img

ঘুম থেকে উঠতে কষ্ট হয় সকালে? মেনে চলুন এই ৬ টিপস

প্রকাশিত :  ১৩:০৭, ৩০ আগষ্ট ২০২৫

ঘুম থেকে উঠতে কষ্ট হয় সকালে? মেনে চলুন এই ৬ টিপস

ব্যস্ত জীবনে অনেকেই রাত জেগে কাজ করেন। কেউ আবার সামাজিক মাধ্যমে ঢু মারলে কোন দিক দিয়ে সময় চলে যায় টের পান না। রাতভর সিরিজ দেখতে দেখতে গভীর হয়ে যায় রাত। ফলে সকালে ঘুম থেকে ওঠা যেন একপ্রকার যুদ্ধের মতো মনে হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পর্যাপ্ত ও গুণগত দিক থেকে ভালো ঘুম কর্মক্ষমতা বাড়ায়। তেমনই পর্যাপ্ত ঘুম মস্তিষ্ক ভালো রাখা এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্যও অপরিহার্য। দেরি করে ঘুমিয়ে দেরি করে উঠলে ঘুম ঠিকমতো হয় না।

সকালে ঘুম থেকে উঠতেই অনেকটা সময় কেটে যায়। সময়ও নষ্ট হয়, অথচ কাজের কাজ হয় না। তাই প্রতিদিন সকালে সহজে ওঠার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। কখন ঘুমাবেন, কখন উঠবেন, আগেই ঠিক করুন।

নির্দিষ্ট সময় 

আমাদের শরীরকে সময় মতো সবকিছু করতে উদ্দীপিত করে সার্কাডিয়ান চক্র। এই চক্র কিছুটা জৈব ঘড়ির মতো আমাদের শরীরের বিভিন্ন জৈব প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমানো ও জাগার অভ্যাস শরীরের এই চক্র ঠিক রাখে। তাই সময় ধরে চলুন, উইকেন্ডেও সেই রুটিন বজায় রাখুন।

শরীরচর্চা

ভাবছেন, রাতের বেলা আবার কীসের শরীরচর্চা? এটি মূলত আপনার সকালে ঘুম থেকে ওঠার ক্ষেত্রে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। তাই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আধা ঘণ্টা আগে মিনিট পনেরো শরীরচর্চা করুন। এতে ঘুম আসবে সহজে। আর ঘুম গভীর হলে সকালে ওঠার ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না। তাই এদিকে মনোযোগ দিন। রাতের খাবার খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করবেন। এতেও ঘুম ভালো হবে। সকালে উঠতে পারবেন সহজেই।

ঘুমানোর আগে মোবাইল দূরে রাখুন

ঘুমাতে যাওয়ার আগে অনেকে শুয়ে শুয়ে ফোন ব্যবহার করেন। কিন্তু ফোন বা ল্যাপটপ থেকে যে নীল আলো নির্গত হয়, তা মেলাটোনিন হরমোন কমিয়ে দেয়। এই হরমোন ঘুমের জন্য অপরিহার্য। ঘুমানোর অন্তত ৩০ মিনিট আগে সব ধরনের ডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহার করা বন্ধ করুন।

সকালের আলো গ্রহণ

ঘুম থেকে ওঠার পর প্রাকৃতিক আলো শরীরে পড়লে কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। অন্য সময় এই হরমোন স্ট্রেস বাড়ালেও সকালে এই হরমোনের সামান্য বৃদ্ধি শরীরকে জাগিয়ে তোলে। তাই সকালে উঠেই জানালার পর্দা খুলে দিন বা বাইরে কয়েক মিনিট দাঁড়ান।

পর্যাপ্ত ঘুম

একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য প্রতিদিন সাত-আট ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন হয়। তাই হিসাব করে দেখুন এতটা সময় ঘুমানোর জন্য আপনাকে কখন বিছানায় যেতে হবে। সকালে ঘুম থেকে যখন উঠবেন তার থেকে অন্তত আট ঘণ্টা আগে ঘুমাতে যান। এতে ঘুম পর্যাপ্ত হবে এবং আপনি সঠিক সময়ে ঘুম থেকে উঠতেও পারবেন। তখন আপনার প্রতিদিন সমস্যায় পড়তে হবে না।

