ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের ওপর থেকে মনোযোগ সরে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
সম্প্রতি ফ্রান্স-২ কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায় হয়তো ইউক্রেনের বিষয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। সাক্ষাৎকারে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আরও সমর্থন দাবি করেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, যদি কিয়েভকে দেওয়া সাহায্যের পরিমাণ কমে যায় তা হলে সময় রাশিয়ার পাশে চলে যাবে।
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বুধবার বলেছেন, হামাসের আকস্মিক হামলার পর ইসরাইলের জন্য সামরিক সহায়তা বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে এ কারণে ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানোতে কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না। সংসদীয় প্রতিরক্ষা কমিটির এক বৈঠকের পর পিস্টোরিয়াস বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ হওয়ার প্রেক্ষাপটে ইউক্রেনের জন্য সমর্থন যাতে ভেঙে না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
উল্লেখ্য, চলমান ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ নিয়ে মার্কিন রাজনীতিতে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিরোধী দল রিপাবলিকানরা ইসরাইলের কট্টর সমর্থক।
দেশটির বাইডেন প্রশাসন যাতে ইসরাইলকে সহায়তায় আরও ব্যবস্থা নেয় তার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে তারা। এখন পর্যন্ত হামাসের হামলায় ১২০০ জনেরও বেশি ইসরাইলি নিহত হয়েছে। এ ছাড়া প্রাণ হারিয়েছে ১৪ মার্কিন নাগরিকও।
অপহরণ করা হয়েছে ১৫০ জনকে, যার মধ্যে মার্কিনিরাও রয়েছে। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখন ইসরাইল ইস্যুতেই বেশি মনোযোগ দিতে শুরু করেছে।
প্রকাশিত :
১৬:১০, ০৬ জুলাই ২০২৫ সর্বশেষ আপডেট: ১৭:৫৩, ০৬ জুলাই ২০২৫
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেয়ার অভিযোগে পৃথক ছয় মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১শ’ জনকে আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের সই করা এই গেজেট বিজিপ্রেস (বাংলাদেশ সরকারি মুদ্রণালয়) গত বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) প্রকাশ করে।
গেজেটে উল্লেখ করা হয়েছে, তফসিল বর্ণিত আসামিদেরকে জানানো যাচ্ছে যে, যেহেতু, তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রহিয়াছে। যেহেতু এই কোর্ট বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে যে, তারা গ্রেফতার ও বিচারে সোপর্দকরণ এড়াইবার জন্য আত্মগোপন করিয়াছেন এবং তাহাদের আশু গ্রেপ্তারের সম্ভাবনা নাই।
সেহেতু ১৯৫৮ সনের ক্রিমিনাল 'ল' এমেন্ডমেন্ট এ্যাক্ট ৬(১৩) ধারা বিধান অনুসারে তফসিল বর্ণিত মামলায় তাহাদেরকে আগামী ধার্য তারিখের মধ্যে এই কোর্টে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হইয়াছে। অন্যথায় আপনাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার কার্য সম্পন্ন করা হবে।
এর আগে ১ জুলাই বিচারক গেজেট প্রকাশের আদেশ দেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব। মামলাগুলোর পরবর্তী শুনানি ২০ জুলাই।
বিষয়টি বাসস’কে নিশ্চিত করেছেন দুদক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম।
তিনি বলেছেন, প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির ছয়টি মামলায় গেজেট প্রকাশের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিজি প্রেস থেকে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। আগামী ২০ জুলাই মামলা গুলোর তারিখ ধার্য হয়েছে। এ তারিখের মধ্যে আসামিরা আদালতে হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে।
প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, টিউলিপ সিদ্দিক, পুতুল ও আজমিনা সিদ্দিকসহ মোট ১০০ জনকে আসামি করে ছয়টি মামলা দায়ের করা হয় ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারির মধ্যে।
মামলাগুলো দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া এবং এস এম রাশেদুল হাসান। তদন্ত শেষে ১০ মার্চ চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
১৪ জানুয়ারি শেখ হাসিনাসহ ৮ জনকে আসামি করেন উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। তদন্তে নতুন ৪ জন যুক্ত হয়ে চার্জশিটে আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ১২। তদন্ত করেন সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।
একইদিন সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে ২ জন যুক্ত হয়ে চার্জশিটে আসামি হন ১৭ জন।
১৩ জানুয়ারি উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন শেখ রেহানাকে প্রধান আসামি করে শেখ হাসিনা ও টিউলিপসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্ত শেষে আরও দুইজন সহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন আফনান জান্নাত কেয়া।
আজমিনা সিদ্দিককে প্রধান আসামি করে ১৩ জানুয়ারি সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া শেখ হাসিনা ও টিউলিপসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে আরও দুইজন যুক্ত হয়ে চার্জশিটে আসামি হন ১৮ জন।
একইদিন সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্ত শেষে আরও দুইজন যুক্ত হয়ে চার্জশিট দেওয়া হয় ১৮ জনের নামে।
শেষে ১২ জানুয়ারি আফনান জান্নাত কেয়া বাদী হয়ে শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্ত শেষে আরও দুইজন যুক্ত হয়ে চার্জশিট দেন মোট ১৮ জনের নামে। এই মামলায় সাক্ষী রাখা হয়েছে ১৬ জনকে।