img

শীতে সুস্থ থাকতে করণীয়

প্রকাশিত :  ০৭:০২, ২৯ নভেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৭:১১, ২৯ নভেম্বর ২০২৫

শীতে সুস্থ থাকতে করণীয়

শীতের বাতাস শরীরের সব আর্দ্রতা শুষে নেয়। এতে ত্বক ফেটে যায় এবং চুলকানি হতে পারে। তাই ত্বকের বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। গোসলের পরপরই ভেজা শরীরে ময়েশ্চারাইজার বা লোশন লাগান। রাতে ঘুমানোর আগে হাতে-পায়ে পেট্রোলিয়াম জেলি বা গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বক ফাটা রোধ হবে।

আগেভাগে ঘুমানোর প্রস্তুতি : শীতকালে সন্ধ্যার পর ভারী কাজ কমিয়ে আনুন। রাতের খাবার তাড়াতাড়ি খেয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিন। লেপ বা কম্বলের নিচে শুয়ে বই পড়ুন। পর্যাপ্ত ঘুম শরীরকে সতেজ রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমানোর ও ওঠার অভ্যাস ধরে রাখা জরুরি।

শীতের দিনে সূর্যের আলো কম থাকে। মস্তিষ্কের ‘মেলাটোনিন’ হরমোন ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। আলো কমে গেলে শরীরে অলসতা ও বিষন্নতা বাড়তে পারে। একে ‘সিজনাল ডিপ্রেশন’ বলা হয়। তাই দিনের বেলা ঘরের জানালা-দরজা খুলে রাখুন। সুযোগ পেলে সকালে বা দুপুরে ছাদে অথবা বারান্দায় কিছুক্ষণ সময় কাটান। ঘরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখুন।

ভিটামিন-ডি ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ : রোদের অভাবে শরীরে ভিটামিন-ডি এর ঘাটতি দেখা দিতে পারে। হাড় ও পেশির সুস্থতার জন্য এটি খুব জরুরি। সকালের মিষ্টি রোদ গায়ে মাখলে শরীরে প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন-ডি তৈরি হয়। এ ছাড়া খাবারেও নজর দিতে হবে। ডিম, দুধ, সামুদ্রিক মাছ বা ছোট মাছ এবং কলিজা খাওয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যায়।

আরামদায়ক ও গরম খাবার খাওয়া : শীতের সময় শরীর গরম রাখে এমন খাবার বেছে নিন। এ সময় খিচুড়ি, ঘন স্যুপ, ডাল এবং বিভিন্ন ধরনের ভর্তা খেতে খুব আরামদায়ক। শীতের পিঠা বা পায়েস খাওয়ার ঐতিহ্য আমাদের দেশে বেশ পুরনো, যা শরীর ও মন ভালো করে দেয়। আদা দেওয়া চা, গরম দুধ বা তুলসী পাতার রস শরীরকে ভেতর থেকে উষ্ণ রাখে।

শরীর হাইড্রেটেড রাখা : শীতকালে শরীরে পানির অভাব হলে ত্বক আরও রুক্ষ হয়ে যায় এবং হজমে সমস্যা হয়। সারা দিন অল্প করে কুসুম গরম পানি পান করার অভ্যাস করুন। পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে শীতকালীন শাকসবজি ও ফলমূল খান। জলীয় অংশ আছে, এমন ফল খেলে পানির চাহিদা পূরণ হয়।

শরীরচর্চা বা ব্যায়ামের সময় বাড়ানো : শীতের সকালে সকালে কুয়াশা থাকলে ঘরের ভেতরেই ফ্রি-হ্যান্ড ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম করুন। স্ট্রেচিং বা আড়মোড়া ভাঙলে পেশির জড়তা কাটে। বিকেলে বা সন্ধ্যায় ব্যাডমিন্টন  খেললে শরীরকে ঘর্মাক্ত ও সচল রাখতে দারুণ কাজ করবে।

নিজেকে সময় দেওয়া ও মননশীলতা : বছরের এই সময়টিতে বই পড়ার অভ্যাস করা যেতে পারে।  মানসিক প্রশান্তির জন্য মেডিটেশন বা ধ্যানের চর্চা করুন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটান। এগুলো মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