রাতে চা কিংবা কফি নয়

অনেকেই আছেন যারা রাতের বেলায়ও এক কাপ চা কিংবা কফি পান করে থাকেন। এমনটা করা যাবে না। সন্ধ্যার পর আর কোনো চা কিংবা কফি পান করবেন না। এমনকি কোনো চকোলেটও খাবেন না। কারণ তাতে ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যে কারণে সকালে ঘুম থেকে উঠতে অসুবিধা হয়। তাই খাবারের দিকে খেয়াল রাখুন। সেইসঙ্গে রাতে ভারী বা অতিরিক্ত মসলাদার খাবার খাওয়া থেকেও বিরত থাকুন।

সতর্কবার্তা

অনেক সময় সকালে উঠতে অসুবিধার নেপথ্যে থাকতে পারে কিছু গভীর কারণ। যদি পর্যাপ্ত ঘুমের পরও সকালে অতিরিক্ত ক্লান্তি লাগে বা মাথা ভার লাগে, তবে সেক্ষেত্রে স্লিপ অ্যাপনিয়া বা অন্য কোনো গুরুতর নিদ্রাজনিত সমস্যা থাকতে পারে। সে জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সূত্র : স্লিপ ফাউন্ডেশন

img

সুন্দর ত্বকের সিক্রেট: বয়স অনুযায়ী হেলদি ও প্রাকৃতিক যত্ন

প্রকাশিত :  ১৩:৫৯, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ত্বক আমাদের সৌন্দর্য এবং স্বাস্থ্য প্রকাশের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সঠিকভাবে যত্ন নিলে ত্বক শুধু উজ্জ্বলই থাকে না, বরং দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্যও বজায় থাকে। আজকের এই ব্লগে আমরা জানব ডেইলি স্কিন কেয়ার রুটিন, প্রাকৃতিক উপায়, হেলদি স্কিন কেয়ার এবং বয়স অনুযায়ী ত্বকের যত্নের উপায়। এটি আপনাকে সঠিকভাবে ত্বক পরিচর্যা করার জন্য সম্পূর্ণ গাইড হিসেবে কাজ করবে।

ডেইলি স্কিন কেয়ার রুটিন

সকাল ও রাতের রুটিন আলাদা হওয়ায় ত্বক পুরোপুরি পরিচর্যা পায়।

সকাল: হালকা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করা → ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার → সানস্ক্রিন ব্যবহার করে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করা

রাত: ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধোয়া → নাইট ক্রিম মাখা।

সিরাম ব্যবহার

নাইট ক্রিম দিয়ে ত্বককে গভীরভাবে হাইড্রেট করা

সপ্তাহে ১-২ বার:

এক্সফোলিয়েশন বা মাস্ক ব্যবহার করে মৃত কোষ দূর করা।

প্রাকৃতিক উপাদান যেমন হলুদ, শসার রস বা আলোভেরা জেল দিয়ে হোমমেড মাস্ক তৈরি করা যেতে পারে।

নিয়মিত এই রুটিন মেনে চললে ত্বক সতেজ ও উজ্জ্বল থাকবে।

প্রাকৃতিক উপায়ে স্কিন কেয়ার

প্রাকৃতিক উপায়গুলো শুধু নিরাপদ নয়, বরং ত্বকের জন্য কার্যকর।

আলোভেরা জেল: ত্বককে হাইড্রেট করে এবং প্রদাহ কমায়।

নারকেল তেল: ত্বক নরম ও মসৃণ রাখে।

শসার রস: ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং মুখের তাপমাত্রা কমায়।

হলুদ: অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যের কারণে ব্রণ ও দাগ কমাতে সাহায্য করে।

হোমমেড স্ক্রাব এবং মাস্ক ব্যবহার করে ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখা সম্ভব। যেমন, নারকেল তেল ও গুঁড়া ওটমিল দিয়ে তৈরি মাস্ক ত্বককে নরম ও উজ্জ্বল করে।

হেলদি স্কিন কেয়ার রুটিন

হেলদি স্কিন কেয়ার কেবল বাহ্যিক যত্নের উপর নির্ভর করে না, বরং অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্যও গুরুত্বপূর্ণ।

হেলদি রুটিনের কিছু মূল বিষয়:

পর্যাপ্ত পানি পান করা (দিনে ৮–১০ গ্লাস)

ভিটামিন ও পুষ্টিকর খাবার সমৃদ্ধ ডায়েট, যেমন ভিটামিন C, E, ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার

