img

টাকা ছাপাতে বছরে ব্যয় ২০ হাজার কোটি, ক্যাশলেস লেনদেনে জোর দিচ্ছেন গভর্নর

প্রকাশিত :  ১২:১৫, ১০ আগষ্ট ২০২৫

টাকা ছাপাতে বছরে ব্যয় ২০ হাজার কোটি, ক্যাশলেস লেনদেনে জোর দিচ্ছেন গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন টাকা ছাপানো, সংরক্ষণ, সারা দেশে পরিবহন ও বণ্টনে প্রতিবছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। রাষ্ট্রের এ বিপুল খরচ বাঁচাতে হলে নগদ অর্থ ব্যবহারের প্রবণতা কমিয়ে আনার ওপর ওপর পরামর্শ দেন তিনি। গভর্নর বলেন, “ক্যাশলেস বা নগদ অর্থ ছাড়াই লেনদেন বাড়াতে হবে।”

আজ রোববার (১০ আগস্ট) সকালে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩৬৫ দিন’শীর্ষক সংলাপে এ কথা বলেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। 

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এ  সংলাপ আয়োজন করে।

সংলাপে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, প্রতিবছর টাকা ছাপানো, পরিবহন ও বণ্টনে বিশাল অঙ্কের অর্থ খরচ হয়। এ খরচ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে কিউআর কোডভিত্তিক লেনদেন জনপ্রিয় করতে নীতিগত সহায়তা ও প্রযুক্তি অবকাঠামো তৈরির কাজ করছে।

গভর্নর আরও বলেন, “লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে কিউআর কোড ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ভোক্তা—সবার জন্য লেনদেন হবে দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছ। ক্যাশের ব্যবহার কমলে রাষ্ট্রীয় খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।”

এ সময় তিনি ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য স্মার্টফোনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। বলেন, “বর্তমানে আর্থিক লেনদেন, বিল পরিশোধ বা ইন্টারনেটভিত্তিক যেকোনো সেবা নিতে স্মার্টফোনের ব্যবহার অপরিহার্য। ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে ভালো মানের স্মার্টফোন বাজারে আনতে পারলে শতভাগ মানুষকে স্মার্টফোনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।”

“এ লক্ষ্য অর্জনে ইন্টারনেটের দাম আরও কমাতে হবে এবং সেবার মান বাড়াতে হবে”, বলেন গভর্নর।

img

ফ্রিডম হাউসের প্রতিবেদন: দেশে বেড়েছে ইন্টারনেট ব্যবহারের স্বাধীনতা

প্রকাশিত :  ১২:০৬, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

মার্কিন সংস্থা ফ্রিডম হাউস জানিয়েছে, বিশ্বে অনলাইনের স্বাধীনতা কমে গেলেও বাংলাদেশে এর উন্নতি হয়েছে । আজ প্রকাশিত ‘ফ্রিডম অন দ্য নেট ২০২৫’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর মূল্যায়নে থাকা ৭২টি দেশের মধ্যে ইন্টারনেট স্বাধীনতায় সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে বাংলাদেশে।

এ গবেষণায় ২০২৪ সালের জুন থেকে ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে।

ফ্রিডম হাউস বলছে, ২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে হওয়া অভ্যুত্থানে একটি কর্তৃত্ববাদী সরকার ক্ষমতা হারায়। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ডিজিটাল ক্ষেত্রে কিছু ইতিবাচক সংস্কার আনে। এর ফলেই বাংলাদেশের ইন্টারনেট স্বাধীনতা সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১০০-এর মধ্যে ৪৫ হয়েছে। গত বছর এই স্কোর ছিল ৪০। এটি গত সাত বছরের সেরা অবস্থান।

তবে এত উন্নতির পরও বাংলাদেশ এখনো ‘আংশিক মুক্ত’ দেশ হিসেবে তালিকায় রয়ে গেছে—যে অবস্থানে ২০১৩ সাল থেকে রয়েছে।

ফ্রিডম হাউস তিনটি বড় বিষয় দেখে স্কোর নির্ধারণ করে—

(১) ইন্টারনেটে প্রবেশের বাধা,

(২) অনলাইনে প্রকাশিত বিষয়বস্তুর ওপর নিয়ন্ত্রণ,

(৩) ব্যবহারকারীর অধিকার লঙ্ঘন।

এই তিনটি বিভাগে মোট ২১টি সূচক ব্যবহার করে প্রতিটি দেশের অনলাইন স্বাধীনতার মাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা কিছু বড় পরিবর্তন হলো—২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মুহাম্মদ এমদাদ-উল-বারীকে বিটিআরসির চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়। তিনি ইন্টারনেট বন্ধ না করার নীতি গ্রহণ করেন এবং ইন্টারনেট প্রবেশাধিকারকে মানবাধিকার হিসেবে দেখার কথা বলেন।

২০২৫ সালের মে মাসে সরকার বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন (সিএসএ) বাতিল করে। এর বদলে সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ (সিএসও) জারি হয়।

এতে কিছু ভালো দিক যেমন অনলাইন হয়রানি ও যৌন নির্যাতনবিরোধী সুরক্ষা রয়েছে, তবে আগের মতোই কিছু উদ্বেগজনক বিষয়—যেমন অনলাইনে বক্তব্যের জন্য শাস্তি ও নজরদারি রয়ে গেছে।

এদিকে দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে। তবে ভারত ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে পেছনে রয়েছে। পাকিস্তান ২৭ পয়েন্ট পেয়ে ‘মুক্ত নয়’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। শ্রীলঙ্কা ৫৩ ও ভারত ৫১ পয়েন্ট পেয়ে দুটোই ‘আংশিক মুক্ত’ শ্রেণিতে রয়েছে।


বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এর আরও খবর