img

তরুণ কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য ‘সোশ্যাল বিজনেস ফান্ড’ গঠনের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশিত :  ০৬:৩৫, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৮:০৩, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

তরুণ কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য ‘সোশ্যাল বিজনেস ফান্ড’ গঠনের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তরুণ কৃষি-উদ্যোক্তাদের সহায়তার লক্ষ্যে একটি ‘সামাজিক ব্যবসা তহবিল’ গঠনের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

ইতালির রোমে স্থানীয় সময় রোববার বিশ্ব খাদ্য ফোরামের পার্শ্ববৈঠকে আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (ইফাদ) প্রেসিডেন্ট আলভারো লারিওর সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই প্রস্তাব দেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমি আপনাদের একটি সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের আহ্বান জানাচ্ছি। এই তহবিল দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবা, তরুণ উদ্যোক্তা, কৃষক, নারী ও মৎস্য খাতের কর্মীদের জন্য নতুন উদ্যোগ সৃষ্টি এবং সামাজিক সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারবে।”

বৈঠকে দুই নেতা বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ শিল্প শুরু করা, আম ও কাঁঠালের রপ্তানি বাড়ানো, জলবায়ু-সহনশীল কৃষি-উদ্যোক্তা তৈরি এবং মহিষের দুধ থেকে মোজারেলা চিজের মতো দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনে খামারিদের সহায়তাসহ বিভিন্ন কৌশলগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা ইফাদ প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং কৃষি, সামাজিক ব্যবসা ও প্রযুক্তিতে সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো খতিয়ে দেখতে একটি প্রতিনিধি দল পাঠাতে অনুরোধ করেন।

প্রেসিডেন্ট লারিও বলেন, আইএফএডি বাংলাদেশের সঙ্গে সামাজিক ব্যবসা উদ্যোগে অংশীদার হতে আগ্রহী এবং বেসরকারি খাতের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে চায়। তিনি জানান, বর্তমানে আইএফএডি বাংলাদেশে অর্ধডজনের বেশি কৃষি প্রকল্পে অর্থায়ন করছে।

প্রধান উপদেষ্টা ফল প্রক্রিয়াকরণ, হিমাগার, গুদামজাতকরণ এবং আম ও কাঁঠালের মতো গ্রীষ্মমন্ডলীয় ফলের বৃহৎ আকারে রপ্তানিতে প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন।

তিনি বলেন, “আমরা আম রপ্তানি শুরু করেছি, তবে পরিমাণ এখনও কম। চীন বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে আম ও কাঁঠাল উভয় আমদানিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।”

বঙ্গোপসাগরের গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণের অব্যবহৃত সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাবে বেশিরভাগ বাংলাদেশি জেলে কেবল অগভীর পানিতেই মাছ ধরেন।

তিনি বলেন, “আমরা এখনো গভীর সমুদ্র মৎস্য আহরণে যেতে সাহস পাই না। আইএফএডি অর্থায়ন ও প্রযুক্তি সহায়তার মাধ্যমে এই খাতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।”

বৈঠকে উপস্থিত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানান, কীভাবে বাংলাদেশি নারী দুগ্ধ খামারিরা মহিষের দুধ থেকে মোজারেলা চিজ তৈরি করছেন। তিনি দেশে পনির ও অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে ইফাদের সহায়তা কামনা করেন।

১৯৭৮ সালে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরুর পর থেকে ইফাদ ৩৭টি প্রকল্পে অংশীদার হয়েছে, যার সম্মিলিত মূল্য ৪.২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ১.১৩ বিলিয়ন ডলার সরাসরি আইএফএডি অর্থায়িত। বর্তমানে বাংলাদেশে ৪১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ছয়টি প্রকল্প চলছে, আরও একটি প্রকল্প পাইপলাইনে রয়েছে।

বৈঠকে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, এসডিজি সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ এবং পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম এবং আইএফএডির সহযোগী সহ-সভাপতি ডোনাল ব্রাউন উপস্থিত ছিলেন। 

উল্লেখ্য, রোববার ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরাম’-এর বৈঠকে যোগ দিতে ইতালির রোমে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় তাকে স্বাগত জানান দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এ. টি. এম. রকিবুল হক। এবারের ইভেন্ট চলবে আগামী ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত।

img

শেয়ারবাজার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে মাঠে নামছে জেলা-উপজেলা প্রশাসন

প্রকাশিত :  ০৯:৫০, ২০ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৯:৫৫, ২০ অক্টোবর ২০২৫

দেশের পুঁজিবাজার সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে আরও শিক্ষিত ও সচেতন করতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে । এবার বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমে সরাসরি সম্পৃক্ত হচ্ছে মাঠ প্রশাসন—অর্থাৎ দেশের সব জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।

বিএসইসির অনুরোধে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত ৮ অক্টোবর একটি স্মারক জারি করে সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) বিনিয়োগ শিক্ষা বিস্তারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে।

বিএসইসি মনে করছে, সরকারের এই সর্বোচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতা দেশের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি, নিরাপদ বিনিয়োগ চর্চা ও মূলধন বাজারের টেকসই উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের জন্য বিএসইসির ৫ দিকনির্দেশনা:

১ ওয়েবসাইটে লিংক সংযুক্তি: প্রতিটি জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে বিএসইসির আর্থিক সাক্ষরতা বিষয়ক ওয়েবসাইট www.finlitbd.com এবং ইউটিউব চ্যানেলের (https://www.youtube.com/@financialliteracyprogramba6178) লিংক যুক্ত করতে হবে।

২. সেমিনার ও কর্মশালায় সহযোগিতা: জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিএসইসি আয়োজিত বিনিয়োগ সচেতনতা সেমিনার, কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ আয়োজন এবং সমন্বয়ে প্রশাসনের সহায়তা দিতে হবে।

৩. মাসিক সভায় আলোচ্যসূচি: জেলা মাসিক সমন্বয় সভায় বিনিয়োগ শিক্ষা ও নিরাপদ বিনিয়োগ সচেতনতা সৃষ্টির বিষয়টি নিয়মিত আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

৪.  প্রচার-প্রকাশনা উদ্যোগ: জেলা তথ্য অফিসের সহায়তায় বিনিয়োগ শিক্ষা বিষয়ক প্রচার ও প্রকাশনা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

৫.  নির্দিষ্ট দায়িত্ব প্রদান: জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার বা সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ শাখা)-কে শেয়ারবাজার বিনিয়োগসংক্রান্ত তথ্য ও সহায়তা প্রদানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বিএসইসি আশা করছে, সরকারের বিভিন্ন বিভাগের এই সম্মিলিত উদ্যোগ দেশের সাধারণ জনগণের মাঝে বিনিয়োগ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে। ফলে নিরাপদ ও জ্ঞানভিত্তিক বিনিয়োগ সংস্কৃতি গড়ে উঠবে, যা দেশের শেয়ারবাজারকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে।