img

লন্ডনে অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভে লাখো মানুষের ঢল

প্রকাশিত :  ০৬:২৭, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

লন্ডনে অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভে লাখো মানুষের ঢল

অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভে সেন্ট্রাল লন্ডনে অংশ নিয়েছে এক লাখেরও বেশি মানুষ। ডানপন্থি নেতা টমি রবিনসনের আহ্বানে শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল তিনটার পর সেন্ট্রাল লন্ডনের হোয়াইটহলে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।  খবর বিবিসির। 

খবরে বলা হয়, ‘ইউনাইট দ্য কিংডম’ শীর্ষক এ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন আয়োজকদের বিভিন্ন নেতা। ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ইলন মাস্ক যুক্তরাষ্ট্র থেকে অংশ নেন।

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ‘সরকার পরিবর্তনের ডাক’ দেন ইলন মাস্ক।

তিনি বলেন, ‘আপনারা পারবেন না; আমাদের চার বছর অপেক্ষা করা বা পরবর্তী নির্বাচন যতদিনেই (অনুষ্ঠিত) হোক— এটি বেশ দীর্ঘ সময়।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিছু না কিছু করতে হবে। পার্লামেন্ট ভেঙে নতুন ভোট আয়োজন করতে হবে।’

শনিবারের এ আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা ইংল্যান্ডের ও ব্রিটেনের পতাকা হাতে যোগ দেন। সামাজিক মাধ্যম এক্সে রবিনসন বলেছেন, “ইতোমধ্যেই লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে লাখ লাখ মানুষ জড়ো হয়েছে, আমরা আমাদের স্বাধীনতার জন্য এক হয়েছি।”

লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ (মেট) জানায়, বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ অন্তত নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, সমাবেশে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করতে দেখা গেছে এবং কিছু পুলিশ সদস্যের দিকে বিভিন্ন বস্তু ছোড়া হয়েছে।

পুলিশ বলেছে, রবিনসনের পক্ষের বিক্ষোভকারীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তাঁদের দিকে কাচের বোতল, লোহার পাইপ এবং বিয়ারের ক্যান নিক্ষেপ করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এদিন একই সময়ে কাছেই ‘স্ট্যান্ড আপ টু রেসিজম’ শীর্ষক পাল্টা প্রতিবাদও অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ অংশ নেন।

ব্রিটিশ পুলিশ জানায়, দিনভর বিক্ষোভ সামলাতে লন্ডনে এক হাজার ৬০০ এর বেশি পুলিশ সদস্যকে মোতায়েন করা হয়, যাদের মধ্যে ৫০০ এসেছেন অন্যান্য অঞ্চল থেকে। এর পাশাপাশি লন্ডনে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ফুটবল ম্যাচ ও কনসার্ট থাকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে চাপে পড়ে।

স্থানীয় সময় দুপুর নাগাদ টেমস নদীর দক্ষিণ পাশের রাস্তাগুলোতে লাখো বিক্ষোভকারী জড়ো হয়। পরে তারা যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ভবন যেখানে সেই ওয়েস্টমিনস্টারের দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আগাতে শুরু করে। এ সময় তাদের হাতে যুক্তরাজ্যের ইউনিয়ন জ্যাক পতাকা, ইংল্যান্ডের লাল-সাদা সেন্ট জর্জ ক্রস, এমনকি মার্কিন ও ইসরায়েলি পতাকা দেখা যায়। অনেকে পরে ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণার ‘মেক আমেরিকা গ্রেইট এগেইন’ টুপি।

মিছিলে তারা যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। তাদের বহন করা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘ওদের ফেরত পাঠাও’। মিছিলে অনেক পরিবারের শিশুদেরও সঙ্গে এনেছিলেন।

ব্রিটেনে এখন অর্থনৈতিক সংকটের চেয়েও বড় রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে উঠেছে অভিবাসন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ২৮ হাজারের বেশি অভিবাসী ছোট নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে দেশটিতে পৌঁছেছে। এই সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণ।

