img

প্রবাসীদের সহজভাবে ভোট প্রদানের সুযোগ তৈরী করে দিতে হবে -লন্ডনে হাইকমিশনের সাথে বৈঠকে প্রফেসর আব্দুল হান্নান

প্রকাশিত :  ২০:১৮, ০৩ অক্টোবর ২০২৫

প্রবাসীদের সহজভাবে ভোট প্রদানের সুযোগ তৈরী করে দিতে হবে -লন্ডনে হাইকমিশনের সাথে বৈঠকে প্রফেসর আব্দুল হান্নান

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট-২ (ওসমানী নগর-বিশ্বনাথ) সংসদীয় আসনের প্রার্থী প্রফেসর আব্দুল হান্নান বলেছেন, প্রবাসীদের শুধু রেমিটেন্স যোদ্ধা না বলে দেশের অর্থনীতির প্রধানতম চালিকা হিসেবে তাদের যথাযত সম্মান দিতে হবে।  বাংলাদেশী নাগরিক পৃথিবীর যে দেশেই বসবাস করেন না কেন, নাগরিক হিসেবে তাদের প্রতিটি অধিকার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডন যদি প্রবাসীদের দীর্ঘ  দিনের দাবি ভোটাধিকার বাস্তবে কার্যকর করতে পারে তবে সেটি হবে প্রবাসীদের জন্য সব চেয়ে বড় সম্মানজনক প্রাপ্তি।তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ সরকার প্রবাসীদের ভোটাধিকার বিষয়ে আন্তরিক এবং প্রবাসীরা মনে করছেন ভোটার তালিকায় সহজভাবে অন্তর্ভুক্তির মুখ্য ভূমিকা বাংলাদেশ হাইকমিশনই পালন করবে।

তিনি মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশে হাইকমিশন লন্ডনে মতবিনিময় কালে বক্তব্য রাখছিলেন। যুক্তরাজ্য সফররত প্রফেসর আব্দুল হান্নান মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডনে তার পূর্বনিধারিত মতবিনিময় অনুষ্ঠানের জন্য পৌঁছালে তাঁকে স্বাগত জানান হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন,যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার সাংবাদিক আকবর হোসেন, হাইকমিশনের কাউন্সিলর মৌমিতা জিনাত। 

প্রবাসীদের ভোটাধিকার, দেশে প্রবাসীদের নিরাপদ বিনিয়োগ এবং দেশে প্রবাসীদের সম্পদ দখলরোধে আইনি সহায়তা ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সামাজিক কর্তব্য বিষয়ে প্রফেসর আব্দুল হান্নান আলোচনা করেন। 

তিনি হাইকমিশনার আবিদা ইসলামকে প্রবাসীদের ভোটাধিকার বিষয়ে বলেন, আমি দেশে সিলেট-২ নির্বাচনী আসনের একজন প্রার্থী। প্রবাসে আমার আসনের হাজার হাজার নাগরিক বসবাস করেন।  অর্থনীতিতে তাদের অবদান কোনো ভাবেই খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।আমি নির্বাচনী মতবিনিময়ের জন্য যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন সিটিতে সফর করে সবার কাছ থেকেই এই দাবি পেয়েছি যে তারা সহজ উপায়ে তাদের ভোটাধিকার চান।তারা চান কোনো ধরণের জটিলতা ছাড়া ভোটার হয়ে তাদের আমানত ভোটটি প্রদান করতে। 

প্রফেসর হান্নান প্রবাসী বিনিয়োগ বিষয় উল্ল্যেখ করে বলেন, প্রবাসীদের বিনিয়োগের জন্য দেশ চমৎকার পরিবেশ রয়েছে। তিনি বিনিয়োগে আগ্রহীদের এ ক্ষেত্রে হাই কমিশন থেকে সহায়তা নেয়ার আহবান জানান, সেই সাথে তিনি নিজেও একজন ব্যবসায়ী এবং উদ্যোগতা হিসেবে তাঁর পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি বলেন,প্রবাসীরা দেশে বিনিয়োগ, চাঁদাবাজি কিংবা অন্যান্য কোনো কাজের ক্ষেত্রে  যেন আইনি জটিলতার মুখোমুখি না হন। তিনি বলেন, সামাজিক কোনো বিষয়ে তিনি এবং তাঁর দল সর্বাত্বক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তিনি বিমান টিকেটের অতিরিক্ত মূল্য  এবং ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অন্য এয়ারলাইন্স চালু করতে হাই কমিশনের সহায়তা কামনা করেন। 

হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম প্রফেসর আব্দুল হান্নানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার, দেশে বিনিয়োগ, বিমানের ভাড়া সহনশীল পর্যায়ে নেয়াসহ প্রবাসীদের সকল ন্যায়সঙ্গত দাবি বাস্তবায়নে তাঁর পক্ষ থেকে সকল ধরণের সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ও সিলেট মহানগর জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি সিরাজুল ইসলাম শাহীন, প্রবাসী ভোটাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ এর প্রেস সেক্রেটারি, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা আব্দুল মুনিম জাহেদী ক্যারল, ওসমানী নগর-বিশ্বনাথ নাগরিক ফোরাম ইউকের সভাপতি শাহ নেসার আলী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল আহাদ, ওসমানী নগর-বিশ্বনাথ নাগরিক ফোরাম ইউকের সদস্য সচিব  আব্দুর রহিম রঞ্জু, ফোরামের প্রধান সমন্বয়ক কাজী নজমুল আহমদ, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব আব্দুর রব, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব তালেব উদ্দিন রব, আব্দুর রউফ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ কামরুজ্জামান, আব্দুল বাসিত রফি প্রমুখ।

কমিউনিটি এর আরও খবর

img

গাজায় গণহত্যা বন্ধে নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমানের আবেগঘন ও জোরালো বক্তব্য

প্রকাশিত :  ১৪:২০, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৪:৪৫, ০৯ অক্টোবর ২০২৫

"আমার জীবদ্দশায় মানবজীবনের প্রতি এমন অবহেলা কখনো দেখিনি: মেয়র লুৎফুর

"আমার জীবদ্দশায় মানবজীবনের প্রতি এমন অবহেলা কখনো দেখিনি: মেয়র লুৎফুর

- "ফিলিস্তিনী জনগণ কি এমন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি চায়, যে রাষ্ট্র তাদেরকে হত্যার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করে?"

