img

সিলেটে চা বাগানের জমিতে আবাসন বাণিজ্য, ৩৫ প্লট উচ্ছেদ

প্রকাশিত :  ১৪:২১, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

 সিলেটে চা বাগানের জমিতে আবাসন বাণিজ্য, ৩৫ প্লট উচ্ছেদ

সিলেটে চা বাগানের ভূমিতে অবৈধভাবে প্লট করে আবাসন বাণিজ্য বন্ধে অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন। জেলার খাদিমনগর চা-বাগানে প্রায় ১০ একর চা-ভূমিতে কেনাবেচা করে নির্মিত ৩৫টি প্লট উচ্ছেদ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়। চা-বাগানের টিলায় অবৈধভাবে নির্মিত বেশ কয়েকটি টিনের ঘর ও স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়।

অভিযানের সময় স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাগানের টিলায় দীর্ঘদিন ধরে প্লটিংয়ের কাজ চলছে এবং এতে বাগানের ব্যবস্থাপকসহ কয়েকজন জড়িত রয়েছেন। তবে অভিযানে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, চা-বাগান কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে অবৈধ কার্যক্রম চলছে। অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হয়েছে জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খুশনুর রাবাইয়াত বলেন, ‘চা-ভূমির টিলা কাটা এবং অবৈধভাবে বাড়িঘর নির্মাণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এখানে চা-ভূমি হিসেবে সরকারি জমি দখল করে প্লটিং করা হচ্ছিল। যাদের দখলে জমি ছিল, তাদের কাছ থেকে জমি উদ্ধার করা হয়েছে।’

চা-বাগানের ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে ইউএনও বলেন, ‘আমরা বাগানের ব্যবস্থাপককে ঘটনাস্থলে আসার জন্য অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু তিনি সহযোগিতা করেননি। এ বিষয়ে নিয়মিত মামলা করা হবে এবং পুলিশের তদন্তে যা বেরিয়ে আসবে, তার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রশাসনের ভূমিসংশ্লিষ্ট শাখা সূত্র জানায়, খাদিমনগর চা-বাগানে ৩৫টি প্লট, দুটি টিনশেড ঘরসহ আনুমানিক ১০ একর জায়গায় প্লট বাণিজ্য হয়েছে। এরমধ্যে চা-ভূমির (৭১ নং খাদিমনগর টি গার্ডেন মৌজা) ১১১১, ১১১২, ১১১৩, ১১১৪, ১১১৫ ও ১১১৮ নং দাগের আনুমানিক ১০ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে।

খাদিমনগর চা-বাগান সিলেটের সুরমাভালির একটি পুরোনো চা-বাগান। বাগানটির একাংশ সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্ধিত ৩৫নং ওয়ার্ড এলাকায় পড়েছে। প্রশাসনের এ অভিযানের পর এলাকাজুড়ে অবৈধ প্লট বিক্রি ও দখলবাজি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। আইনত চা-ভূমি চা-বাগানসংশ্লিষ্ট কাজ ছাড়া অন্য কোনো কাজে ব্যবহার নিষিদ্ধ। এ বিষয়ে বাগান কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। চা-বাগান পাশের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা এ বিষয়ে প্রশাসনের সার্বক্ষণিক নজরদারির আহ্বান জানিয়েছেন।

সিলেটের খবর এর আরও খবর

img

পরকীয়ার অভিযোগে মাজার জিয়ারতের কথা বলে সিলেটে এনে স্ত্রীকে খুন!

প্রকাশিত :  ০৮:৫৪, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১০:৫৭, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

হযরত শাহজালাল (র.) এর মাজার জিয়ারতের কথা বলে স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে সুনামেঞ্জের দোয়ারাবাজারের ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে। শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। এর আগের দিন দোয়ারাবাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সিলেটের এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ।

এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ অক্টোবর বিকেলে লাক্কাতুরা চা বাগানের ভাইগণ নামক টিলার উপরে নির্জন ও ঝোপঝাড়ে এক অজ্ঞাতনামা নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতদেহটি আংশিক পচনধরা অবস্থায় ছিল। প্রাথমিকভাবে ওই নারীর বয়স প্রায় ২৫ বছর অনুমান করা হয়। পরনে ছিল নতুন লাল রঙের জমিন ছাপা শাড়ি, হালকা গোলাপি রঙের বোরকা, এবং গলায় হলুদ রঙের ওড়না পেঁচানো ছিল। মৃতদেহের পাশেই পাওয়া যায় একটি লেডিস হ্যান্ডব্যাগ, যার ভিতরে ছিল কয়েকটি জামাকাপড় এবং ব্যাগের পকেটে একটি ছোট মেমোরি কার্ড।

পিবিআই ও সিআইডি কর্তৃক আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করা হলেও, আঙ্গুলে পচন ধরায় পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।পরবর্তীতে মেমোরি কার্ডে থাকা রেকর্ডকৃত মোবাইলের কথোপকথনের অডিও তথ্য বিশ্লেষণ করে এবং সংশ্লিষ্ট নম্বরের সিডিআর সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে পুলিশ মৃত নারীর পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

নিহত নারী হলেন—সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারা বাজার থানার মওলারপাড় গ্রামের মৃত মাহতাব মিয়ার কন্যা রাবেয়া বেগম। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তদন্তে অগ্রগতি ঘটে এবং পুলিশের সন্দেহভাজন হিসেবে উঠে আসে নিহতের স্বামী সুনামগঞ্জ সদর থানার রাঙ্গারচর গ্রামের ওমান ফেরত আব্দুল আজিজের ছেলে ফারুক আহমেদ।

এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এয়ারপোর্ট থানার একটি আভিযানিক দল দোয়ারা বাজার থানাধীন রাঙ্গারচর গ্রামে অভিযান চালিয়ে ফারুককে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিকভাবে ফারুক হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করলেও, জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করলে সে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে।

আসামি ফারুকের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ফারুক ওমানে অবস্থানকালে তার স্ত্রী রাবেয়া বেগমের পূর্বের বিয়ে গোপন করা, তার সাথে বিয়ের পর অন্য পুরুষের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়া নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্য চলছিল। পরবর্তীতে গত ১৩ অক্টোবর ফারুক স্ত্রীকে নিয়ে হযরত শাহজালাল (রহঃ)-এর মাজার জিয়ারতের কথা বলে সিলেটে আসে। মাজার জিয়ারত শেষে বেড়ানোর কথা বলে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উত্তর-পূর্ব দিকের নির্জন টিলায় নিয়ে যায়। সেখানে বিকেল আনুমানিক চারটার দিকে তার ফুফাতো ভাই আলামিনের সহায়তায় স্ত্রী রাবেয়া বেগমকে গলা টিপে হত্যা করে।

এ ঘটনার বিষয়ে এয়ারপোর্ট থানায় ফারুক ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ভিকটিমের চাচা রিপন মিয়া অভিযোগ দায়ের করলে এয়ারপোর্ট থানার মামলা নং-১৭ তারিখ-১৭/১০/২৫খ্রিঃ ধারা ৩০২/৩৪।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, শনিবার (১৮ অক্টোবর) ফারুককে আদালতে উপস্থাপন করলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের সম্মুখে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। জবানবন্দি প্রদান শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সিলেটের খবর এর আরও খবর