img

ব্রিটেনে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য দুঃসংবাদ, বন্ধ হচ্ছে ‘গোল্ডেন টিকিট’

প্রকাশিত :  ১০:৫৯, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

ব্রিটেনে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য দুঃসংবাদ, বন্ধ হচ্ছে ‘গোল্ডেন টিকিট’

ব্রিটিশ সরকার আশ্রয়প্রার্থী ও শরণার্থীদের জন্য বড় দুঃসংবাদ দিয়েছে। দেশটি বিদ্যমান সুরক্ষা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে একটি ব্যাপক নীতি পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে। অনিয়মিত অভিবাসন কমানো এবং ডানপন্থি রাজনীতির উত্থান মোকাবিলাই এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য বলে জানানো হয়েছে।

আজ রোববার (১৬ নভেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডেনমার্কের কঠোর আশ্রয়নীতির আদলে তৈরি এ পরিকল্পনা শনিবার রাতে প্রকাশ করেন যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার নেতৃত্বাধীন সরকারটি বর্তমানে অভিবাসনবিরোধী দল রিফর্ম ইউকের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির চাপে রয়েছে।

মাহমুদ বলেন, আমি যুক্তরাজ্যের আশ্রয়প্রার্থীদের ‘গোল্ডেন টিকিট’ ব্যবস্থা শেষ করব। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে ‘আধুনিক সময়ের সবচেয়ে বড় আশ্রয়নীতির সংস্কার’ বলে বর্ণনা করেছে। আগামী সোমবার সংসদে এই প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।

এদিকে, রিফিউজি কাউন্সিলের প্রধান এনভার সলোমন এই পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কঠোর নীতি মানুষকে যুক্তরাজ্যে আসা থেকে বিরত করতে পারবে না। যেসব শরণার্থী কঠোর পরিশ্রম করে ব্রিটেনের জন্য অবদান রাখেন, তাদের নিরাপদ ও স্থায়ী জীবন গড়ার সুযোগ থাকা উচিত।

বর্তমানে শরণার্থীরা পাঁচ বছরের জন্য অনুমোদন পায়। এরপর তারা স্থায়ীভাবে দেশে থাকার অনুমতি ও পরে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারে। নতুন নীতিতে এই অনুমতি কমিয়ে ৩০ মাস করার কথা বলা হয়েছে। এর নিয়মিত পুনর্মূল্যায়ন হবে এবং পরিস্থিতি নিরাপদ হলে তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে বাধ্য করা হবে।

এছাড়া, দীর্ঘমেয়াদি আবাসনের আবেদন করতে শরণার্থীদের ২০ বছর অপেক্ষা করতে হবে বলে জানানো হয়েছে।

আল জাজিরা জানিয়েছে, ব্রিটেনে আশ্রয় আবেদনের সংখ্যা রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত এক বছরে এক লাখ ৯ হাজার ৩৪৩ জন আশ্রয়ের আবেদন করেছে। এ সংখ্যা গত বছরের চেয়ে ১৭ শতাংশ বেশি।

সরকার বলেছে, নতুন সংস্কার অনিয়মিত অভিবাসনের আকর্ষণ কমাবে এবং যারা দেশে অবস্থান করছে তাদের সরানো সহজ হবে। ২০০৫ সালের আইনে থাকা আশ্রয়প্রার্থীদের আবাসন ও সাপ্তাহিক আর্থিক সহায়তা প্রদানের আইনগত বাধ্যবাধকতা বাতিল করার পরিকল্পনাও রয়েছে। ফলে সহায়তা দেওয়া হবে ‘বিবেচনার ভিত্তিতে’, অর্থাৎ কাজ করতে সক্ষম বা নিজেদের খরচ বহন করতে পারা ব্যক্তিদের সহায়তা নাও পেতে পারে।


যুক্তরাজ্য এর আরও খবর

ইংলিশ চ্যানেলে নৌকা ডুবে শিশুসহ নিহত ৫ | JANOMOT | জনমত

img

বাংলাদেশে কারাদণ্ডের রায়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপের প্রতিক্রিয়া

প্রকাশিত :  ১৩:৩৫, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশের একটি আদালত ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য (এমপি) টিউলিপ সিদ্দিককে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ নেওয়ার ক্ষেত্রে ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতির অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রচলিত আইনে এই দণ্ড কার্যকর হবে।

এই রায়ের পর ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক দ্য গার্ডিয়ানকে বলেছেন, তিনি আশা করেন এই রায়কে যথাযথ অবজ্ঞার সঙ্গে দেখা হবে। তিনি এই পুরো প্রক্রিয়াটিকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ ও প্রহসনমূলক বলে অভিহিত করেছেন।

রায় নিয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই তথাকথিত ‘ক্যাঙ্গারু কোর্ট’-এর রায় যেমন অনুমেয় ছিল, তেমনই এটি অন্যায়। আমি আশা করি এই তথাকথিত রায়কে অবজ্ঞার সঙ্গে দেখা হবে, যা এর প্রাপ্য। আমার মনোযোগ সব সময় আমার হ্যাম্পস্টেড এবং হাইগেটের দিকেই ছিল এবং আমি বাংলাদেশের এই নোংরা রাজনীতিতে মনোযোগ দিতে চাচ্ছি না।

এর আগে সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে এ রায় ঘোষণা করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলমের আদালত। এই রায়ের মাধ্যমে দেশের আদালতে প্রথম কোনো ব্রিটিশ এমপির সাজা ঘোষণা করা হলো।

আজকের রায়ের আগে প্লট দুর্নীতির তিন মামলায় ২৭ নভেম্বর শেখ হাসিনার ৭ বছর করে ২১ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এ ছাড়া এক মামলায় তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে আজকের মামলার রায়ে নতুন করে সাজা পেলেন শেখ রেহানা ও তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক।

দেশে ফেরাতে চায় দুদক

প্লট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা ও রেহানার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিককে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফেরানো হবে বলে জানিয়েছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খান মুহাম্মদ মইনুল হাসান।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক রবিউল আলম মামলার রায় ঘোষণা করলে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক ব্রিফিংয়ে তিনি একথা জানান।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় দুদকের পিপি মইনুল হাসান বলেন, এ রায় আমাদের প্রত্যাশামতো হয়নি। আমরা সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন চেয়েছিলাম। দুদকের সাথে কথা বলে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।

পিপি আরও বলেন, যেসব দেশে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, টিউলিপসহ অন্য আসামিরা পলাতক আছে সেসব দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করব। ইন্টারপোলের সহায়তায় তাদের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা নেব আমরা। টিউলিপ একদিকে বাংলাদেশের নাগরিক, আবার যুক্তরাজ্যের নাগরিক। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমরা টিউলিপের সাজার বিষয়টি অবহিত করব। আইনের যেসব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাকে দেশে ফেরানো যায় সেসব প্রক্রিয়া আমরা সম্পন্ন করব।

তিনি আরও বলেন, টিউলিপ কখনো ফোন কল, কখনো অ্যাপস ব্যবহার করে শেখ হাসিনাকে প্লট বরাদ্দের জন্য ক্ষমতা প্রয়োগ করে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মচারীরা এসে এ বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। আমরা মামলাটি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী রায় হয়নি।


যুক্তরাজ্য এর আরও খবর