img

গরমে বাড়তে পারে করোনা রোগীর সংখ্যা

প্রকাশিত :  ০৪:২৪, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

গরমে বাড়তে পারে করোনা রোগীর সংখ্যা

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘জেএন১’ বিশ্বের ৪৫টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশও আছে এই তালিকায়। গত মাসে ৫ জনের নমুনায় এই ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়, আর এখন পর্যন্ত অন্তত ৩২ জনের নমুনায় মিলেছে এর অস্তিত্ব। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, শীত শেষে গরম বাড়লে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে পারে। এজন্য এখন থেকে নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

দেশে করোনা পরিস্থিতি বেশ সময় ধরে স্থিতিশীল থাকলেও গত জানুয়ারি থেকে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। শুধু জানুয়ারি মাসেই রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮৩৮ জন, আর মারা গেছেন ৫ জন। আর ফেব্রুয়ারির ছয়দিনে রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২৫৪ জন। 

দেশে গত ১৮ জানুয়ারি ৪ জন রোগীর নমুনায় নতুন ভ্যারিয়েন্ট জেএন১ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। এরপর এখন পর্যন্ত আরও ২৭ জনের তথ্য করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সের উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটায় (জিআইএসএআইডি) প্রকাশ করেছে আইইডিসিআর এবং ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভ (আইদেশি)।

ডাটাবেজের তথ্য বলছে, গাজীপুরে ২ জন, ঢাকায় ৯ জন, কিশোরগঞ্জে ২ জন, কুমিল্লায় ২ জন, যশোরে ১ জন, সিলেটে ৩ জন, চট্টগ্রামে ৯ জন, দিনাজপুরে ১ জন, গোপালগঞ্জে ২ জন এবং চাঁদপুরে ১ জনের নমুনায় জেএন ১ ভ্যারিয়েন্ট মিলেছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা নাজমুল ইসলাম জানান, সব বন্দরে স্ক্রিনিং কার্যক্রম চলমান আছে। এর পাশাপাশি যারা উপসর্গ নিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতালে তাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে।           

এছাড়া সবাইকে কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, অন্যান্য সময়ের চেয়ে করোনা রোগী একটু বেশি আছে বর্তমানে। আমাদের এখানে ফেব্রুয়ারি- মার্চ, জুন-জুলাই থেকে রোগী বেড়ে যাওয়া শুরু হয়। এখন শীতের মধ্যে একটু বাড়লো। আমাদের এখানে করোনা মৌসুমি রোগের মতো হয়ে গেছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে বলা যায় না, বাড়ার আশঙ্কা তো আছেই।

তিনি আরও বলেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারণে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। তবে হাসপাতালে যাওয়ার মতো তেমন রোগী নেই। আমাদের এখন অসুস্থ হলে পরীক্ষা করাতে হবে। অসুস্থ হলে বাইরে বের হওয়া যাবে না। যদি বের হতে হয় একান্ত প্রয়োজনে তাহলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি যেগুলো আছে তা মেনে চলতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, আমাদের দেশ গ্রীষ্মপ্রধান। সুতরাং সামনের দিনে করোনা রোগী বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কা আছে। আমরা হয়তো দেখবো ধীরে ধীরে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। তারপর হয়তো অনেক হারে বাড়ছে এরকম দেখতে পারবো গরমের দিনে।

তিনি আরও বলেন, নতুন ভ্যারিয়েন্ট মারাত্মক সংক্রমণ হয়তো ঘটাতে পারবে না। কিন্তু সেটি এখনই পুরো নিশ্চিত হওয়া যাবে না। কারণ আরও মিউটেশন হয়ে তার আচরণ পরিবর্তন করতে পারে। মিউটেশনের কারণে তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে। তখন মৃত্যু বাড়বে। তাই আমাদের এখন থেকে সারভেইল্যান্স বাড়িয়ে দিতে হবে। আমাদের চিকিৎসা সংক্রান্ত গাইডলাইন হালনাগাদ করতে হবে। চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। উপজেলা পর্যায় থেকে শুরু করে সব জায়গায় অক্সিজেনের ব্যবস্থা যেন পর্যাপ্ত থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে।

img

করোনার ঝুঁকি: জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভারতে না যাওয়ার পরামর্শ

