img

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বের প্রায় ৯০ কোটি দরিদ্র মানুষ ঝুঁকির মুখে: জাতিসংঘ

প্রকাশিত :  ০৬:৫৮, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বের প্রায় ৯০ কোটি দরিদ্র মানুষ ঝুঁকির মুখে: জাতিসংঘ

বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে বিশ্বের দরিদ্রতমদের প্রায় ৯০ কোটি মানুষ সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির মুখে রয়েছে। এই মানুষগুলো অন্যদের চেয়ে দ্বিগুণ এবং গভীর অসম বোঝা বহন করছে। গতকাল শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) জাতিসংঘ এমনটাই সতর্ক করেছে।

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক হাওলিয়াং জু এক বিবৃতিতে এএফপিকে বলেছেন, \'খরা, বন্যা, তাপপ্রবাহ ও বায়ুদূষণের মতো ক্রমবর্ধমান ঘন ঘন এবং শক্তিশালী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে কেউই মুক্ত নয়। তবে আমাদের মধ্যে সবচেয়ে দরিদ্র যারা, তারাই সবচেয়ে বেশি প্রভাবের মুখোমুখি হচ্ছে।\'

অক্সফোর্ড দারিদ্র্য ও মানব উন্নয়ন উদ্যোগের সঙ্গে ইউএনডিপি প্রকাশিত বার্ষিক সমীক্ষা অনুসারে, ১০৯টি দেশের বিশ্লেষণ করা ৬.৩ বিলিয়নের প্রায় ১৮ শতাংশ, অর্থাৎ ১.১ বিলিয়ন মানুষ তীব্র বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে অর্ধেকই নাবালক।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দারিদ্র্যে বিশেষভাবে প্রভাবিত দুটি অঞ্চল হলো সাব-সাহারান আফ্রিকা এবং দক্ষিণ এশিয়া। তারা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

প্রতিবেদনটি দারিদ্র্য এবং চারটি পরিবেশগত ঝুঁকির মধ্যে সংযোগ তুলে ধরেছে: চরম তাপ, খরা, বন্যা এবং বায়ু দূষণ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, \'দরিদ্র পরিবারগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বিশেষভাবে সংবেদনশীল, কারণ তাদের অনেকেই কৃষি এবং অনানুষ্ঠানিক শ্রমের মতো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ খাতের ওপর নির্ভরশীল। যখন পরিবেশগত ঝুঁকিগুলো বারবার আঘাত হানে, তখন বিদ্যমান বঞ্চনাগুলো আরও বেড়ে যায়।\'

ফলস্বরূপ ৮৮৭ মিলিয়ন মানুষ, অর্থাৎ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭৯ শতাংশ সরাসরি এই হুমকিগুলোর অন্তত একটির মুখোমুখি হচ্ছে। এর মধ্যে ৬০৮ মিলিয়ন মানুষ চরম তাপে ভুগছে, ৫৭৭ মিলিয়ন দূষণে আক্রান্ত, ৪৬৫ মিলিয়ন বন্যায় এবং ২০৭ মিলিয়ন খরায় আক্রান্ত।

প্রায় ৬৫ কোটি ১০ লাখ মানুষ কমপক্ষে একসঙ্গে দুটি ঝুঁকির সম্মুখীন, ৩০ কোটি ৯০ লাখ মানুষ তিন বা চারটি ঝুঁকির সম্মুখীন এবং ১ কোটি ১০ লাখ দরিদ্র মানুষ ইতোমধ্যেই এক বছরে চারটি ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, \'একযোগে দারিদ্র্য এবং জলবায়ু ঝুঁকি স্পষ্টতই একটি বিশ্বব্যাপী সমস্যা।\' যদিও দক্ষিণ এশিয়া দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অগ্রগতি অর্জন করেছে, তবুও এ অঞ্চলের ৯৯.১ শতাংশ দরিদ্র জনগোষ্ঠী কমপক্ষে একটি করে জলবায়ু ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছে।

পৃথিবীর পৃষ্ঠ দ্রুত উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন, আজকের দরিদ্রতম দেশগুলো ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিবেশগত ঝুঁকিগুলো বারবার আঘাত হানার ঝুঁকির প্রতি সাড়া দেওয়ার জন্য মানুষ এবং গ্রহ উভয়কেই অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন। সর্বোপরি দ্রুত পদক্ষেপের দিকে অগ্রসর হওয়া দরকার।

ঐ প্রতিবেদনে চরম বঞ্চনার একটি উদাহরণও তুলে ধরা হয়েছে - বলিভিয়ার বৃহত্তম শহর সান্তা ক্রুজ দে লা সিয়েরার বাইরে বসবাসকারী গুয়ারানি আদিবাসী সম্প্রদায়ের সদস্য রিকার্ডোর একটি ঘটনা। তিনি একজন দিনমজুর হিসেবে খুব সামান্য আয় করেন। তিনি তার তিন সন্তান, বাবা-মা এবং পরিবারের অন্যান্য বর্ধিত সদস্যদের সঙ্গে তার ছোট্ট বাড়িতে বসবাস করেন।

বাড়িতে কেবল একটি বাথরুম, কাঠ এবং কয়লা চালিত রান্নাঘর আছে। তাদের বাড়ির কোনো শিশুই স্কুলে যেতে পারে না। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, \'তাদের জীবন দারিদ্র্যের বহুমাত্রিক বাস্তবতা প্রতিফলিত করে।\'

আন্তর্জাতিক এর আরও খবর

img

গাজায় ফের হামলা শুরু করতে বললেন ইসরায়েলি মন্ত্রীরা

প্রকাশিত :  ১৪:৩১, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৪:৪২, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

গাজায় আবারও আক্রমণ শুরু করার জন্য নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, ইসরায়েলের অতি-ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভিরসহ একাধিক মন্ত্রী ।

আজ রোববার (১৯ অক্টোবর) আল জাজিরা জানিয়েছে, বেন-গভির এক্স-পোস্টে বলেন, তিনি চান ইসরায়েলি বাহিনী 'সর্বোচ্চ শক্তির সঙ্গে গাজা উপত্যকায় সম্পূর্ণরূপে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করুক'।

আল জাজিরা জানিয়েছে, আজ সকালে গাজাজুড়ে বেশ কয়েকটি বিমান হামলা চালানো হয়েছে বলে ইসরায়েলি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর মন্ত্রীদের এ বক্তব্য এলো।

ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ এক্স-পোস্টে একটি শব্দ লিখে একই ইঙ্গিত দিছেন: 'যুদ্ধ!'

প্রবাসী বিষয়ক মন্ত্রী আমিচাই চিকলি বলেন, 'যতদিন হামাস থাকবে, যুদ্ধ থাকবেই।'

নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভার আরেক সদস্য আভি ডিচটার পরিস্থিতিকে 'কঠিন ও জটিল' বলে বর্ণনা করেছেন এবং হামাসকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনে অভিযুক্ত করেছেন।

তিনি বলেন, সমস্ত জীবিত জিম্মিরা আমাদের হাতে, পরিস্থিতি বদলে গেছে। ইসরায়েল হামাসকে নিরস্ত্র করার ক্ষেত্রে হাল ছাড়বে না।

দীর্ঘদিনের গণহত্যা ও দুর্ভিক্ষের মাঝে কয়েকদিন আগে মার্কিন মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করে হামাস ও ইসরায়েল। তবে কয়েকদিন না গড়াতেই ইসরায়েলি মন্ত্রীদের এসব মন্তব্য তাদের প্রতিশ্রুতি নিয়ে সন্দেহ বাড়িয়ে দেয়।

আন্তর্জাতিক এর আরও খবর