img

সিলেট লালদিঘিরপাড়ে হকার শেড তৈরি করল সিসিক

প্রকাশিত :  ১০:০০, ২০ অক্টোবর ২০২৫

সিলেট লালদিঘিরপাড়ে হকার শেড তৈরি করল সিসিক

সিলেট নগরীর যানজট নিরসন ও সড়ক-ফুটপাত হকারমুক্ত করার লক্ষ্যে লালদিঘিরপাড়ে অস্থায়ী হকার শেড তৈরি করেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক)। ভ্রাম্যমাণ হকারদের পুনর্বাসনের জন্য নির্মিত এই অস্থায়ী বাজারে কোনো ভাড়া ছাড়াই ব্যবসার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে হকাররা সেখানে ব্যবসা শুরু করেছেন।

আজ রোববার (১৯ অক্টোবর) সকাল থেকে অনেক হকারকে নতুন শেডে তাদের পসরা সাজাতে দেখা যায়।

দীর্ঘদিন ধরে সিলেট নগরীর বিভিন্ন সড়ক ও ফুটপাত দখল করে হকারদের ব্যবসার কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছিল। এতে সাধারণ মানুষের চলাচলেও ভোগান্তি বেড়ে যায়। এই সমস্যা নিরসনের উদ্যোগ হিসেবে সিসিক নগরভবনের পেছনে লালদিঘিরপাড় মাঠে হকারদের জন্য স্থাপন করেছে অস্থায়ী বাজার।

নতুন বাজারে দশটি গলিতে ইট, বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে অস্থায়ী শেড নির্মাণ করা হয়েছে। বাজারে প্রবেশের জন্য রাখা হয়েছে তিনটি প্রবেশপথ।

এছাড়া নির্মিত হয়েছে নতুন রাস্তা ও ড্রেন। ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে স্থাপন করা হয়েছে টয়লেটও।

কাঁচাবাজার, মাছ বাজার ও কাপড়ের দোকানসহ বিভিন্ন খাতের ব্যবসার জন্য নির্দিষ্ট স্থান চিহ্নিত করে সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে। বাজারে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সিসিকের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি সিসিক ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের যৌথ উদ্যোগে মাইকিংয়ের মাধ্যমে হকারদের সচেতন করা হচ্ছে।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার বলেন, ‘নগরী যানজটমুক্ত ও নাগরিকদের নির্বিঘ্ন চলাচলের স্বার্থে আমরা ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের জন্য লালদিঘিরপাড়ে অস্থায়ী শেড নির্মাণ করেছি। ব্যবসায়ীরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারেন সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোনো হকারের কাছ থেকে আমরা ভাড়া নিচ্ছি না- কাউকে কোনো টাকা দিতে হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘লালদিঘিরপাড়ের অস্থায়ী বাজারটি হকারদের জন্য নিরাপদ ও সুবিধাজনক আশ্রয় হবে। আশা করি তারা এখানেই ব্যবসা চালিয়ে যাবেন। এতে নগরীর যানজট কমবে, ফুটপাত হবে দখলমুক্ত, আর সিলেট নগরী হবে আরও সুন্দর ও সুশৃঙ্খল।’

সিলেটের খবর এর আরও খবর

img

সিলেট নগরের সড়কে নেই হকার, যানজটও কম

প্রকাশিত :  ০৯:০৭, ২০ অক্টোবর ২০২৫

সিলেট নগরের হকাররা জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা মেনে প্রধান প্রধান সড়ক ও ফুটপাত ছেড়ে দিয়েছেন । রোববার নগরের প্রধান সড়কগুলোতে হকারদের দেখা মিলেনি।

ফলে রোববার এক অন্যরকম নগরের দেখা পান নগরবাসী। দখলমুক্ত সড়ক ও ফুটপাত। কোথাও হকার নেই। ফলে যানজটও কমে গেছে অনেকটা। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নগরবাসী। এই অবস্থা অব্যাহত রাখার দাবি জানেয়েছেন তারা।

দুপুরে নগরীর প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা জিন্দাবাজার, লামাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, বন্দরবাজার ও তালতলা এলাকায় ফুটপাত ও সড়কে হকারদের দেখা মিলেন। তবে এসব এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তারা হেঁটে হেঁটে এসব এলাকায় টহল দিয়েছেন। সন্ধ্যার পর নগরের জিন্দাবাজার এলাকা পরির্দশন করেন পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, রোববার নগরের সাতটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে একযোগে অভিযান চালানো হয়। এতে সাতজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অংশ নেন। তবে তার আগেই হকাররা সড়ক ও ফুটপাত ছেড়ে চলে যান।

এর আগে শনিবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রবিবার সকাল থেকে নগরীর কোনো সড়ক বা ফুটপাতে হকার বসতে দেওয়া হবে না। এ নির্দেশ অমান্য করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হকারদের পুণবার্সনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে লালদিঘির পড়ের মাঠ। তবে সড়ক ছাড়লেও রোববার এই মাঠে সামান্য সংখ্যক হকারদের দেখা গেছে। মাঠের বেশিরভাগ জায়গাই ফাঁকা রয়েছে। কয়েকজন দোকান প্রস্তুত করতে দেখা গেছে।

তাদের একজন বলেন, আমরা এর আগেও দুবার এখানে এসেছি। এখানে ক্রেতারা আসেন না। ফলে ব্যবসাও হয় না। এই মাঠে প্রবেশের রাস্তাও খুব সরু।

তিনি বলেন, ব্যবসা না করতে পারলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। তাই প্রশাসনের কাছে দাবি আমাদের যেনো স্থায়ী একটি ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।

তবে হকাররা ফুটপাত ছাড়ায় খুশি নগরবাসী। বন্দরবাজার হাসান মার্কেটের ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের মার্কেটের সামনের প্রায় পুরোটা সড়ক তো হকাররা দখল করে নিয়েছিলো। সব সময় এখানে যানজট লেগে থাকতো। ক্রেতারাও ফুকতে পারতো না।

তিনি বলেন, আজ দেখি ফুটপাত ফাঁকা, যানজট নেই। মনে হচ্ছে সত্যিই পরিবর্তন আসছে।

নগরবাসী প্রশাসনের এই কঠোর অবস্থানকে স্বাগত জানালেও তাদের আশঙ্কা—এই অবস্থা কতদিন থাকবে? আবারও কি পুরনো চিত্রে ফিরে যাবে শহর?

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযান একদিনের নয়, চলবে ধারাবাহিকভাবে—যতদিন না পর্যন্ত নগরীর ফুটপাত ও সড়ক পুরোপুরি দখলমুক্ত রাখা যায়।

সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লালদিঘীরপারস্থ হকার মার্কেটের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। চলছে শেষ মুহুর্তের কাজ। এখানে প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার হকারের ব্যবসার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে এবং নির্দিষ্ট পণ্যের জন্য আলাদা এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম বলেন, লালদিঘির পাড় মাঠে হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবাইকে সেখানে চলে যেতে হবে। নগরের ব্যস্ততম এলাকার সড়কে হকারদের বসতে দেওয়া হবে না। বসলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিলেটের খবর এর আরও খবর