পর্যাপ্ত ঘুম নেওয়া

স্ট্রেস কমানো

নিয়মিত ব্যায়াম

এই অভ্যাসগুলো ত্বককে দীর্ঘস্থায়ীভাবে স্বাস্থ্যবান রাখে।

বিভিন্ন ধরনের ত্বকের জন্য স্কিন কেয়ার রুটিন

স্বাভাবিক ত্বক: সাধারণ ত্বক বেশিরভাগ স্কিন কেয়ার পণ্য সহ্য করতে পারে। স্বাভাবিক ত্বকের জন্য একটি মৌলিক ত্বকের যত্নের রুটিনের মধ্যে রয়েছে পরিষ্কার করা, ময়শ্চারাইজিং এবং সূর্য সুরক্ষা।

শুষ্ক ত্বক: শুষ্ক ত্বকের জন্য অতিরিক্ত হাইড্রেশন প্রয়োজন। শুষ্ক ত্বকের জন্য একটি ভাল ত্বকের যত্নের রুটিনের মধ্যে রয়েছে  মৃদু ক্লিনজার,  হাইড্রেটিং ময়েশ্চারাইজার এবং  হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা। আপনি একটি hyaluronic অ্যাসিড সিরাম বা একটি তেল-ভিত্তিক ক্লিনজার ব্যবহার করতে পারেন।

তৈলাক্ত ত্বক: তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এমন পণ্য প্রয়োজন যা তেল উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করতে এবং ব্রেকআউট প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য একটি ভাল ত্বকের যত্নের রুটিনের মধ্যে রয়েছে একটি নন-কমেডোজেনিক ক্লিনজার, একটি হালকা ময়েশ্চারাইজার এবং একটি টোনার ব্যবহার করা। ব্রেকআউটগুলি পরিষ্কার করতে আপনি স্যালিসিলিক অ্যাসিড বা বেনজয়াইল পারক্সাইড চিকিৎসা করতে পারেন।

কম্বিনেশন স্কিন: কম্বিনেশন স্কিনের একটি স্কিন কেয়ার রুটিন প্রয়োজন যা তৈলাক্ত এবং শুষ্ক উভয় ক্ষেত্রেই কাজ করে। আপনি তৈলাক্ত এবং শুষ্ক স্থানের জন্য একটি ভিন্ন ক্লিনজার ব্যবহার করতে পারেন, অথবা আপনি আপনার পুরো মুখের জন্য একটি মৃদু ক্লিনজার ব্যবহার করতে পারেন। আপনার ত্বকের ধরণের জন্য উপযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

সংবেদনশীল ত্বক: সংবেদনশীল ত্বকের জন্য মৃদু, সুগন্ধ মুক্ত পণ্য প্রয়োজন। সংবেদনশীল ত্বকের জন্য একটি ভাল ত্বকের যত্নের রুটিনের মধ্যে রয়েছে একটি মৃদু ক্লিনজার, একটি সুগন্ধিমুক্ত ময়েশ্চারাইজার এবং ৩০ বা তার বেশি এসপিএফ সহ একটি সানস্ক্রিন ব্যবহার করা। আপনি কঠোর রাসায়নিক বা সুগন্ধযুক্ত পণ্য এড়াতে চাইতে পারেন।

কোন বয়সে কোন স্কিন কেয়ার জরুরি

তরুণ বয়সে (২০-৩০): শুধু ক্লিনজার ও সানস্ক্রিন যথেষ্ট

মধ্যবয়সে (৩০-৪০): ফাইন লাইন ও বলিরেখা কমাতে সিরাম ও হালকা ক্রিম ব্যবহার

বয়স বাড়ার পরে (৪০+): ডিপ হাইড্রেশন ও স্পেশাল কেয়ার অপরিহার্য

সঠিক বয়স অনুযায়ী যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে ত্বককে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যবান এবং উজ্জ্বল রাখা সম্ভব।

ত্বকের যত্নে সঠিক রুটিন, প্রাকৃতিক পদ্ধতি ও বয়স অনুযায়ী যত্ন মেনে চললে ত্বক কেবল সুন্দর নয়, বরং দীর্ঘস্থায়ীভাবে স্বাস্থ্যবান থাকে। ডেইলি স্কিন কেয়ার রুটিন, প্রাকৃতিক হোমমেড পদ্ধতি, হেলদি অভ্যাস এবং বয়স অনুযায়ী যত্ন গ্রহণ করলে আপনি পাবেন সতেজ, উজ্জ্বল ও ঝলমলে ত্বক।