img

প্রথমবার একযোগে তিন দেশে এইচআইভির টিকাদান শুরু

প্রকাশিত :  ০৬:৫৭, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৭:০১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রথমবার একযোগে তিন দেশে এইচআইভির টিকাদান শুরু

প্রথমবারের মতো আফ্রিকার তিন দেশ ইসওয়াতিনি, দক্ষিণ আফ্রিকা ও জাম্বিয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে এইচআইভি প্রতিরোধে নতুন ইনজেকশন ‘লেনাকাপাভির’ প্রয়োগ শুরু করেছে। মহাদেশটিতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি এইচআইভি আক্রান্ত মানুষ থাকায় এই উদ্যোগকে বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বছরে মাত্র দুবার নেওয়া এই ইনজেকশন সংক্রমণের ঝুঁকি ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি কার্যত একটি শক্তিশালী প্রতিরোধক টিকার মতো কাজ করবে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রতি পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্কের একজন এইচআইভিতে আক্রান্ত। সেখানে উইটস ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণা দল পুরো কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করছে। এই প্রকল্পটি জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা ইউনিটেইডের অর্থায়নে চলছে।

ইউনিটেইড জানিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকার জনগণই প্রথম নিয়মিত প্রতিরোধের অংশ হিসেবে লেনাকাপাভির ব্যবহার শুরু করেছেন। তবে কতজন প্রথম ডোজ পেয়েছেন, তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রে এই ওষুধের এক বছরের খরচ প্রায় ২৮ হাজার ডলার, যা অধিকাংশের নাগালের বাইরে।

জাম্বিয়া ও ইসওয়াতিনি যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে ১ হাজার ডোজ পেয়েছে। বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে এ ইনজেকশন সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হচ্ছে।

এদিকে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গিলিয়াড সায়েন্সেস আগামী তিন বছরে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর ২০ লাখ মানুষকে লেনাকাপাভির বিনালাভে সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যদিও সমালোচকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক দাতাদের দেওয়া ডোজ এখনো প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম, আর ওষুধের দামও অত্যন্ত বেশি। সূত্র : এনডিটিভি 

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এর আরও খবর

img

আকাশে ইতিহাস গড়লো তুরস্কের মানববিহীন যুদ্ধবিমান বায়রাকতার কিজিলেলমা

প্রকাশিত :  ০৫:৩২, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫

তুরস্কের মানববিহীন যুদ্ধবিমান বায়রাকতার কিজিলেলমা সফলভাবে আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে একটি জেট ইঞ্জিনচালিত চলন্ত লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করেছে। 

গত রোববার (৩০ নভেম্বর) তুরস্কের বৃহৎ ড্রোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বায়কার এক ঘোষণায় জানায়, বিশ্বের প্রথম মানববিহীন যুদ্ধবিমান হিসেবে কিজিলেলমা এই সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে, যার মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিমানের ইতিহাসে নতুন মাইলফলক যোগ হলো। 

বায়কার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এন-সোশ্যালে এক পোস্টে জানায়, ‘বিশ্বে প্রথমবারের মতো কোনো মানববিহীন যুদ্ধবিমান বিভিআর দূরত্বে এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে চলন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানলো।’

বায়কার আরও জানায়, স্থানীয়ভাবে তৈরি আকাশ-থেকে-আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ‘গোকদোয়ান’ নিক্ষেপ করে কিজিলেলমা উচ্চগতির জেটচালিত লক্ষ্যবস্তুকে নিখুঁতভাবে ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে। এই মিশনে লক্ষ্য শনাক্ত ও অনুসরণে ব্যবহার করা হয়েছে তুরস্কের নিজস্ব প্রযুক্তিতে নির্মিত মুরাদ অ্যাকটিভ ইলেকট্রনিক্যালি স্ক্যানড অ্যারে (এইএসএ) রাডার, যা তৈরি করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আসেলসান। 

রাডার শনাক্তকরণের পর কিজিলেলমার ডানার নিচে স্থাপিত পড থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করা হয়। তুরস্কের ইতিহাসে এটাই প্রথম ঘটনা যেখানে কোনো মানববিহীন যুদ্ধবিমান স্থানীয় রাডার ব্যবস্থাপনা ব্যবহার করে আকাশ-থেকে-আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে জেটচালিত উড়ন্ত লক্ষ্যবস্তুতে সফল আঘাত হেনেছে। এই অর্জনের মধ্য দিয়ে কিজিলেলমা বিশ্বের প্রথম ও একমাত্র মানববিহীন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘আকাশযুদ্ধ সক্ষমতার’ স্বীকৃতি পেল।

এর আগে কিজিলেলমা একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমানকে লক্ষ্য করে পরীক্ষামূলক মিশনও সম্পন্ন করেছিল বলে জানায় বায়কার। তুরস্কের দীর্ঘমেয়াদি এরোস্পেস কৌশলের প্রতিফলন ঘটেছে এই পরীক্ষায়। কৃষ্ণসাগরের উপকূলীয় সিনোপ প্রদেশের আকাশে পরিচালিত এ পরীক্ষাটি ছিল তুরস্কের এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, মেরজিফন বিমান ঘাঁটি থেকে পাঁচটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কিজিলেলমার সঙ্গে একসঙ্গে উড্ডয়ন করছে। 

মনুষ্যচালিত ও মানববিহীন প্ল্যাটফর্মের এই যৌথ মিশন আকাশযুদ্ধের নতুন ধারণা তুলে ধরেছে। মিশনে আকাশ থেকে দৃশ্য ধারণের জন্য বায়রাকতার আকিনচি নামক মানববিহীন ড্রোন ব্যবহার করা হয়। বায়কারের চেয়ারম্যান ও প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা সেলচুক বায়রাকতার বলেন, ‘আজ উড্ডয়ন-ইতিহাসের এক নতুন যুগের দ্বার উন্মোচন করেছে বায়রাকতার।’ তিনি বলেন, ‘বিশ্বে প্রথমবারের মতো কোনো মানববিহীন যুদ্ধবিমান রাডার-নির্দেশিত এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে নিখুঁতভাবে আকাশের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানল।’

বর্তমানে বিশ্বে বায়কারের ড্রোন-উৎপাদন প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় সফলতার অংশ এই কিজিলেলমা। কম রাডার সিগনেচার ও উন্নত সেন্সর প্রযুক্তির কারণে এটি দূর থেকে শত্রু উড়োজাহাজ শনাক্ত করতে সক্ষম, অথচ রাডারে ধরা পড়ে না। 

এতে মুরাদ এইএসএ রাডার, তয়গুন টার্গেটিং সিস্টেমসহ নানা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে। এর আগে পরিচালিত পরীক্ষায় এটি তোলুন ও তেবের-৮২ নামক গোলাবারুদ দিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছিল।

সূত্র: এনডিটিভি