img

ভূমিকম্পের পর মাথা ঘোরালে কী করবেন বললেন বিশেষজ্ঞরা

প্রকাশিত :  ০৬:০৬, ২৪ নভেম্বর ২০২৫

ভূমিকম্পের পর মাথা ঘোরালে কী করবেন বললেন বিশেষজ্ঞরা

ভূমিকম্পের মতো আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুধু পৃথিবীকেই নাড়িয়ে দেয় না, আমাদের শরীর ও মনকেও ধাক্কা দিয়ে যায়। ভূমিকম্পের পর মাথা ঘোরা বেশ স্বাভাবিক শারীরিক প্রতিক্রিয়া। তবে শরীরের সংকেতগুলোকে হালকাভাবে না নেওয়াই ভালো। 

ফলে ভূমিকম্প থেমে যাওয়ার পরও অনেকের মাথা ঘুরে, শরীর দুলে ওঠে কিংবা চারপাশটা অস্বাভাবিক মনে হয়। যদি এমন হয়, তবে প্রয়োজনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে-কেন এমন হয়? চলুন জেনে নেওয়া যাক-

ভূমিকম্পের সময় আমাদের চোখ, কান ও শরীরের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণকারী অঙ্গগুলো একসঙ্গে অ্যালার্ট মোডে বা অতিরিক্ত সতর্কাবস্থায় চলে যায়। তাই কম্পন থেমে গেলেও মস্তিষ্ক কিছুক্ষণ সেই কম্পনকে স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখে। এতে দেহের ভারসাম্য-ব্যবস্থার বিভ্রান্তি হয়। 

এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব টোকিওর ২০২২ সালের একটি গবেষণায় দেখা যায়, শক্তিশালী ভূমিকম্পের সময় আমাদের ভেস্টিবুলার সিস্টেম, যা শরীরের ভারসাম্য ঠিক রাখে। হঠাৎ অতিরিক্ত সক্রিয় হয়ে যায়। তাই ভূমিকম্প থেমে যাওয়ার পরও এই সিস্টেম কিছুটা সময় দুলুনির সংকেত পাঠাতে থাকে, ফলে মাথা ঘুরে।

স্ট্যানফোর্ড সাইকোলজি ল্যাব বলছে, বিপদ বা আতঙ্কের মুহূর্তে করটিসল দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এর হরমোন বেশি হলে মাথা ঝিম ঝিম, মাথা ঘোরা, বমিভাব দেখা দিতে পারে। আর ভূমিকম্পের পর বাস্তবে কম্পন না থাকলেও, উদ্বেগের কারণে মাথা হালকা লাগা, হাঁটাহাঁটিতে অসুবিধা, মাথায় চাপ-এসব হতে পারে।

এদিকে নেচার হিউম্যান বিহেভিয়ার-এ প্রকাশিত ২০২৩ সালের এক গবেষণা বলছে, মানুষ যখন দীর্ঘ সময় কম্পনের ভেতর থাকে, মস্তিষ্ক কয়েক মিনিট ধরে সেই নড়াচড়াকে বাস্তব বলে ধরে নেয়। তাই কম্পন থেমে যাওয়ার পরও শরীর যেন হালকা দুলতে থাকে। ভূমিকম্পের পর মাথা ঘোরা আমাদের শরীরের এক স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। এটি সবসময় চিন্তার বিষয় নয়; যদি ১০-৩০ মিনিটের মধ্যে মাথা ঘোরা কমে যায়, পানি খেলেই শরীর স্বাভাবিক মনে হয় অথবা ঘুম বা বিশ্রামের পর ঠিক হয়ে যায়, তাহলে চিন্তার কিছু নেই। এটি সাধারণ ভেস্টিবুলার প্রতিক্রিয়া। 

আর যদি মাথা ঘোরা ২৪ ঘণ্টার বেশি থাকে, বারবার বমি হয়। শরীর অসাড় লাগে। হাঁটতে কষ্ট হয়। তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

