img

ভ্যাকসিন, আপনার শিশু ও আপনার করণীয়

প্রকাশিত :  ১৩:১৫, ৩০ ডিসেম্বর ২০২০
সর্বশেষ আপডেট: ১৩:৪১, ৩০ ডিসেম্বর ২০২০

ড. জাকি রেজওয়ানা আনোয়ার FRSA

ভ্যাকসিন, আপনার শিশু ও আপনার করণীয়

অক্সফোর্ড-এস্ট্রাজেনেকার অনুমোদন লাভের সাথে সাথে বৃটিশ সরকার ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যাপারে strategy বদলিয়েছে, এটি শুধু Oxford-AstraZeneca - র ব্যাপারে নয়, এটি Pfizer-Biontech -র ক্ষেত্রেও।
Pfizer-Biontech এর সরবরাহ জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে মার্চ পর্যন্ত থেমে থাকবে। এখন প্রাপ্ত বয়স্ক প্রায় সবাইকে এপ্রিল মাসের মধ্যে অক্সফোর্ড-এস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ দেওয়া হবে।  প্রথম ডোজের চার সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার কথা। কিন্তু ১০০ মিলিয়ন ডোজ আগামী দু'এক মাসের মধ্যে পাওয়া যাবে না বলেই বেশী সংখ্যক লোককে নিদেনপক্ষে প্রথম ডোজ দিয়ে রাখা হবে এবং দ্বিতীয় ডোজ তিন মাস পরে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
এখন বাস্তবে এর মানে হচ্ছে - প্রথম ডোজ নেওয়ার ১০/১৫ দিন পরে আপনার সামান্য কিছুটা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হবে তা দিয়ে  হয়তো আপনি কোভিডে গুরুতরভাবে অসুস্থ হবেন না ঠিকই, কিন্তু আপনি কোভিডে আক্রান্ত হতে পারেন। সরকার এই স্ট্র্যাটেজি পরিবর্তন করেছে যাতে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের উপর চাপ কম পড়ে। কাজেই আমাদের এখন থেকে কমপক্ষে আরো ৪/৫ মাস মাস্ক ব্যবহার, হাত ধোয়া, বদ্ধ পরিবেশে ভীড়ের মধ্যে না যাওয়া - এসব মেনে চলতে হবে।
মিডিয়াতে হয়তো শুনে আসছেন বৃটেনের নতুন ভ্যারিয়েন্টটির সংক্রমণের হার বেশী হলেও মৃত্যুহার কম। কথাটার খুব সহজ ব্যাখা করলে চলবে না। মৃতহার কম হলেও যখন অনেক সংখ্যক লোক আক্রান্ত হয় তখন কম মৃত্যুহারেও মৃতের সংখ্যা কিন্তু বেড়ে যায়। ভেবে দেখুন তো একশো জনের এক পারসেন্ট আর এক লাখ লোকের এক পারসেন্ট কি এক সংখ্যা?
আপনাকে আরো মনে রাখতে হবে যে আপনার শিশু সন্তানের জন্যে কিন্তু ভ্যাকসিন নেই। কারণ শিশুদেরকে ট্রায়ালের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। শিশুদের উপরে কোনো ড্যাটা বা উপাত্ত আমাদের কাছে নেই। শিশুদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বড়দের চাইতে আলাদা। দুটো কোম্পানি অবশ্য গত অক্টোবর থেকে শিশুদের উপর ট্রায়াল শুরু করেছে মাত্র। কাজেই শিশুদের স্বার্থেই বাবা মায়েদের ভ্যাকসিন নেওয়া উচিত। এখন কথা হচ্ছে যতদিন শিশুদের ভ্যাকসিন না আসছে ততদিন বাবা মা হিসেবে আপনি কী কী করতে পারেন।
প্রথমত শিশুরা যাতে হাত ধোয়া, মাস্ক পরা ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা - এসব মেনে চলে সে ব্যাপারে তাদেরকে সবসময় সতর্ক ও সচেতন রাখতে হবে। বৃটেনের নতুন ভ্যারিয়ন্টটির চাইতে দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্টটি শিশুদের ক্ষেত্রে বেশী মারত্মক। সব শিশুরা আক্রান্ত হবে এমন নয়, তবে Multisystem Inflammatory Syndrome in children (MISC) নামে একটি গুরুতর অসুখ আছে, শিশুদের ক্ষেত্রে এই অসুখটির Covid-19 - এর সাথে সম্পর্ক রয়েছে। এটি সরাসরি কোভিড থেকে হতে পারে অথবা কোভিডের সাথে সাথে হতে পারে।

কী কী লক্ষণ দেখে আপনি তা বুঝতে পারবেন?