প্রকাশিত :  ১৯:১৪, ০৯ জুন ২০২৫

ভারতসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এবং অন্যান্য দেশে ভাইরাসের এই ধরনটি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় নতুন সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভারত এবং ভাইরাস ছড়ানো অন্যান্য দেশে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি ঝুঁকি মোকাবেলায় সব স্থল ও বিমানবন্দরে হেলথ স্ক্রিনিং ও নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। 

আজ সোমবার (৯ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. হালিমুর রশিদের স্বাক্ষরে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। 

নির্দেশনায় বলা হয়, পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের নতুন সাব ভেরিয়েন্ট, বিশেষ করে অমিক্রন এলএফ. ৭, এক্সএফজি, জেএন-১ এবং এনবি ১.৮.১ এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে এর সম্ভাব্য সংক্রমণ প্রতিরোধে ভারত ও অন্যান্য সংক্রামক দেশ এবং বাংলাদেশ থেকে ভারত এবং অন্যান্য সংক্রামক দেশে ভ্রমণকারী নাগরিকদের জন্য দেশের সকল স্থল, নৌ, বিমানবন্দরের আইএইচআর ডেস্কে নজরদারি জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি ঝুঁকি মোকাবিলায় কিছু কার্যক্রম নিতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার দেশে করোনায় একজনের মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক না হলেও দেশে এ রোগের প্রকোপ বাড়ছে। আইসিডিডিআরবির গবেষকেরা করোনার নতুন একটি ধরন শনাক্তের কথা বলছেন। এর নাম এক্সএফজি। এর পাশাপাশি এক্সএফসি ধরনটিও পাওয়া গেছে। দুটোই করোনার শক্তিশালী ধরন অমিক্রনের জেএন-১ ভ্যারিয়েন্টের উপধরন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া সংক্রমণ প্রতিরোধে কিছু নির্দেশনা হলো:

- সাত বার প্রয়োজনমতো সাবান দিয়ে হাত ধোবেন (অন্তত ২৩ সেকেন্ড)।
- নাক-মুখ ঢাকায় জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন।
- আক্রান্ত ব্যক্তি হতে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরে থাকতে হবে
- অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না
- হাঁচি-কাশির সময় বাহ/ টিস্যু/ কাপড় দিয়ে নাক মুখ ঢেকে রাখুন।
দেশে প্রবেশ পথের জন্য নির্দেশনা
- দেশের বিভিন্ন স্থল/নৌ/ বিমান বন্দরসমূহে আইএইচআর (IHR-2005) স্বাস্থ্য ডেস্কসমূহে সতর্ক থাকা, হেলথ স্ক্রিনিং এবং সার্ভেল্যান্স জোরদার করুন।
- দেশের পয়েন্টস অব এন্ট্রি সমূহে থার্মাল স্কান্যার/ ডিজিটাল হেন্ড হেল্ড থার্মোমিটারের মাধ্যমে নন টাচ টেকনিকে তাপমাত্রা নির্ণয় করুন।

- চিকিৎসা কাজে স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ মাস্ক, গ্লাভস এবং রোগ প্রতিরোধী পোশাক মজুত রাখুন (পিপিই)

- ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য রোগ প্রতিরোধ নির্দেশনা সমূহ প্রচার করুন।
- জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত ভারত ও অন্যান্য আক্রান্ত দেশসমূহে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন।
সন্দেহজনক রোগীদের ক্ষেত্রে করণীয়
- অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন, মারাত্মক অসুস্থ হলে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।
- রোগীর নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে বলুন
- প্রয়োজন হলে আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করুন (০১৪০১-১৯৬২৯৩)