- প্রয়োজন প্রকৃত অর্থে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা⁠

- দুই বছরে প্রায় ৬৭,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত, যার মধ্যে অন্তত ১৮,৫০০ শিশু 

টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান বুধবার ফুল কাউন্সিল মিটিং-এ গাজায় চলমান গণহত্যা বন্ধে এক আবেগঘন ও শক্তিশালী বক্তব্য রাখেন।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তেও নারী ও শিশুরা অবিরামভাবে বোমাবর্ষণের শিকার হচ্ছে। তাদের যন্ত্রণার গভীরতা কোনো ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমার জীবদ্দশায় মানবজীবনের প্রতি এমন অবহেলা আমি কখনও দেখিনি।

মেয়র জানান, গত দুই বছরে প্রায় ৬৭,০০০ ফিলিস্তিনি, যার মধ্যে অন্তত ১৮,৫০০ শিশু, নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রানচেস্কা আলবানেসের মতে, প্রকৃত সংখ্যা সম্ভবত ৬৮০,০০০ পর্যন্ত হতে পারে।

তিনি বলেন, এটিকে গণহত্যা হিশেবে স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘের সিদ্ধান্তের পরও গাজায় যা ঘটছে তাকে গণহত্যা বলতে লেবার সরকার এখনো অস্বীকার করছে। বরং ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বজায় রেখেছে। এটি আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা। আমাদের দরকার বয়কট, নিষেধাজ্ঞা এবং প্রকৃত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা।

মেয়র আরও বলেন, মাত্র দুই সপ্তাহ আগে সরকার ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করেছে। এই স্বীকৃতি আসতে সময় লেগেছে দীর্ঘ ৭৮ বছর। কিন্তু ফিলিস্তিনী জনগণ কি এমন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি চায়, যে রাষ্ট্র তাদেরকে হত্যার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করে?

তিনি জোর দিয়ে বলেন,গাজার গণহত্যাকে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গণহত্যা’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। জরুরি প্রয়োজন এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হওয়া। আমাদের যা কিছু করার সামর্থ্য আছে, তা দিয়ে আমাদের এই গণহত্যা থামাতে হবে।

মেয়র লুৎফুর স্মরণ করিয়ে দেন, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল প্রথম সংস্থাগুলোর একটি, যারা কর্মজীবী মানুষের অবসর তহবিলকে মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত কোম্পানি থেকে মুক্ত রাখার পদক্ষেপ নিয়েছে।

ইহুদি ও মুসলিম কমিউনিটির প্রতি সংহতি: 

মেয়র একই সময়ে ম্যানচেস্টারের হিটন পার্ক সিনাগগে সংঘটিত ইহুদি-বিরোধী হামলা এবং ইস্ট সাসেক্সের একটি মসজিদে অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে তীব্র নিন্দা জানান।

তিনি বলেন, ইহুদিদের সর্বাপেক্ষা পবিত্র দিন ইয়োম কিপুরে এই হামলা গভীরভাবে নিন্দনীয়। একইভাবে ইসলামবিদ্বেষমূলক ঘৃণাজনিত অপরাধও আমাদের সমাজে কোনো স্থান পেতে পারে না। 

তিনি নিহতদের পরিবার এবং যুক্তরাজ্যের ইহুদি ও মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

ঐক্যের বার্তা: বিভাজনের মুখেও ঐক্যবদ্ধ টাওয়ার হ্যামলেটস: 

মেয়র বলেন, টাওয়ার হ্যামলেটস যুক্তরাজ্যের অন্যতম বৈচিত্র্যময় বারা, কিন্তু একই সঙ্গে অন্যতম ঐক্যবদ্ধও। এখানে ৯০% মানুষ বলেন, ভিন্ন পটভূমির মানুষদের সঙ্গে তারা ভালোভাবে মিশে চলেন। 

সম্প্রতি কাউন্সিলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত টাউন হল ওপেন ডে ও ব্রিক লেন কারি ফেস্টিভ্যালে প্রায় ২২,৫০০ মানুষ একত্রিত হয়েছেন — যা সম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন মেয়র।

বাসিন্দাদের জন্য বিনিয়োগ, কাউন্সিলের অঙ্গীকার: 

মেয়র তার কিছু উন্নয়ন কাজের কথাও তুলে ধরেন। বলেন, ২০২২ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই আমার লক্ষ্য একটাই — আমাদের বাসিন্দাদের জন‍্য বিনিয়োগ করা। 

তিনি উল্লেখ করেন, কাউন্সিল ইতিমধ্যে সার্বজনীন বিনামূল্যের স্কুল খাবার, বিনামূল্যে ইউনিফর্ম অনুদান, বিনামূল্যে হোম কেয়ার, সাশ্রয়ী হাউজিং, শীতকালীন জ্বালানি ভাতা, বিনামূল্যে সাঁতারসহ নানা উদ্ভাবনী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে।

কমিউনিটি এর আরও খবর