স্তরে স্তরে পোশাক পরিধান : শীতে একটি ভারী মোটা কাপড় পরার চেয়ে কয়েকটি হালকা কাপড় স্তরে স্তরে পরা বেশি আরামদায়ক। একে ‘লেয়ারিং’ বলা হয়।  এতে বাতাস শরীরে ঢুকতে পারে না এবং শরীর বেশিক্ষণ গরম থাকে। গরম লাগলে ওপরের একটি স্তর খুলে ফেলা সহজ হয়। কান ও গলা মাফলার দিয়ে ঢেকে রাখা এবং পায়ে মোজা পরা ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে খুব জরুরি।

প্রকৃতির সান্নিধ্যে যাওয়া : শীত মানেই ঘরে গুটিসুটি মেরে বসে থাকা নয়।  প্রকৃতির খোলা বাতাস ও পরিবেশ মনকে চাঙা করে তোলে। দিনে অন্তত ১৫-২০ মিনিট দ্রুত হাঁটলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং মন ফুরফুরে থাকে।


img

শীতে চুলের জন্য কোন তেল ভালো?

প্রকাশিত :  ১০:১৫, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫

শীতকালটা ত্বক এবং চুলের জন্য বেশ ক্ষতিকর । শীতকালে চুলের বৃদ্ধি যেমন কমে যায় , তেমনি ভেঙেও যায়। তবে সঠিক তেল বেছে নেওয়ার মাধ্যমে, আপনি মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে , আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারেন। নিয়মিত তেল ব্যবহারে চুলের গোড়া মজবুতও হয়। 

এই শীতে চুলের পুষ্টি জোগাতে যেসব তেল ব্যবহার করতে পারেন। যেমন-

নারকেল তেল

নারকেল তেল চুলের গভীরে প্রবেশ করে এবং প্রোটিন ক্ষয় রোধ করে। শীতকালে চুল ভঙ্গুর এবং নিস্তেজ হয়ে গেলে এই তেল তা মেরামতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। ভালো ফল পেতে নারকেল তেল হালকা গরম করে মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন যাতে রক্ত ​​সঞ্চালন উন্নত হয় । নিয়মিত এভাবে তেল মালিশ করলে মাথার ত্বকের চুলকানি, শুষ্কতা দূর করে ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। 

ক্যাস্টর অয়েল

ক্যাস্টর অয়েল চুলের গোড়া শক্তিশালী করে। রেসিনোলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ এই তেল রক্ত ​​প্রবাহ উন্নত করে। নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে এই তেল ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।  

বাদাম তেল

বাদাম তেল ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম এবং স্বাস্থ্যকর চর্বিতে ভরপুর। ঘন ঘন এই তেল ব্যবহারের ফলে চুল নরম হয়, শীতের কারণে শুষ্কতাও হ্রাস পায়। এটি দ্রুত শোষিত হয়। প্রতিদিন বা রাতে চুলের যত্নের জন্য এই তেল ব্যবহার করতে পারেন। 

আমলকীর তেল

আমলকীর তেল ব্যবহারে চুলের গোড়া শক্তিশালী এবং চুল পড়া রোধ হয়। ফলের মতো, এই তেলটিও ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। নিয়মিত এই তেল ব্যবহারে  চুলের বৃদ্ধি ভালো হয়। 

তিলের তেল

তিলের তেল প্রাকৃতিকভাবে উষ্ণ, ঠান্ডা আবহাওয়ায় ম্যাসাজের জন্য আদর্শ । এটি মাথার ত্বকে পুষ্টি জোগায়, শুষ্কতা কমায় এবং চুলের গোড়া শক্ত করে। এই তেল মানসিক চাপ এবং উত্তেজনা দূর করতেও সাহায্য করে। নিয়মিত তিলের তেল ব্যবহারে শীতকালে চুল হয়ে ওঠে আরও উজ্জ্বল, স্বাস্থ্যকর। 

অলিভ অয়েল

শীতের দিনগুলিতে অলিভ অয়েল চুলে গভীরভাবে পুষ্টি জোগায় এবং চুলের কিউটিকল মসৃণ করতে সাহায্য করে। এটি চুল ভাঙা থেকে রোধ করে। শীতে চুল সুন্দর করতে নিয়মিত এই তেল মাথার ত্বকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন । 

সরিষার তেল

সরিষার তেল মাথার ত্বককে উষ্ণ করে এবং রক্ত ​​সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। এতে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান ফলিকলকে শক্তিশালী করে, চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে এবং চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে। ভালো ফল পেতে নারকেল তেল বা তিলের তেলের সাথে এই তেল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।