প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দুর্নীতির অভিযোগে ইউক্রেনের সব আঞ্চলিক সেনা নিয়োগ কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করেছিলেন । তবে তার এই সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে গ্রহণ করেননি দেশটির সেনাপ্রধান ভ্যালেরি জালুঝনি। এমনকি কোনো রাখঢাক ছাড়াই জেলেনস্কির এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছেন তিনি। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) ইন্টারফ্যাক্স ইউক্রেনের বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গত আগস্টে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে ইউক্রেনের সব অঞ্চলে সেনা নিয়োগের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বরখাস্তের ঘোষণা দেন জেলেনস্কি। এমনকি অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে তা রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল হতে পারে বলেও সতর্ক করেছিলেন তিনি।
সোমবার এক অনুষ্ঠানের অবসরে সাংবাদিকরা জেলেনস্কির এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে ভ্যালেরি জালুঝনি সেনা নিয়োগ প্রধানদের বরখাস্ত করায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, তারা পেশাদার ছিলেন। তারা জানত কীভাবে এই কাজ করতে হতো। অথচ তাদের সরিয়ে দেওয়া হলো।
এর আগে গত নভেম্বরে দ্য ইকোনমিস্টে প্রকাশিত এক নিবন্ধে ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রের বাস্তবতা নিয়ে খোলাখুলি মূল্যায়ন ব্যক্ত করেন জালুঝনি। তার মতামত যুদ্ধ জয় নিয়ে জেলেনস্কির আশ্বাসের সম্পূর্ণ বিপরীত।
এ ছাড়া ইউক্রেনের অন্যতম প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ইউক্রেনস্কা প্রাভদা সম্প্রতি বেশ কয়েকজন অজ্ঞাত কর্মকর্তার বরাত দিয়ে দুই নেতার মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিরোধের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসে।
প্রকাশিত :
১৬:১০, ০৬ জুলাই ২০২৫ সর্বশেষ আপডেট: ১৭:৫৩, ০৬ জুলাই ২০২৫
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেয়ার অভিযোগে পৃথক ছয় মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১শ’ জনকে আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের সই করা এই গেজেট বিজিপ্রেস (বাংলাদেশ সরকারি মুদ্রণালয়) গত বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) প্রকাশ করে।
গেজেটে উল্লেখ করা হয়েছে, তফসিল বর্ণিত আসামিদেরকে জানানো যাচ্ছে যে, যেহেতু, তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রহিয়াছে। যেহেতু এই কোর্ট বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে যে, তারা গ্রেফতার ও বিচারে সোপর্দকরণ এড়াইবার জন্য আত্মগোপন করিয়াছেন এবং তাহাদের আশু গ্রেপ্তারের সম্ভাবনা নাই।
সেহেতু ১৯৫৮ সনের ক্রিমিনাল 'ল' এমেন্ডমেন্ট এ্যাক্ট ৬(১৩) ধারা বিধান অনুসারে তফসিল বর্ণিত মামলায় তাহাদেরকে আগামী ধার্য তারিখের মধ্যে এই কোর্টে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হইয়াছে। অন্যথায় আপনাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার কার্য সম্পন্ন করা হবে।
এর আগে ১ জুলাই বিচারক গেজেট প্রকাশের আদেশ দেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব। মামলাগুলোর পরবর্তী শুনানি ২০ জুলাই।
বিষয়টি বাসস’কে নিশ্চিত করেছেন দুদক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম।
তিনি বলেছেন, প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির ছয়টি মামলায় গেজেট প্রকাশের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিজি প্রেস থেকে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। আগামী ২০ জুলাই মামলা গুলোর তারিখ ধার্য হয়েছে। এ তারিখের মধ্যে আসামিরা আদালতে হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে।
প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, টিউলিপ সিদ্দিক, পুতুল ও আজমিনা সিদ্দিকসহ মোট ১০০ জনকে আসামি করে ছয়টি মামলা দায়ের করা হয় ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারির মধ্যে।
মামলাগুলো দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া এবং এস এম রাশেদুল হাসান। তদন্ত শেষে ১০ মার্চ চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
১৪ জানুয়ারি শেখ হাসিনাসহ ৮ জনকে আসামি করেন উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। তদন্তে নতুন ৪ জন যুক্ত হয়ে চার্জশিটে আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ১২। তদন্ত করেন সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।
একইদিন সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে ২ জন যুক্ত হয়ে চার্জশিটে আসামি হন ১৭ জন।
১৩ জানুয়ারি উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন শেখ রেহানাকে প্রধান আসামি করে শেখ হাসিনা ও টিউলিপসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্ত শেষে আরও দুইজন সহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন আফনান জান্নাত কেয়া।
আজমিনা সিদ্দিককে প্রধান আসামি করে ১৩ জানুয়ারি সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া শেখ হাসিনা ও টিউলিপসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে আরও দুইজন যুক্ত হয়ে চার্জশিটে আসামি হন ১৮ জন।
একইদিন সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্ত শেষে আরও দুইজন যুক্ত হয়ে চার্জশিট দেওয়া হয় ১৮ জনের নামে।
শেষে ১২ জানুয়ারি আফনান জান্নাত কেয়া বাদী হয়ে শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্ত শেষে আরও দুইজন যুক্ত হয়ে চার্জশিট দেন মোট ১৮ জনের নামে। এই মামলায় সাক্ষী রাখা হয়েছে ১৬ জনকে।