লাল-সাদা ইংল্যান্ডের পতাকা এখন লন্ডনের রাস্তায়, দেয়ালে, এমনকি সড়কের ওপর আঁকা হচ্ছে। সমর্থকদের ভাষায়, এটি জাতীয় গৌরবের বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু বর্ণবাদবিরোধী কর্মীদের চোখে, এটি বিদেশিদের প্রতি শত্রুতার বার্তা।

এদিকে বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসেও ছিল প্রাণবন্ত প্রতিবাদী র‍্যালি। ডকল্যান্ড এলাকায় বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সমবেত হন শত শত মানুষ। কমিউনিটি নেতারা বলেন ব্রিটেনে বর্ণবাদের কোনো স্থান নেই, এর বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

লন্ডনের বহু সম্প্রদায়ের এই শহরে বর্ণবাদের কোনো ঠাঁই নেই- এই আওয়াজ উঠেছে টাওয়ার হ্যামলেটসে। বাংলাদেশি কমিউনিটির শত শত আন্দোলনকারী জানিয়ে দিলেন, বর্ণবৈষম্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদ অটুট, তাদের ঐক্য অবিচল।

যুক্তরাজ্য এর আরও খবর

ইংলিশ চ্যানেলে নৌকা ডুবে শিশুসহ নিহত ৫ | JANOMOT | জনমত

img

লন্ডনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি আপসানা নতুন বিতর্কে

প্রকাশিত :  ০৫:৪১, ০২ নভেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৬:৩৫, ০২ নভেম্বর ২০২৫

আবারও নতুন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত পপলার–অ্যান্ড–লাইমহাউস এলাকার সংসদ সদস্য আপসানা বেগম । প্রচুর আয় থাকা সত্ত্বেও তিনি এখনও কাউন্সিলের ঘরে থাকেন—এমন অভিযোগ ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এতে স্থানীয় রাজনীতি ও বাংলাদেশি কমিউনিটিতে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী একজন অভিযোগ করেন, এলাকার হাজারো মানুষ এখনও সরকারি বাসস্থানের জন্য অপেক্ষায়, গৃহহীনতা বৃদ্ধি পেয়েছে; অথচ একজন উচ্চ আয়ের জনপ্রতিনিধি দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ ঘর ব্যবহার করছেন।

পোস্টটি ছড়িয়ে পড়ার পর একদল নাগরিক এই অভিযোগকে সমর্থন দিয়ে আপসানা বেগমের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অন্যদিকে আরেকদল তাকে সমর্থন জানিয়েছেন। তারা বলেন, তিনি ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক প্রতিকূলতার মধ্যে দাঁড়িয়েও সমাজের বঞ্চিত শ্রেণির পক্ষে কাজ করছেন।

তারা আরও বলছেন, তিনি ঘরোয়া নির্যাতনের শিকার ছিলেন। সংখ্যালঘু নারী হিসেবে রাজনীতিতে বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন। সাধারণ মানুষের মতো সরকারি সুবিধা নেওয়ায় আপসানা বেগমের ভুল নেই বলেও মস্তব্য করেছেন তারা।

সমালোচকরা বলছেন, উচ্চ আয়ের ব্যক্তি হয়েও দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ বাসায় থাকা অনৈতিক।

প্রসঙ্গত, আপসানা বেগম বেড়ে উঠেছেন টাওয়ার হ্যামলেটসে। তার প্রয়াত বাবা এলাকাটির সাবেক জনপ্রতিনিধি ছিলেন। চলতি বছর পারিবারিক সহিংসতা নিয়ে সংসদে আবেগঘন বক্তৃতা দিয়ে তিনি আলোচনায় আসেন। সমাজে নির্যাতিত নারীদের পক্ষে তার অবস্থান প্রশংসিত হয়।

আপসানা বেগমের পারিবারিক শিকড় সিলেটের সুনামগঞ্জে।

যুক্তরাজ্য এর আরও খবর