img

গুমের দায়ে মৃত্যুদণ্ড, অধ্যাদেশ জারি

প্রকাশিত :  ০৫:৪৬, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫

 গুমের দায়ে মৃত্যুদণ্ড, অধ্যাদেশ জারি

সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করে গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সোমবার এই অধ্যাদেশ জারি হয়। এই আইনের অধীনে গুমের সাথে জড়িত সকল শৃঙ্খল বাহিনী তথা সেনা, নৌ, বিমান, পুলিশ ও বিজিবিসহ সকলের বিচার করা যাবে। আর গুমের সাক্ষ্য-প্রমাণ নষ্ট এবং গোপন আটককেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবহার করলে সাত বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

গতকাল সোমবার (১ ডিসেম্বর) আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশ করে। অধ্যাদেশে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথা বলা হয়েছে। এই অধ্যাদেশের অধীনে অপরাধ হবে জামিন ও আপস অযোগ্য। এ ছাড়া ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করার আগ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির অবস্থান ‘রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে’ গোপন রাখার বিধানও এতে রাখা হয়েছে।

এই আইনে গুমের আদেশ বা অনুমতি দানকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা কমান্ডারদেরও সমান সাজার বিধান রাখা হয়েছে।

গত ৬ নভেম্বর এই অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ। যেখানে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং অভিযোগ গঠনের ১২০ কার্যদিবসের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারী বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্য যদি কোন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার, আটক, অপহরণ বা স্বাধীনতা হরণ করার পর বিষয়টি অস্বীকার করে অথবা ওই ব্যক্তির অবস্থান, অবস্থা বা পরিণতি গোপন রাখে এবং এই কাজের ফলে ওই ব্যক্তি আইনগত সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হন তাহলে কাজটি গুম বা শাস্তিযোগ্য ফৌজদারী অপরাধ বলে গণ্য হবে। দায়ী ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে।

আর গুমের ফলে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু ঘটলে বা গুমের পাঁচ বছর পরেও তাকে জীবিত বা মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব না হলে দায়ী ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।

অধ্যাদেশে বলা হয়, যদি কোনো ব্যক্তি গুমের সাক্ষ্য-প্রমাণ নষ্ট করেন বা গুমের উদ্দেশ্যে গোপন আটককেন্দ্র নির্মাণ, স্থাপন বা ব্যবহার করেন, তাহলে সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

অধ্যাদেশে আরও বলা হয়েছে, যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা কমান্ডার বা দলনেতা এ ধরনের অপরাধ সংঘটনে অধস্তনদের আদেশ, অনুমতি, সম্মতি, অনুমোদন বা প্ররোচনা দেন, কিংবা নিজেই অংশ নেন, তাহলেও তিনি মূল অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা কমান্ডারের অবহেলা বা অদক্ষতার কারণে অধস্তনরা এমন কোনো কর্মকাণ্ডে জড়ালেও সাজা পেতে পারেন সেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। শৃঙ্খলা বজায় রাখা বা অধস্তনদের নিয়ন্ত্রণ বা তত্ত্বাবধান করার ব্যর্থতার ফলে অধস্তনরা যদি এ ধরনের অপরাধ করে তাহলেও তিনি মূল অপরাধের দায়ে দণ্ডিত হবেন।

অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক হলেও তার অনুপস্থিতিতে বিচার সম্পন্ন করা যাবে বলে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে। আর গুম হওয়া ব্যক্তির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির যুক্তিসংগত পরিমাণ ব্যবহারে পরিবারকে অনুমতি দিতে পারবে ট্রাইব্যুনাল।


img

কাতারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কারিগরি ত্রুটি, দেরি হতে পারে খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রায়

প্রকাশিত :  ১৬:৫১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫

রাজধানীর এভারকেয়ারে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়ার উদ্দেশ্যে কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কারিগরি সমস্যার কারণে ঢাকায় পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শাইরুল কবির খান। তিনি জানান, কারিগরি সমস্যার কারণে উড্ডয়ন বিলম্বিত হয়েছে এবং কাতার থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স উড্ডয়ন হওয়ার বিষয়টি পরে জানানো হবে।

এর আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, কাতারের আমিরের ব্যক্তিগত উদ্যোগে সর্বাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছে, যাতে রয়েছে অপারেশন থিয়েটারসহ উন্নত চিকিৎসার সব জরুরি সুবিধা।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আজ রাতের মধ্যেই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটির ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল এবং খুব ভোরেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।” তবে কারিগরি জটিলতায় সেই সময়সূচিতে পরিবর্তন এসেছে।

তিনি জানান, আনুষঙ্গিক সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন এবং ম্যাডামের সঙ্গে যাচ্ছেন দেশি–বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল।

তিনি বলেন, “আমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন ম্যাডামকে সুস্থভাবে বিদেশে নিয়ে যেতে এবং চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে ফিরে আসতে সহায়তা করেন।”

বিএনপি মহাসচিব আরও জানান, দেশি–বিদেশি চিকিৎসকদের যৌথ মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে যুক্তরাজ্যের উন্নত একটি হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও এই সিদ্ধান্তে সম্মতি জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারা জানান, সারাদেশের মানুষ জনপ্রিয় এই নেত্রীর সুস্থতার জন্য দোয়া করছেন এবং তার সফল চিকিৎসার অপেক্ষায় আছেন।

জাতীয় এর আরও খবর