img

৬ লেনের দাবিতে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ, দীর্ঘ যানজট

প্রকাশিত :  ০৫:৪৪, ৩০ নভেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৬:৫০, ৩০ নভেম্বর ২০২৫

৬ লেনের দাবিতে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ, দীর্ঘ যানজট
চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ককে ছয় লেনে উন্নীত করার দাবিতে সাতকানিয়া উপজেলার বাসিন্দারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।

আজ রোববার (৩০ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিক্ষোভকারীরা উপজেলার কেরানিহাট এলাকায় সড়কে অবস্থান নেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ৬ লেনের দাবিতে নানা স্লোগান দিতে থাকেন।

বিক্ষোভকারীরা বলেন, মহাসড়কটি মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই এ সড়কের কোথাও না কোথাও ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটছে। আমরা এ পরিস্থিতি আর দেখতে চাই না। বারবার অনুরোধ ও দাবি জানিয়েও এখনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছি।

তারা আরও বলেন, এ সড়ক শুধু স্থানীয়রা ব্যবহার করেন না। এটি দেশের অর্থনীতি, পর্যটন এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবিক ত্রাণ পৌঁছানোর কার্যক্রমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ কক্সবাজারে যাতায়াত করেন। অথচ দেশের অন্যতম ব্যস্ত এ সড়কটি অনেক জায়গায় পাড়ার গলির চেয়েও সরু। প্রতিটি দুর্ঘটনার পর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সড়ক প্রশস্ত করার আশ্বাস মিললেও বাস্তবে কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না।

আন্দোলনকারী আকাশ চৌধুরী বলেন, প্রতিনিয়ত এ সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে। এসব দুর্ঘটনার দায়ভার কে নেবে? সড়কটি ছোট হওয়ায় প্রাণহানি ঘটছে। আমরা দ্রুত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক ৬ লেনে উন্নতি করণের দাবি জানাই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান মহাসড়কটি অত্যন্ত ব্যস্ততম হওয়ায় প্রতিদিন চরম যানজট, দুর্ঘটনা ও হতাহতের ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে পর্যটনকেন্দ্র কক্সবাজার ও বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রামের মাঝে যাতায়াত বেড়ে যাওয়ায় সড়কটি দ্রুত ৬ লেনে উন্নয়ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

আলমগীর সাকিব নামের আরেক আন্দোলনকারী বলেন, মহাসড়কটি ৬ লেনে উন্নীত হলে পণ্য পরিবহন সহজ হবে, পর্যটন শিল্পে গতি আসবে এবং জনসাধারণের সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে। একই সঙ্গে দুর্ঘটনা কমে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

কেরানিহাট হাইওয়ের ট্রাফিক ইনচার্জ নরুল আলম বলেন, ব্লকেড কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা ব্লকেড কর্মসূচি তুলে নেবে। আমাদের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক সেবা দেওয়া জন্য প্রস্তুত আছি।

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, তাদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠাব। জনদুর্ভোগ কমাতে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এর আগে একই দাবিতে গত ৬ এপ্রিল নগরীর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের পর প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এরপর ১১ এপ্রিল অন্তর্বর্তী সরকারের সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের কাছেও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। তবে এতদিনেও বাস্তব কোনো পদক্ষেপ না থাকায় এলাকাবাসী পুনরায় আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন।

img

শ্রীলঙ্কায় ত্রাণ পাঠালো বাংলাদেশ

প্রকাশিত :  ১১:২৪, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১১:২৮, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫

শ্রীলঙ্কায় ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়া’র প্রভাবে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় ত্রাণ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে বুধবার বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ১৫ সদস্যের একটি ক্রু দল, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের একজন কর্মকর্তা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধিসহ ১০ টন ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে কলম্বোর উদ্দেশে যাত্রা করে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, শ্রীলঙ্কার সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়া’র প্রভাবে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের ফলে এখন পর্যন্ত ৩৩৪ জন নিহত এবং কমপক্ষে ২ শতাধিক জন নিখোঁজ রয়েছে। শ্রীলঙ্কার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের তথ্য মোতাবেক উক্ত বন্যায় ২০ হাজারের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ১ লাখ ২৩ হাজার মানুষকে সরকার পরিচালিত অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বন্ধুপ্রতীম দেশের এই মানবিক বিপর্যয়ে বাংলাদেশ অত্যন্ত মর্মাহত।

এ পরিস্থিতিতে দেশটির সরকার শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থ জারি করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলের কাছে সহায়তার আবেদন জানিয়েছে। শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কলম্বোস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনকে জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য, ঔষধ সামগ্রী ও অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী প্রেরণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানায়।

এর প্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি সি ১৩০জে পরিবহন বিমান ক্ষতিগ্রস্তদের মানবিক সহায়তা প্রদানের নিমিত্তে আজ বিমান বাহিনীর ১৫ জন ক্রুর একটি দল, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের একজন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি প্রয়োজনীয় সংখ্যাক ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে কলম্বো, শ্রীলঙ্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।

বিমান বাহিনীর এয়ার কমডোর মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম মিশন কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। প্রেরণকৃত সর্বমোট প্রায় ১০ টন ত্রাণ সহায়তার মধ্যে রয়েছে তাবু শুকনো খাবার, মশারি, টর্চ লাইট, গাম বুট, ভেস্ট, হ্যান্ড স্লোভস, রেসকিউ হেলমেট এবং বিপুল পরিমাণ ঔষধ।

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিশ্বাস করে যে, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রেরিত এই মানবিক সহায়তা শ্রীলঙ্কায় সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের দুর্ভোগ কমিয়ে আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আগামী দিনগুলোতে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বৈশ্বিক যে কোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী আত্মনিয়োগের জন্য সদ্য অঙ্গীকারবদ্ধ।

উল্লেখ্য, মানবিক সহায়তা প্রদান শেষে সি ১৩০জে পরিবহন বিমানটি একই দিন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করবে।