img

যে ১০ দক্ষতা কখনো কেড়ে নিতে পারবে না এআই

প্রকাশিত :  ০৮:৩৮, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৯:১১, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যে ১০ দক্ষতা কখনো কেড়ে নিতে পারবে না এআই

এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে মানুষের কর্মসংস্থান হারানোর আশঙ্কা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে এমন কিছু দক্ষতা অর্জন করা জরুরি, যা মেশিনের পক্ষে সহজে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব নয়। প্রথম আলো ডেস্কের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এমন দশটি মানবিক দক্ষতা নিচে আলোচনা করা হলো, যা মানুষকে মেশিনের চেয়ে এগিয়ে রাখবে।

১. আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা (ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স বা ইকিউ)

মানুষের অনুভূতি বোঝা, অন্যের আবেগকে সম্মান জানানো এবং নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা হলো আবেগীয় বুদ্ধিমত্তার মূল ভিত্তি। এই দক্ষতা সম্পর্ক স্থাপন, পরিচালনা এবং নেতৃত্ব প্রদানের জন্য অপরিহার্য। এটি মানুষকে অন্যদের সঙ্গে গভীর সংযোগ স্থাপন করতে সহায়তা করে, যা এআই অনুকরণ করতে পারে না।

২. সমালোচনামূলক ও বিচারিক চিন্তাভাবনা

গভীরভাবে চিন্তা করে জটিল সমস্যার সমাধান করা এবং স্বতন্ত্র সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা মানুষের একটি বিশেষ দক্ষতা। এটি নতুনত্ব ও সৃজনশীলতার পথ খুলে দেয়। এআই শুধুমাত্র প্রোগ্রাম করা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কাজ করতে পারে, কিন্তু স্বতন্ত্রভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা তার নেই।

৩. সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবন

নতুন ধারণা তৈরি করা এবং শিল্প, সাহিত্য বা বিজ্ঞানে নতুনত্ব আনা মানুষের একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। এআই বিদ্যমান তথ্য ব্যবহার করে কিছু তৈরি করতে পারলেও, তা মানুষের মতো মৌলিক সৃজনশীলতা নয়। এটি কেবল তথ্যের পুনরাবৃত্তি বা সমন্বয় মাত্র।

৪. নৈতিক বিশ্লেষণ ও মূল্যবোধ

মানুষ নৈতিকতা, সহমর্মিতা এবং মানবিক বিবেচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়। এআই অ্যালগরিদম চালাতে পারলেও, এটি মানুষের মতো নিজস্ব নৈতিক মানদণ্ড তৈরি করতে পারে না। মানবিক মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা মানুষকে এআই থেকে আলাদা করে।

৫. অভিযোজন ক্ষমতা ও দৃঢ়তা

পরিবর্তিত পরিস্থিতি সামাল দেওয়া এবং নতুন বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা মানুষের একটি বড় শক্তি। সংকটের মুহূর্তে টিকে থাকার মানসিক দৃঢ়তা মানুষকে অন্যদের থেকে আলাদা করে।

৬. সাংস্কৃতিক বুদ্ধিমত্তা ও বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি

বিভিন্ন সংস্কৃতিকে বোঝা, সম্মান করা এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে কাজ করার ক্ষমতা মানুষকে এগিয়ে রাখে। এটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, যা মেশিনের পক্ষে বোঝা বা অনুকরণ করা সম্ভব নয়।

৭. আত্মপর্যালোচনা ও আবেগ নিয়ন্ত্রণ

নিজেকে জানার চেষ্টা, নিজের ভুল থেকে শেখা এবং মানসিক শান্তি বজায় রাখার ক্ষমতা ব্যক্তিগত উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার মূল চাবিকাঠি। এটি মানুষকে মানসিক চাপ মোকাবেলা করতে এবং আরও ভালোভাবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

৮. আত্মরক্ষার কৌশল

শারীরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আত্মরক্ষার কৌশল আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। একটি সুস্থ শরীর মানসিক দৃঢ়তারও উৎস। এই শারীরিক এবং মানসিক দক্ষতা এআই অর্জন করতে পারে না।

