img

নেতানিয়াহুকে ‘পরাজিত নেতা’ মনে করছেন ট্রাম্প: ইসরায়েলি বিশ্লেষক

প্রকাশিত :  ১৯:২০, ০৪ অক্টোবর ২০২৫

নেতানিয়াহুকে ‘পরাজিত নেতা’ মনে করছেন ট্রাম্প: ইসরায়েলি বিশ্লেষক

ইসরায়েল এখন শুধু তার ‘প্রচলিত শত্রু ও সমালোচকদের’ জন্যই নয়, বরং ট্রাম্প ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো ‘মহান বন্ধুদের’ জন্যও বোঝায় পরিণত হয়েছে।এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও। ইসরায়েলি রাজনৈতিক বিশ্লেষক ওরি গোল্ডবার্গ এমন মন্তব্য করেছেন বলে জানিয়েছে কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

ওরি গোল্ডবার্গ বলেছেন, এটা কেউই সরাসরি বলবে না। কিন্তু হামাসের জবাবকে শান্তির ইঙ্গিত হিসেবে পড়ে ট্রাম্পের নেওয়া আকস্মিক সিদ্ধান্তই প্রমাণ করে, তিনি যখন নেতানিয়াহুর দিকে তাকান, ইসরায়েলের দিকে তাকান, তখন এটিকে বোঝা মনে করেন। ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে একজন পরাজিত ব্যক্তি হিসেবে দেখেন।

গোল্ডবার্গ বলেন, পরিস্থিতি এতটা বদলে যেতে পারে, ইসরায়েল কখনও তা চিন্তাও করতে পারেনি। কারণ ইসরায়েল বহু বছর ধরে ‌‘‘গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের অন্তহীন চক্রে’’ এতটাই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে যে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস-নেতৃত্বাধীন হামলার বাইরেও অন্য বাস্তবতাকে স্বীকার করতে পারেনি।

তিনি বলেন, প্রথম যে ফ্লোটিলা গাজামুখে যাত্রা শুরু করেছিল, তার প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে সাম্প্রতিক সুমুদ ফ্লোটিলা নিয়ে বিশ্বজুড়ে দেখা দেওয়া প্রতিক্রিয়ার পার্থক্য দেখুন। কিছুই আর আগের মতো নেই। আজকের সকালের ইসরায়েল গত দুই বছর ধরে যেমন একা ছিল, আমার মনে হয়, তেমনই একা হয়ে পড়েছে।

তবে ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুসরণে নেতানিয়াহুরও স্বার্থ জড়িত রয়েছে বলে মনে করেন এই বিশ্লেষক। গোল্ডবার্গ বলেন, যদি ইসরায়েলে আগাম নির্বাচনের ডাক দেওয়া হয়, তাহলে নেতানিয়াহুর জন্য তা বেশি সুবিধাজনক হবে না। কারণ নিজেকে এমন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে যে, তিনি কঠিন যুদ্ধ করেছেন, আবার একই সঙ্গে কঠিন চুক্তিও স্বাক্ষর করেছেন।

এদিকে, গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাস বলেছে, তারা গাজায় আটক সব ইসরায়েলি বন্দিকে; জীবিত ও মৃত উভয়কেই, মুক্তি দিতে রাজি আছে। তবে গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধের অবসান এবং সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহারের কথা বলেছে গোষ্ঠীটি।

হামাস বলেছে, তারা গাজার ক্ষমতা ফিলিস্তিনি টেকনোক্র্যাটদের সমন্বয়ে গঠিত একটি সংস্থার কাছে হস্তান্তর করবে। তবে ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার বাকি অংশ নিয়ে গোষ্ঠীটি বলেছে, এই বিষয়ে ফিলিস্তিনি জাতীয় কাঠামোর মধ্যে বিস্তৃত আলোচনা হওয়া উচিত। আলোচনায় হামাসও অন্তর্ভুক্ত থাকবে এবং পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে অংশ নেবে। ২০ দফার পরিকল্পনায় হামাসের নিরস্ত্রীকরণও রয়েছে।

সূত্র : আল জাজিরা

img

গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের প্রস্তাবে জাতিসংঘের সমর্থন

প্রকাশিত :  ০৪:৫৪, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ফিলিস্তিনের গাজা ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনাকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া প্রস্তাব পাস করেছে। এই পরিকল্পনায় গাজার জন্য একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) গঠনের কথা রয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই তথ্য জানিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের ১৩টি সদস্য দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়, যার মধ্যে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও সোমালিয়া ছিল, তবে রাশিয়া ও চীন ভোটদানে বিরত থাকে। 

জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মাইক ওয়াল্টজ বলেন, আইএসএফ-এর কাজ হবে এলাকা সুরক্ষিত রাখা, গাজাকে সামরিকীকরণমুক্ত করা, সন্ত্রাসী অবকাঠামো ভেঙে ফেলা, অস্ত্র অপসারণ এবং ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

অবশ্য গাজার শাসকদল হামাস এই প্রস্তাবটি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের দাবি, এটি ফিলিস্তিনিদের অধিকারের দাবি পূরণ করে না। টেলিগ্রামে দেওয়া বিবৃতিতে হামাস বলেছে, পরিকল্পনাটি গাজায় আন্তর্জাতিক অভিভাবকত্ব চাপিয়ে দিচ্ছে, যা ফিলিস্তিনি জনগণ ও তাদের বিভিন্ন গোষ্ঠী মানতে রাজি নয়। 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গাজার ভেতরে আন্তর্জাতিক বাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া—যেমন প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোকে নিরস্ত্র করা—এই বাহিনীকে নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরিয়ে দেবে। খসড়া অনুযায়ী, আইএসএফ-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হবে হামাসসহ অ-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অস্ত্র স্থায়ীভাবে নিষ্ক্রিয় করা। পাশাপাশি বেসামরিক মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং মানবিক সহায়তার রুটগুলো নিরাপদ রাখা।

ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই জন্য হামাসকে অস্ত্র জমা দিতে হবে। এছাড়া আইএসএফ ইসরায়েল ও মিসরের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে গাজায় নতুন করে প্রশিক্ষিত একটি ফিলিস্তিনি পুলিশ গঠনের কথাও বলা হয়েছে, যদিও এতদিন পুলিশ বাহিনী হামাসের আওতাধীন ছিল। 

যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, একাধিক দেশ এই আন্তর্জাতিক বাহিনীতে সদস্য পাঠাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, তবে দেশগুলোর নাম প্রকাশ করা হয়নি।

সূত্র: বিবিসি

আন্তর্জাতিক এর আরও খবর