img

লন্ডনে ‘ফিলিস্তিন অ্যাকশন’র সমর্থনে বিক্ষোভ করায় গ্রেপ্তার ৪৬৬

প্রকাশিত :  ০৫:৪৪, ১০ আগষ্ট ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৮:২০, ১০ আগষ্ট ২০২৫

লন্ডনে ‘ফিলিস্তিন অ্যাকশন’র সমর্থনে বিক্ষোভ করায় গ্রেপ্তার ৪৬৬

ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনে ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ নামের একটি সংগঠনকে সমর্থন জানানোর কারণে অন্তত ৪৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত মাসে সংগঠনটিকে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ হিসেবে ঘোষণা দেয় যুক্তরাজ্য সরকার।

গতকাল শনিবার (৯ আগস্ট) স্থানীয় সময় রাত ৯টার মধ্যে লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কয়ার থেকে এসব গ্রেপ্তার হয়। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

মেট্রোপলিটন পুলিশ জানায়, “প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থন” করার অভিযোগে শনিবার স্থানীয় সময় রাত ৯টার মধ্যে পার্লামেন্ট স্কয়ার এলাকা থেকে অন্তত ৪৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে এক পোস্টে পুলিশ জানিয়েছিল, “যত সময় লাগুক, প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থনকারী যে কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা স্কয়ারে বসে হাতে “আমি গণহত্যার বিরোধী, আমি প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থন করি” লেখা প্ল্যাকার্ড ধরে আছেন, সেখান থেকে পুলিশ তাদের সরিয়ে নিচ্ছে।

প্রতিবাদের আয়োজক সংগঠন ‘ডিফেন্ড আওয়ার জুরিস’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানায়, “মানুষ গাজায় গণহত্যা ও প্যালেস্টাইন অ্যাকশন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।”

সরকারি নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে একাধিক বিক্ষোভে এ পর্যন্ত শত শত মানুষকে আটক করা হয়েছে। সমালোচকদের অভিযোগ, এই নিষেধাজ্ঞা মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতায় আঘাত এবং গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমন করার কৌশল।

২০০০ সালের সন্ত্রাসবাদ আইন অনুযায়ী, সংগঠনটির সদস্যপদ গ্রহণ বা সমর্থন এখন অপরাধ। দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রেপ্তার ও শাস্তির হুমকি ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’-এর সমর্থকদের দমিয়ে রাখতে পারেনি। প্রতিবেদক সোনিয়া গালেগো জানান, “শুধু ‘আমি প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থন করি’ লেখা একটি টি-শার্ট পরা বা কাগজে লিখে রাখাও গ্রেপ্তারের কারণ হতে পারে।”

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্যাডি ফ্রেন্ড নামে এক ব্যক্তি বলেন, সরকারের এই পদক্ষেপ যুক্তরাজ্যে স্বাধীনতার প্রশ্ন সামনে এনেছে। তিনি বলেন, “যদি আমরা সাতটি শব্দ লেখা একটি সাইন হাতে নিয়ে নীরবে বসতেও না পারি, তাহলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বলতে কী বোঝায়?”

দাদি মানজি ম্যান্সফিল্ড নামে অন্য এক অংশগ্রহণকারী জানান, আগের এক বিক্ষোভে আটক হলেও তিনি আবার এসেছেন। তার ভাষায়, “এটা সেই ব্রিটেন নয়, যেখানে আমি বড় হয়েছি। এখন আমরা এক ভিন্ন বাস্তবতায় বাস করছি, যা আমি মেনে নেব না।”

এদিকে শনিবার ‘প্যালেস্টাইন কোয়ালিশন’-এর আয়োজিত আলাদা এক মিছিলেও অংশ নেয় অনেকে। রাসেল স্কয়ার থেকে হোয়াইটহল পর্যন্ত এই মিছিল থেকে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সমর্থনকারী ব্যানার প্রদর্শনের অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যুক্তরাজ্য শান্তিপূর্ণভাবে প্ল্যাকার্ড ধরে রাখা বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে একে মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের লঙ্ঘন বলে আখ্যা দিয়েছে।

ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপি জন ম্যাকডোনেলও পার্লামেন্ট স্কয়ারে গ্রেপ্তারের সমালোচনা করে একে “গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিপন্থি” বলে মন্তব্য করেন।


যুক্তরাজ্য এর আরও খবর

ইংলিশ চ্যানেলে নৌকা ডুবে শিশুসহ নিহত ৫ | JANOMOT | জনমত

img

লন্ডনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি আপসানা নতুন বিতর্কে

প্রকাশিত :  ০৫:৪১, ০২ নভেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৬:৩৫, ০২ নভেম্বর ২০২৫

আবারও নতুন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত পপলার–অ্যান্ড–লাইমহাউস এলাকার সংসদ সদস্য আপসানা বেগম । প্রচুর আয় থাকা সত্ত্বেও তিনি এখনও কাউন্সিলের ঘরে থাকেন—এমন অভিযোগ ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এতে স্থানীয় রাজনীতি ও বাংলাদেশি কমিউনিটিতে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী একজন অভিযোগ করেন, এলাকার হাজারো মানুষ এখনও সরকারি বাসস্থানের জন্য অপেক্ষায়, গৃহহীনতা বৃদ্ধি পেয়েছে; অথচ একজন উচ্চ আয়ের জনপ্রতিনিধি দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ ঘর ব্যবহার করছেন।

পোস্টটি ছড়িয়ে পড়ার পর একদল নাগরিক এই অভিযোগকে সমর্থন দিয়ে আপসানা বেগমের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অন্যদিকে আরেকদল তাকে সমর্থন জানিয়েছেন। তারা বলেন, তিনি ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক প্রতিকূলতার মধ্যে দাঁড়িয়েও সমাজের বঞ্চিত শ্রেণির পক্ষে কাজ করছেন।

তারা আরও বলছেন, তিনি ঘরোয়া নির্যাতনের শিকার ছিলেন। সংখ্যালঘু নারী হিসেবে রাজনীতিতে বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন। সাধারণ মানুষের মতো সরকারি সুবিধা নেওয়ায় আপসানা বেগমের ভুল নেই বলেও মস্তব্য করেছেন তারা।

সমালোচকরা বলছেন, উচ্চ আয়ের ব্যক্তি হয়েও দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ বাসায় থাকা অনৈতিক।

প্রসঙ্গত, আপসানা বেগম বেড়ে উঠেছেন টাওয়ার হ্যামলেটসে। তার প্রয়াত বাবা এলাকাটির সাবেক জনপ্রতিনিধি ছিলেন। চলতি বছর পারিবারিক সহিংসতা নিয়ে সংসদে আবেগঘন বক্তৃতা দিয়ে তিনি আলোচনায় আসেন। সমাজে নির্যাতিত নারীদের পক্ষে তার অবস্থান প্রশংসিত হয়।

আপসানা বেগমের পারিবারিক শিকড় সিলেটের সুনামগঞ্জে।

যুক্তরাজ্য এর আরও খবর