img

শিক্ষকদের বাড়িভাড়া বেড়ে ১৫ শতাংশ, পাবেন দুই ধাপে

প্রকাশিত :  ০৮:০২, ২১ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৯:০০, ২১ অক্টোবর ২০২৫

শিক্ষকদের বাড়িভাড়া বেড়ে ১৫ শতাংশ, পাবেন দুই ধাপে

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মূল বেতনের ১৫ শতাংশ বাড়িভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে দুই ধাপে দেওয়া হবে এই অর্থ। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরারের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষক নেতাদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে শিক্ষক নেতা দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেছেন, বিষয়টির সুন্দর সমাধান হয়েছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) থেকে শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরে যাবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা খালিদ মাহমুদ বলেন, আজকের এই মুহূর্তটা শিক্ষা বিভাগের জন্য সত্যিই ঐতিহাসিক। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য চলতি বছরের নভেম্বরের ১ তারিখ থেকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়িভাড়া (ন্যূনতম দুই হাজার টাকা) এবং ২০২৬ সালের জুলাই থেকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ মোট ১৫ শতাংশ বাড়িভাড়া কার্যকর হবে। সম্মানিত শিক্ষকদের দাবি অনুযায়ী শতাংশ হারে এই ভাতা নিশ্চিত করতে পেরে একজন শিক্ষক হিসেবে শিক্ষা উপদেষ্টা নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেন। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, শিক্ষকরা আরও অধিক সম্মানের দাবিদার এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নে রাষ্ট্রের সচেষ্ট থাকা দরকার।

তিনি বলেন, এই পথটা সহজ ছিল না। নানা মতভেদ, বিতর্ক, অভিযোগ সবকিছুই ছিল। কোনো বিতর্কের উত্তর না দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ক্রমাগত একটা ন্যায্য, টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করে গেছে। নেপথ্যে থেকে শিক্ষা উপদেষ্টা ও মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, উপদেষ্টা পরিষদ, আর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কাজ করে গেছেন। যেন শিক্ষকদের দাবি শোনা হয়, বোঝা হয়। মন্ত্রণালয় মনে করে এটি কারও একার জয় নয়। এটি যৌথ সাফল্য। এছাড়া শিক্ষকদের আন্দোলন আমাদের বাস্তবতা বুঝিয়েছে। সরকার দায়িত্বশীলভাবে সাড়া দিয়েছে। আর সবাই মিলে আমরা আজ এমন এক অবস্থানে এসেছি যেখানে সম্মান, সংলাপ আর সমঝোতাই জিতেছে। এখন সময় ক্লাসে ফিরে যাওয়া। শিক্ষার্থীদের কাছে আমাদের আসল কাজের জায়গা এটি। আজকের এই সমঝোতা হোক নতুন সূচনা পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বোঝাপড়া ও শিক্ষাকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর প্রতিশ্রুতি নিয়ে। পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা আর গুণগত মানসম্মত শিক্ষার বিস্তার ঘটিয়ে বাংলাদেশকে আমরা একটি মর্যাদাসম্পন্ন জায়গায় নিয়ে যেতে পারবো।

এর আগে গত রোববার আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা ৫ শতাংশ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে শিক্ষকরা ওই দাবি না মেনে আন্দোলন চালিয়ে যান।

২০ শতাংশ বাড়িভাড়াসহ তিন দফা দাবিতে শহীদ মিনারে আমরণ অনশন করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। টানা ১০ দিন আন্দোলন করছেন তারা। সেখানে গিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা শিক্ষকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

শিক্ষা এর আরও খবর

img

ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হত্যা: চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল পুলিশ

প্রকাশিত :  ০৭:০৪, ২১ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৭:৩২, ২১ অক্টোবর ২০২৫

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইন হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশ। ছাত্রী বর্ষাই জোবায়েদকে হত্যা করতে বলেন মাহীর রহমানকে। এরপর বর্ষা ও মাহীর মিলে জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। হত্যার দিনে মাহীরের সঙ্গে তার আরও দুই বন্ধু ছিল। হত্যার জন্য তারা নতুন দুটি সুইচ গিয়ার কেনে। 

আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, এটা বর্ষা ও মাহীরের পরিকল্পিত হত্যা। বর্ষার সঙ্গে মাহীরের ৯ বছরের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু মাঝে আবার বর্ষা জোবায়েদের ওপর দুর্বল হয়ে পড়ে। এ সময় বর্ষা মাহীরকে না করে দেয়। এবং সে জোবায়েদেকে পছন্দ করে বলে জানায়। কিন্তু কিছুদিন পরই তার বয়ফ্রেন্ড মাহীরকে জানায় যে, জোবায়েদকে আর ভালো লাগে না। তখন জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে বর্ষা ও মাহীর।

ওসি বলেন, প্রাথমিকভাবে জোবায়েদকে হত্যার এই পরিকল্পনা স্বীকার করেনি বর্ষা। পরে মাহীর ও বর্ষাকে মুখোমুখি করলে সব সত্যতা জানা যায়। জোবায়েদকে কীভাবে সরিয়ে দেওয়া যায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকেই পরিকল্পনা করে তারা। এখন পর্যন্ত বর্ষাসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। 

জোবায়েদ হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণের সভাপতি ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন। গত এক বছর ধরে জোবায়েদ হোসাইন পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় ১৫, নূরবক্স লেনে রওশান ভিলা নামের বাসায় বর্ষা নামের এক ছাত্রীকে ফিজিক্স, ক্যামিস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন। ওই ছাত্রী বর্ষার বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন। এদিন বিকেল ৪টার ৪৫ মিনিটের দিকে ছাত্রীর বাসার তিনতলায় তিনি খুন হন। বাসার নিচতলার সিঁড়ি থেকে তিনতলা পর্যন্ত সিঁড়িতে রক্ত পড়েছিল। তিনতলার সিঁড়িতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

পরবর্তী সময়ে আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে বংশাল থানার সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি তারা তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করে রাখে। রোববার রাত ১১টার দিকে ওই ছাত্রী বর্ষাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ ওই ছাত্রীকে হেফাজতে নেয়। এদিন রাত ১১টার সময় আরমানিটোলার নূরবক্স লেনের নিজ বাসা থেকে তাকে পুলিশ প্রটোকলে গাড়িতে তোলা হয়। এর আগে রাত ১০টা ৫০ মিনিটে খুনের শিকার জোবায়েদ হোসাইনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে নেয় পুলিশ।গতকাল সোমবার জোবায়েদকে তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।