img

এস আলমের ৮ হাজার কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ

প্রকাশিত :  ০৬:১৪, ২১ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৬:২১, ২১ অক্টোবর ২০২৫

এস আলমের ৮ হাজার কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ

পলাতক স্বৈরাচারের দোসর, আলোচিত ব্যবসায়ী এস আলমের গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ১০৫টি কোম্পানির ৫১৩ কোটি ১৮ লাখ ৩২ হাজার ২৮২টি শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব শেয়ারের মূল্য ৮ হাজার ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৭২ হাজার ৯৫০ টাকা। 

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন। 

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। দুদকের উপ-পরিচালক তাহসিন মুনাবিল হক এ নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন। 

অবরুদ্ধের আবেদনে বলা হয়, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সত্তা ও সত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধান করার জন্য একটি যৌথ তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।

অনুসন্ধানকালে জানা যায়, মোহাম্মদ সাইফুল আলমের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদফতর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে কোম্পানিগুলোতে অর্জিত শেয়ারের মালিকানা হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। অনুসন্ধান নিষ্পত্তির পূর্বে এসব সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে পরবর্তীতে উক্ত টাকা উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়বে। সেজন্য, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ১০ ও ১৪ ধারা ও দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭-এর ১৮ ধারার  কোম্পানিগুলোর শেয়ার অবরুদ্ধ করা একান্ত প্রয়োজন।

এর আগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, গ্রুপটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ ও পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত।

তার আগে ৯ জুলাই এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সত্তা ও সত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ৫৩ ব্যাংকের হিসেব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব ব্যাংকের হিসাবে ১১৩ কোটি ৯ লাখ ৮২ হাজার ৮৬৮ টাকা রয়েছে। 

গত ২৪ জুন সাইপ্রাসের লিমাসল জেলায় অবস্থিত সাইফুল আলমের (এস আলম) একটি দুইতলা বাড়ি, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসে হ্যাজেক ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেডে তাদের বিনিয়োগকৃত ৩ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার এবং পিকক প্রপার্টি হোল্ডিংসসহ ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসে আরও ১৮টি কোম্পানিতে বিনিয়োগ জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া জার্সি ট্রাস্ট কোম্পানির অধীনে ছয়টি ট্রাস্টে থাকা বিভিন্ন অঙ্কের বিনিয়োগও জব্দের আদেশ দেওয়া হয়। 

তার আগে গত ২৩ এপ্রিল তার ৪০৭ কোটি টাকা মূল্যের ১৫৯ একর জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ১৭ এপ্রিল এস আলমের এক হাজার ৩৬০ টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। এসব হিসাবে দুই হাজার ৬১৯ কোটি সাত লাখ ১৬ হাজার টাকা রয়েছে। গত ১০ মার্চ এস আলমের এক হাজার ছয় বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। ৯ এপ্রিল তার ৯০ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে। একইদিন আদালত তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা ৩৭৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন। 

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তাদের ৮ হাজার ১৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। গত ৩ ফেব্রুয়ারি ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের ১৭৫ বিঘা সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ৪৩৭ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার ২৭৪টি শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব শেয়ারের মূল্য ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা। গত ১৬ জানুয়ারি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন একই আদালত। 

গত ৭ অক্টোবর এস আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ তার পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।



img

শেয়ারবাজার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে মাঠে নামছে জেলা-উপজেলা প্রশাসন

প্রকাশিত :  ০৯:৫০, ২০ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৯:৫৫, ২০ অক্টোবর ২০২৫

দেশের পুঁজিবাজার সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে আরও শিক্ষিত ও সচেতন করতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে । এবার বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমে সরাসরি সম্পৃক্ত হচ্ছে মাঠ প্রশাসন—অর্থাৎ দেশের সব জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।

বিএসইসির অনুরোধে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত ৮ অক্টোবর একটি স্মারক জারি করে সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) বিনিয়োগ শিক্ষা বিস্তারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে।

বিএসইসি মনে করছে, সরকারের এই সর্বোচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতা দেশের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি, নিরাপদ বিনিয়োগ চর্চা ও মূলধন বাজারের টেকসই উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের জন্য বিএসইসির ৫ দিকনির্দেশনা:

১ ওয়েবসাইটে লিংক সংযুক্তি: প্রতিটি জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে বিএসইসির আর্থিক সাক্ষরতা বিষয়ক ওয়েবসাইট www.finlitbd.com এবং ইউটিউব চ্যানেলের (https://www.youtube.com/@financialliteracyprogramba6178) লিংক যুক্ত করতে হবে।

২. সেমিনার ও কর্মশালায় সহযোগিতা: জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিএসইসি আয়োজিত বিনিয়োগ সচেতনতা সেমিনার, কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ আয়োজন এবং সমন্বয়ে প্রশাসনের সহায়তা দিতে হবে।

৩. মাসিক সভায় আলোচ্যসূচি: জেলা মাসিক সমন্বয় সভায় বিনিয়োগ শিক্ষা ও নিরাপদ বিনিয়োগ সচেতনতা সৃষ্টির বিষয়টি নিয়মিত আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

৪.  প্রচার-প্রকাশনা উদ্যোগ: জেলা তথ্য অফিসের সহায়তায় বিনিয়োগ শিক্ষা বিষয়ক প্রচার ও প্রকাশনা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

৫.  নির্দিষ্ট দায়িত্ব প্রদান: জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার বা সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ শাখা)-কে শেয়ারবাজার বিনিয়োগসংক্রান্ত তথ্য ও সহায়তা প্রদানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বিএসইসি আশা করছে, সরকারের বিভিন্ন বিভাগের এই সম্মিলিত উদ্যোগ দেশের সাধারণ জনগণের মাঝে বিনিয়োগ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে। ফলে নিরাপদ ও জ্ঞানভিত্তিক বিনিয়োগ সংস্কৃতি গড়ে উঠবে, যা দেশের শেয়ারবাজারকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে তুলবে।


অর্থনীতি এর আরও খবর