৯. আর্থিক ব্যবস্থাপনা

অর্থনৈতিক পরিকল্পনা, সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং মানবিক বিবেচনার মাধ্যমে অর্থ পরিচালনা করা মানুষের একটি বিশেষ দক্ষতা। এটি দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে।

১০. কৌতূহল, অভ্যাস গঠন ও সামাজিক দক্ষতা

কৌতূহল নতুন কিছু শেখার আগ্রহ তৈরি করে, ভালো অভ্যাস সাফল্যের ভিত্তি গড়ে তোলে এবং সামাজিক দক্ষতা সম্পর্ক উন্নত করে। এগুলি এমন মানবিক গুণাবলী যা মেশিন অনুকরণ করতে অক্ষম।

img

ফ্রিডম হাউসের প্রতিবেদন: দেশে বেড়েছে ইন্টারনেট ব্যবহারের স্বাধীনতা

প্রকাশিত :  ১২:০৬, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

মার্কিন সংস্থা ফ্রিডম হাউস জানিয়েছে, বিশ্বে অনলাইনের স্বাধীনতা কমে গেলেও বাংলাদেশে এর উন্নতি হয়েছে । আজ প্রকাশিত ‘ফ্রিডম অন দ্য নেট ২০২৫’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর মূল্যায়নে থাকা ৭২টি দেশের মধ্যে ইন্টারনেট স্বাধীনতায় সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে বাংলাদেশে।

এ গবেষণায় ২০২৪ সালের জুন থেকে ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে।

ফ্রিডম হাউস বলছে, ২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে হওয়া অভ্যুত্থানে একটি কর্তৃত্ববাদী সরকার ক্ষমতা হারায়। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ডিজিটাল ক্ষেত্রে কিছু ইতিবাচক সংস্কার আনে। এর ফলেই বাংলাদেশের ইন্টারনেট স্বাধীনতা সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১০০-এর মধ্যে ৪৫ হয়েছে। গত বছর এই স্কোর ছিল ৪০। এটি গত সাত বছরের সেরা অবস্থান।

তবে এত উন্নতির পরও বাংলাদেশ এখনো ‘আংশিক মুক্ত’ দেশ হিসেবে তালিকায় রয়ে গেছে—যে অবস্থানে ২০১৩ সাল থেকে রয়েছে।

ফ্রিডম হাউস তিনটি বড় বিষয় দেখে স্কোর নির্ধারণ করে—

(১) ইন্টারনেটে প্রবেশের বাধা,

(২) অনলাইনে প্রকাশিত বিষয়বস্তুর ওপর নিয়ন্ত্রণ,

(৩) ব্যবহারকারীর অধিকার লঙ্ঘন।

এই তিনটি বিভাগে মোট ২১টি সূচক ব্যবহার করে প্রতিটি দেশের অনলাইন স্বাধীনতার মাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা কিছু বড় পরিবর্তন হলো—২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মুহাম্মদ এমদাদ-উল-বারীকে বিটিআরসির চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়। তিনি ইন্টারনেট বন্ধ না করার নীতি গ্রহণ করেন এবং ইন্টারনেট প্রবেশাধিকারকে মানবাধিকার হিসেবে দেখার কথা বলেন।

২০২৫ সালের মে মাসে সরকার বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন (সিএসএ) বাতিল করে। এর বদলে সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ (সিএসও) জারি হয়।

এতে কিছু ভালো দিক যেমন অনলাইন হয়রানি ও যৌন নির্যাতনবিরোধী সুরক্ষা রয়েছে, তবে আগের মতোই কিছু উদ্বেগজনক বিষয়—যেমন অনলাইনে বক্তব্যের জন্য শাস্তি ও নজরদারি রয়ে গেছে।

এদিকে দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে। তবে ভারত ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে পেছনে রয়েছে। পাকিস্তান ২৭ পয়েন্ট পেয়ে ‘মুক্ত নয়’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। শ্রীলঙ্কা ৫৩ ও ভারত ৫১ পয়েন্ট পেয়ে দুটোই ‘আংশিক মুক্ত’ শ্রেণিতে রয়েছে।


বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এর আরও খবর