img

ট্রাম্প নয়, শান্তিতে নোবেল পেলেন মারিয়া কোরিনা

প্রকাশিত :  ১১:২২, ১০ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১১:৩৬, ১০ অক্টোবর ২০২৫

ট্রাম্প নয়, শান্তিতে নোবেল পেলেন মারিয়া কোরিনা

শান্তিতে এ বছর নোবেল পেয়েছেন মারিয়া কোরিনা মাচাদো। ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর নিরলস প্রচেষ্টার জন্য এই পুরস্কার দেওয়ার কথা জানিয়েছে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি।

বাংলাদেশ সময় আজ শুক্রবার নরওয়ের অসলোতে এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি জানিয়েছে, স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রে ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ রূপান্তরের সংগ্রাম করেছেন মারিয়া।

দ্য নোবেল প্রাইজ ডটঅর্গের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্রের আন্দোলনের নেত্রী হিসেবে মারিয়া কোরিনা অনন্য সাহসের উদাহরণ। লাতিন আমেরিকার দেশটিতে রাজনৈতিক বিরোধীতার মধ্যে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও ঐক্যের প্রতীক ছিলেন। 

এর আগে বছরের শুরু থেকেই শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের যোগ্য দাবিদার হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি দাবি করেন, সাতটি যুদ্ধ বন্ধে ভূমিকা রেখেছেন। তাঁকে পুরস্কৃত করার জন্য মনোনয়ন দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন ইসরায়েল ও পাকিস্তানের সরকারপ্রধান। সুইডেন এমনকি নরওয়ের রাজনীতিবিদ ও আইনপ্রণেতারাও ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছিলেন।

ভেনেজুয়েলার বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। গত মাসের শেষ দিকে দেশটিতে মাদক চক্র দমনের কথা বলে হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী। তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তখন এ বিষয়ে অনুমোদন দেননি। 

তবে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই মার্কিন বাহিনী ভেনেজুয়েলার অন্তত তিনটি সমুদ্রযানে হামলা চালায়। ট্রাম্প দাবি করেন, এসব নৌকা মাদক বহন করছিল। যদিও অভিযোগের পক্ষে পর্যাপ্ত প্রমাণ দেখানো হয়নি।

২০১৩ সালে প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজের মৃত্যুর পর থেকে ১১ বছর ধরে প্রেসিডেন্ট পদে আছেন মাদুরো। নোবেল কমিটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশটিতে গণতান্ত্রিক উন্নয়নের জন্য নিবেদিত একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন মাচাদো। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে স্বাধীন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লড়াই করছেন তিনি। আওয়াজ তুলেছেন বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানবাধিকার এবং জনপ্রতিনিধিত্বের জন্য। 

২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে মাচাদো বিরোধী দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা তাঁর প্রার্থিতা আটকে দেয়। এরপর তিনি নির্বাচনে অন্য দলের প্রতিনিধি এডমুন্ডো গনজালেজ উরুতিয়াকে সমর্থন দেন। রাজনৈতিক বিভাজন অতিক্রম করে লাখ লাখ স্বেচ্ছাসেবক একত্রিত হন। তারা স্বচ্ছ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে ভোট পর্যবেক্ষক হিসেবে প্রশিক্ষণ নেন। হয়রানি, গ্রেপ্তার এবং নির্যাতনের ঝুঁকি সত্ত্বেও দেশের নাগরিকরা ভোটকেন্দ্রগুলোর দিকে নজর রাখেন। 

নির্বাচনের আগে এবং সময়কালে বিরোধী দলের প্রচেষ্টা ছিল উদ্ভাবনী, সাহসী, শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক। কিন্তু মাদুরোর প্রশাসন নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং ক্ষমতায় থাকতেই মনোযোগ দেয়।

নোবেল কর্তৃপক্ষ বলছে, গণতন্ত্র স্থায়ী শান্তির জন্য একটি পূর্বশর্ত। শুধু ভেনেজুয়েলায় নয়, জনগণের ওপর দমনপীড়নের ঘটনা আরও আছে। ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিরা আইনকে নিজেদের মতো ব্যবহার করে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করে, সমালোচকদের জেলে পাঠায়। ২০২৪ সালে এক বছরেই বহু দেশে নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু কম সংখ্যকই স্বাধীন ও সুষ্ঠু ছিল।

গত বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছিল জাপানি সংগঠন নিহন হিদানকিও। জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের তৃণমূল আন্দোলনের সংগঠন হিদানকিও। পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার প্রচেষ্টা এবং পারমাণবিক অস্ত্র যে আর কখনো ব্যবহার করা উচিত নয়, তা প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যের মাধ্যমে প্রদর্শনের জন্য সংগঠনটিকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।


আন্তর্জাতিক এর আরও খবর

img

যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গাজায় ইসরাইলি হামলা, নিহত ৩ শিশুসহ ১১

প্রকাশিত :  ০৬:৩৫, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি হামলায় একই পরিবারের ১১ সদস্য নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে সাতটি শিশু ও তিনজন নারী। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার মাত্র আট দিন পরই ইসরাইল চুক্তি লঙ্ঘনের এ ঘটনা ঘটালো। 

 আজ রোববার (১৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

গাজার সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় গাজা সিটির জায়তুন এলাকায় আবু শাহবান পরিবারের বেসামরিক একটি গাড়িতে ইসরাইলি বাহিনীর ট্যাংকের গোলা আঘাত হানে। গাড়িটিতে করে তারা তাদের নিজ বাড়ির অবস্থা দেখতে যাচ্ছিলেন।

সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, নিহতদের মধ্যে সাতটি শিশু ও তিনজন নারী। 

তিনি বলেন, ‘তাদের সতর্ক করা যেত বা অন্যভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যেত। কিন্তু যা ঘটেছে, তা প্রমাণ করে দখলদার বাহিনী এখনো রক্তপিপাসু এবং নিরীহ বেসামরিকদের বিরুদ্ধে অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে।’

সংস্থাটি এক পৃথক বিবৃতিতে জানায়, জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক কার্যালয়ের (ওসিএইচএ) সহায়তায় তারা এখন পর্যন্ত নয়জনের মরদেহ উদ্ধার করতে পেরেছে। তবে দুটি শিশুর মরদেহ এখনো নিখোঁজ, কারণ প্রচণ্ড বিস্ফোরণে তাদের দেহাবশেষ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।

হামাস এই ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ বলে নিন্দা জানিয়েছে। 

সংগঠনটির দাবি, কোনো কারণ ছাড়াই ওই পরিবারের ওপর হামলা করা হয়েছে। এতইসঙ্গে তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন ইসরাইলকে  যুদ্ধবিরতি মেনে চলতে চাপ দেওয়া হয়।

এদিকে চলমান বন্দি বিনিময় চুক্তির মধ্যেই শনিবার পর্যন্ত ইসরাইল অন্তত ৩৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে গাজার মিডিয়া অফিস। খাদ্য ও চিকিৎসাসহ জরুরি সহায়তা প্রবাহও কঠোরভাবে সীমিত রাখা হয়েছে।


আন্তর্জাতিক এর আরও খবর