসারে নানা অভাব অটনের কারনে তাদের মধ্যে প্রায়শই ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। এসব কারনে রোকসানা বেগম এবং দুলাল মিয়ার সংসার বেশীদুর আগায়নি। দুলাল মিয়া এবং রোকসানা বেগম এর মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরবর্তী রোকসানা বেগম তার ছেলে ইয়াসিনকে সাথে নিয়ে বাবার বাড়ী দৌলতপুরের নোয়াগাও হাইস্কুল হাটিতে চলে যান। বাবার বাড়ীতে থাকার সুবাদে পরিচয় হয় সৌরভ নামে জনৈক এক ব্যক্তির সাথে। একে অপরের সাথে পরিচয়ের পর সৌরভ বিয়ে করে রোকসানাকে। বিয়ের পর শিশুপুত্র ইয়াছিনকে সৌরভ বাবা বলে ডাকতে বলে। ইয়াছিন এতে রাজি হয়নি। সে তাকে মামা হিসেবে সম্বোধন করতে থাকে। এতে সৌরভ শিশু ইয়াছিন এর উপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এছাড়া তাদের সংসারে বাড়তি ঝামেলা হিসেবে শিশু ইয়াছিনকে মেনে নিতে পারেনি সৌরভ। এ জন্য সে শিশু ইয়াছিনকে প্রায় সময়ই মারধোরও করতো। তারপরও ইয়াছিন তাকে বাবা বলবে না বলে জানায়। এরপর থেকেই সৌরভ শিশু ইয়াছিনকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে। গত ১৫ মে শিশু ইয়াছিন (৬) কে বাড়ীতে না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় তার মা’সহ আত্মীয় স্বজনরা খোজাখোজি করতে থাকে। পরদিন ১৬ মে কাদিরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী নির্জন পুকুরে শিশু ইয়াছিন নিথরদেহ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী থানা পুলিশকে খবর দিলে এসআই আমিনুল হকসহ এদকল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পুকুরের কাদার ভিতর থেকে ইয়াছিন এর নিথরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্টের জন্য হবিগঞ্জ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। ওই দিনই শিশু ইয়াছিন এর মা রোকসানা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয় এসআই আমিনুল হককে। মামলা দায়ের এর পরপরই বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রাশেদ মোবারক, তদন্তকারী অফিসার আমিনুল হকসহ পুলিশের একাধিক টীম হত্যা রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে। এরই মধ্যে হবিগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লাহ শিশু ইয়াছিন হত্যার রহস্য বের করতে পুলিশের বিভিন্ন সংস্থাকে দায়িত্ব দেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশক্রমে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে এ ঘটনার সাথে কার সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে এ বিষয়ে পুলিশ বিভিন্ন সূত্রের সন্ধ্যান নিতে থাকে। এরই মধ্যে বিভিন্ন বিষয়াদি পর্যালোচনা করে সন্দেহের তীর পরে সৎ বাবা সৌরভের দিকে। সবশেষ গত সোমবার তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সুনামগঞ্জের দিরাই থানার পাগলাবাজার (পীরের গাও) থেকে গ্রেফতার করা হয় শিশু ইয়াছিন এর সৎ বাবা সৌরভ মিয়া (২৮) কে। সে ধল (আশ্রম) গ্রামের দিরাই থানার আব্বাছ মিয়ার ছেলে। গতকাল বানিয়াচং থানায় নিয়ে আসার পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশু ইয়াছিন হত্যার কথা স্বীকার করে। পরবর্তী বানিয়াচং থানা পুলিশ সৌরভকে হবিগঞ্জ কোর্টে হাজির করলে সে ১৬৪ ধারায় আদালতে ম্যাজিস্ট্রেট এর কাছে শিশু হত্যার দায় স্বীকার করেছে এবং কিভাবে শিশু ইয়াছিনকে হত্যা করেছে তার বর্ননাও সে আদালতের কাছে জবানবন্দীতে উল্লেখ করেছে। এদিকে শিশু ইয়াছিন হত্যাকারী ঘাতক সৌরভের ফাসিঁর দাবী জানিয়েছেন শিশু ইয়াছিন এর মা’সহ এলাকাবাসী।

সিলেটের খবর এর আরও খবর

img

অবশেষে সিলেট-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী

প্রকাশিত :  ১৭:০১, ০৫ নভেম্বর ২০২৫

অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করতে সম্মতি প্রকাশ করেছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। আজ বুধবার রাতে আরিফুল হক চৌধুরী নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তবে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাপারে কোন ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

গত সোমবার দেশের অন্যান্য আসনের সাথে সিলেটের ৪ টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি। তবে সিলেট-৪ ও সিলেট-৬ আসনে সেদিন কোন প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি।

বিএনপি সূত্রে জানা যায়, আরিফুল হককে দল থেকে একাধিকবার সিলেট-৪ আসনে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে তাতে সম্মত হননি আরিফ। তিনি সবসময়ই সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে সিলেট-১ আসন অথবা সিঠের সিটি নির্বাচনের মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে আসছিলেন।

সর্বশেষ সোমবার বিভিন্ন আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণার পর মঙ্গলবার বিএনপির শীর্ষ নেতবেৃন্দের পক্ষ থেকে জরুরী তলব দিয়ে আরিফকে ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে মঙ্গলবার ও বুধবার আরিফের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। এসব বৈঠকে আরিফুল হককে সিলেট-৪ আসনে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি প্রথমে সম্মত হননি বলে জানা গেছে। এরপর বুধবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তাঁকে বাসায় ডেকে পাঠান।

রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবনে চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকে আরিফুল হক ওই আসনে নির্বাচন করতে সম্মত হন।

সিলেট-৪ আসনে প্রার্থী হওয়ার কথা জানিয়ে ঢাকা থেকে রাতে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, “চেয়ারপারসন আমাদের জাতীয় মুরুব্বী। তাঁর নির্দেশে আমি সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করতে সম্মত হয়েছি। দলের প্রয়োজনে আমি বারবার নির্দেশ পালন করে আসছি। আজকের সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করার আদেশ মাথা পেতে মেনে নিয়েছি।

আরিফুল হক চৌধুরী ২০১৩ সালের সিলেট সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লৈগৈর প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানকে পরাজিত করে সিলেট সিটির মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৮ সালেও তিনি মেয়র নির্বাচিত হন। তবে সর্বশেষ ২০২৩ সালের সিটি নির্বাচনে দলীয় নির্দেশনা মেনে প্রার্থী হননি তিনি।


সিলেটের খবর এর আরও খবর