ভূমিকম্পের পর যা করা উচিত

দাঁড়িয়ে থাকলে ভারসাম্য নষ্ট হয়ে পড়ে যেতে পারেন। তাই বসে চোখ বন্ধ করলে ভেস্টিবুলার সিস্টেম দ্রুত শান্ত হয়। এরপর ধীরে পানি পান করুন। আর দুশ্চিন্তা ও ডিহাইড্রেশন মাথা ঘোরানো বাড়ায়। তাই দুই-তিন চুমুক পানি খান। এরপর গভীর শ্বাস নিন। স্ট্রেস হরমোন কমাতে ৪ সেকেন্ডে শ্বাস নিন, ৬ সেকেন্ডে ছাড়ুন। এটি আপনার মস্তিষ্ককে শান্ত করতে খুবই কার্যকর। এবার দ্রুত কিছু খাবার খান। রক্তে গ্লুকোজ কমে গেলের মাথা ঘুরে। বিস্কুট বা ফল খেলে উপকার পাবেন।


img

শীতে চুলের জন্য কোন তেল ভালো?

প্রকাশিত :  ১০:১৫, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫

শীতকালটা ত্বক এবং চুলের জন্য বেশ ক্ষতিকর । শীতকালে চুলের বৃদ্ধি যেমন কমে যায় , তেমনি ভেঙেও যায়। তবে সঠিক তেল বেছে নেওয়ার মাধ্যমে, আপনি মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে , আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারেন। নিয়মিত তেল ব্যবহারে চুলের গোড়া মজবুতও হয়। 

এই শীতে চুলের পুষ্টি জোগাতে যেসব তেল ব্যবহার করতে পারেন। যেমন-

নারকেল তেল

নারকেল তেল চুলের গভীরে প্রবেশ করে এবং প্রোটিন ক্ষয় রোধ করে। শীতকালে চুল ভঙ্গুর এবং নিস্তেজ হয়ে গেলে এই তেল তা মেরামতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। ভালো ফল পেতে নারকেল তেল হালকা গরম করে মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন যাতে রক্ত ​​সঞ্চালন উন্নত হয় । নিয়মিত এভাবে তেল মালিশ করলে মাথার ত্বকের চুলকানি, শুষ্কতা দূর করে ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। 

ক্যাস্টর অয়েল

ক্যাস্টর অয়েল চুলের গোড়া শক্তিশালী করে। রেসিনোলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ এই তেল রক্ত ​​প্রবাহ উন্নত করে। নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে এই তেল ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।  

বাদাম তেল

বাদাম তেল ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম এবং স্বাস্থ্যকর চর্বিতে ভরপুর। ঘন ঘন এই তেল ব্যবহারের ফলে চুল নরম হয়, শীতের কারণে শুষ্কতাও হ্রাস পায়। এটি দ্রুত শোষিত হয়। প্রতিদিন বা রাতে চুলের যত্নের জন্য এই তেল ব্যবহার করতে পারেন। 

আমলকীর তেল

আমলকীর তেল ব্যবহারে চুলের গোড়া শক্তিশালী এবং চুল পড়া রোধ হয়। ফলের মতো, এই তেলটিও ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। নিয়মিত এই তেল ব্যবহারে  চুলের বৃদ্ধি ভালো হয়। 

তিলের তেল

তিলের তেল প্রাকৃতিকভাবে উষ্ণ, ঠান্ডা আবহাওয়ায় ম্যাসাজের জন্য আদর্শ । এটি মাথার ত্বকে পুষ্টি জোগায়, শুষ্কতা কমায় এবং চুলের গোড়া শক্ত করে। এই তেল মানসিক চাপ এবং উত্তেজনা দূর করতেও সাহায্য করে। নিয়মিত তিলের তেল ব্যবহারে শীতকালে চুল হয়ে ওঠে আরও উজ্জ্বল, স্বাস্থ্যকর। 

অলিভ অয়েল

শীতের দিনগুলিতে অলিভ অয়েল চুলে গভীরভাবে পুষ্টি জোগায় এবং চুলের কিউটিকল মসৃণ করতে সাহায্য করে। এটি চুল ভাঙা থেকে রোধ করে। শীতে চুল সুন্দর করতে নিয়মিত এই তেল মাথার ত্বকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন । 

সরিষার তেল

সরিষার তেল মাথার ত্বককে উষ্ণ করে এবং রক্ত ​​সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। এতে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান ফলিকলকে শক্তিশালী করে, চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে এবং চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে। ভালো ফল পেতে নারকেল তেল বা তিলের তেলের সাথে এই তেল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।