যদি আপনার শিশুর জ্বর, পেটে ব্যাথা, বমি, পাতলা পায়খানা, ঘাড়ে ব্যাথা, চোখ লাল হয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। আর যদি আপনার শিশুর শ্বাসকষ্ট হয় বা কোনোভাবেই থামছে না এমন বুকে ব্যাথা হয় বা খুব বেশী পেটে ব্যাথা হয় বা ঠোঁট বা মুখ হালকা নীল হয়ে যায় বা আপনার কথায় সাড়া না দেয় তাহলে emergencyতে নিয়ে যেতে হবে।
সব শেষে আরেকটি কথা মনে রাখবেন, যদি কারো কাছে আপনার contact list-এ নেই এমন কারো কাছ থেকে ভ্যাকসিন সংক্রান্ত মেইল আসে এবং তাতে একটি ফাইল সংযুক্ত করা হয় তাহলে চট কোরে ঐ ফাইল খুলবেন না। এটি হ্যাকারদের কাজ হতে পারে।
সকলে সুস্থ, নিরাপদ থাকুন এবং ভুল তথ্য থেকে দুরে থাকুন।
[লেখক মা ও শিশু বিশেষজ্ঞ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও সংবাদ পাঠক]

যুক্তরাজ্য এর আরও খবর

ইংলিশ চ্যানেলে নৌকা ডুবে শিশুসহ নিহত ৫ | JANOMOT | জনমত

img

লন্ডনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি আপসানা নতুন বিতর্কে

প্রকাশিত :  ০৫:৪১, ০২ নভেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৬:৩৫, ০২ নভেম্বর ২০২৫

আবারও নতুন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত পপলার–অ্যান্ড–লাইমহাউস এলাকার সংসদ সদস্য আপসানা বেগম । প্রচুর আয় থাকা সত্ত্বেও তিনি এখনও কাউন্সিলের ঘরে থাকেন—এমন অভিযোগ ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এতে স্থানীয় রাজনীতি ও বাংলাদেশি কমিউনিটিতে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী একজন অভিযোগ করেন, এলাকার হাজারো মানুষ এখনও সরকারি বাসস্থানের জন্য অপেক্ষায়, গৃহহীনতা বৃদ্ধি পেয়েছে; অথচ একজন উচ্চ আয়ের জনপ্রতিনিধি দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ ঘর ব্যবহার করছেন।

পোস্টটি ছড়িয়ে পড়ার পর একদল নাগরিক এই অভিযোগকে সমর্থন দিয়ে আপসানা বেগমের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অন্যদিকে আরেকদল তাকে সমর্থন জানিয়েছেন। তারা বলেন, তিনি ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক প্রতিকূলতার মধ্যে দাঁড়িয়েও সমাজের বঞ্চিত শ্রেণির পক্ষে কাজ করছেন।

তারা আরও বলছেন, তিনি ঘরোয়া নির্যাতনের শিকার ছিলেন। সংখ্যালঘু নারী হিসেবে রাজনীতিতে বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন। সাধারণ মানুষের মতো সরকারি সুবিধা নেওয়ায় আপসানা বেগমের ভুল নেই বলেও মস্তব্য করেছেন তারা।

সমালোচকরা বলছেন, উচ্চ আয়ের ব্যক্তি হয়েও দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ বাসায় থাকা অনৈতিক।

প্রসঙ্গত, আপসানা বেগম বেড়ে উঠেছেন টাওয়ার হ্যামলেটসে। তার প্রয়াত বাবা এলাকাটির সাবেক জনপ্রতিনিধি ছিলেন। চলতি বছর পারিবারিক সহিংসতা নিয়ে সংসদে আবেগঘন বক্তৃতা দিয়ে তিনি আলোচনায় আসেন। সমাজে নির্যাতিত নারীদের পক্ষে তার অবস্থান প্রশংসিত হয়।

আপসানা বেগমের পারিবারিক শিকড় সিলেটের সুনামগঞ্জে।

যুক্তরাজ্য এর আরও খবর