img

সিলেট সীমান্তে শারদোৎসব : ৫৫ বিজিবির তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয়

প্রকাশিত :  ০৭:৩০, ০১ অক্টোবর ২০২৫

সিলেট সীমান্তে শারদোৎসব : ৫৫ বিজিবির তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয়

সংগ্রাম দত্ত: বাংলার প্রাণের উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা এবারও সীমান্ত অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আড়ম্বর ও শান্তিপূর্ণ আবহে। দুর্গোৎসব শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি গ্রামীণ জনপদের সামাজিক মিলনমেলা ও সংস্কৃতির সমারোহও বটে। আর এই মহা উৎসবকে ঘিরে সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (৫৫ বিজিবি) গ্রহণ করেছে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয়।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর ) বিকেলে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ সোহেল-উস-সামাদ তেলিয়াপাড়া চা-বাগানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন—

“বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) প্রধান দায়িত্ব সীমান্ত নিরাপত্তা, চোরাচালান ও অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ, মানবপাচার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ। সেই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করা।”

শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সীমান্তের ৮ কিলোমিটারের ভেতরে অবস্থিত মোট ৬০টি পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিজিবি এবার গড়ে তুলেছে তিন স্তরের বলয়। এর মধ্যে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ২২টি, হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটে ১৮টি এবং মাধবপুর উপজেলায় ২০টি পূজা মণ্ডপ রয়েছে। এছাড়াও ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরের ২ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে আরও একটি মণ্ডপ।

সীমান্ত এলাকায় জোরদার করা হয়েছে টহল ব্যবস্থা। মোতায়েন করা হয়েছে ১২ প্লাটুন বিজিবি সদস্য। শুধু সীমান্ত পাহারায় নয়, পূজা মণ্ডপের আশপাশেও নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। চোরাচালান, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও সন্দেহজনক গতিবিধি ঠেকাতে অতিরিক্ত টহল দল সক্রিয় রয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় এবার ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে আকাশপথেও নজরদারি চলছে।

শান্তিপূর্ণ শারদোৎসব আয়োজনের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, আনসার ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নিবিড় সমন্বয় বজায় রাখা হয়েছে। প্রতিটি পূজা মণ্ডপে চলছে টহল ও রেকি কার্যক্রম। পাশাপাশি সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।

শারদীয় দুর্গাপূজা কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি বাংলার লোকজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। সীমান্তবর্তী জনপদে এই উৎসবকে ঘিরে তৈরি হয় আনন্দ-উচ্ছ্বাস ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন। বিজিবির এই নিরাপত্তা উদ্যোগ উৎসবকে করেছে আরও সুরক্ষিত ও নির্ভরযোগ্য।

শান্তি, নিরাপত্তা ও সম্প্রীতির বার্তা নিয়েই সীমান্ত অঞ্চলে এবারও বাজবে ঢাকের বাদ্য, ভেসে উঠবে শঙ্খধ্বনি।

সিলেটের খবর এর আরও খবর

img

‘রাজপথের ত্যাগী নেতা’ আবেদ রাজাকে কুলাউড়া আসনে মনোনয়নের দাবিতে ব্যাপক কর্মসূচি

প্রকাশিত :  ০৯:২৪, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৯:৪৯, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

গত ৩ নভেম্বর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭ সংসদীয় আসনের মনোনয়নপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন। এরমধ্যে ছিল সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) সংসদীয় আসনসহ জেলার ৪টি আসনও।

মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে স্থানীয় বিএনপির মধ্যে গৃহদাহ শুরু হয়েছে। প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে চলছে একের পর এক সভা-সমাবেশ ও শোডাউন। এরিমধ্যে সে দাবিও জানানো হয়েছে দলের কেন্দ্রে। দলের নেতাদের অনুসারীদের অনেকেই জানাচ্ছেন প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার চারটি আসনে বিএনপির অন্তত ১২ সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়ন পেতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তবে কেন্দ্র মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ী) আসনে নাসির উদ্দিন মিঠু, মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে শওকতুল ইসলাম শকু, মৌলভীবাজার-৩ (সদর-রাজনগর) আসনে এম নাসের রহমান এবং মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসনে মুজিবুর রহমানকে দলের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে।

কুলাউড়া সংসদীয় আসনে মনোনয়নবঞ্চিত জেলা বিএনপির নেতা ও আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি এএনএম আবেদ রাজার অনুসারীরা স্থানীয়ভাবে নানা কর্মসূচি পালন করছেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের সামনে পালন করেছেন প্রতীকী ‘সিট ইন’ নামের কর্মসূচিও। স্মারকলিপি দিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বরাবরে। এছাড়াও তারা আবেদ রাজা সাপোর্টার্স ফোরামের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালনের পর তারা আগামী রোববারের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে আরও কর্মসূচি পালনেরও ঘোষণা দেন।

রোববার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা সাপোর্টার্স ফোরামের ব্যানারে ‘সিট ইন’ নামের কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক এনাম আহমদ ও সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ। তারা কুলাউড়া আসনে অ্যাডভোকেট এএনএম আবেদ রাজাকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে সপ্তাহব্যাপী স্বাক্ষর অভিযান শেষে আগামী ১৯ নভেম্বর বিএনপির নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সম্মুখে ‘অঙ্গীকার বন্ধন’ কর্মসূচি পালনেরও ঘোষণা দেন।

এদিকে, স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের আমলে রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন সিলেট বিভাগ উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, দেশের খ্যাতিমান আইনজীবী, সমাজসেবক, সিলেটবন্ধু আবেদ রাজা। সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় বেশ কয়েকবার কারাভোগ করেন তিনি। কিন্তু তাকে বাদ দিয়ে প্রার্থী করা হয়েছে যুক্তরাজ্য প্রবাসী কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শওকতুল ইসলাম শকুকে।

স্থানীয় বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, দলের প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি যুক্তরাজ্য প্রবাসী শওকতুল ইসলাম শকু সর্বশেষ উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে জয়নুল আবেদীন বাচ্চুর কাছে পরাজিত হন। নামোল্লেখ না করা শর্তে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা বলেন, বিএনপির রাজনীতি করার কারণে অ্যাডভোকেট আবেদ রাজার বড় মেয়ে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে উত্তীর্ণ হলেও তার গেজেট আটকে দিয়েছিল বিগত সরকার। এদিকে, কুলাউড়া আসন দলের মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই হচ্ছে সমাবেশ-মিছিল ও মোটরসাইকেল শোডাউন।



সিলেটের খবর এর আরও খবর