img

লন্ডনে অনুষ্ঠিত হলো বিসিএ শেফ কুক-অফ কম্পিটিশন ২০২৫: অংশ নিলেন যুক্তরাজ্যের ৫০ জন নামকরা শেফ

প্রকাশিত :  ১১:১৫, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১১:২৬, ০৯ অক্টোবর ২০২৫

লন্ডনে অনুষ্ঠিত হলো বিসিএ শেফ কুক-অফ কম্পিটিশন ২০২৫: অংশ নিলেন যুক্তরাজ্যের ৫০ জন নামকরা শেফ

১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি কারি ইন্ডাস্ট্রির বৃহত্তম সংগঠন বাংলাদেশ ক্যাটারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএ) এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো বহুল প্রতীক্ষিত ১৮তম “বিসিএ শেফ কুক-অফ কম্পিটিশন ২০২৫”। সংগঠনের শেফ অব দ্য ইয়ার কমিটির প্রধান সামছুল আলম খান শাহীন ও টিম মেম্বারদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতা পরিণত হয় বাংলাদেশি রেস্টুরেন্ট শিল্পের এক প্রাণবন্ত উৎসবে।

গত মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত লন্ডনের হ্যামারস্মিথ অ্যান্ড ফুলহাম কলেজে জমজমাট পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিযোগিতাটি। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর লন্ডন, বার্মিংহাম, ম্যানচেস্টার, লেস্টার, কার্ডিফসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে ৫০ জন খ্যাতনামা রেস্টুরেন্ট ও টেকওয়ের শেফ এতে অংশ নেন।

বিচারকদের সামনে মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে নিজ নিজ কুকিং দক্ষতা, সৃজনশীলতা ও প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে মন জয় করার প্রতিযোগিতা চলে প্রাণবন্ত পরিবেশে। এবারের আসরে নারী শেফ ও তরুণ শেফদের অংশগ্রহণ বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করে।অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন শেফ অব দ্য ইয়ার কমিটির প্রধান শামসুল আলম খান শাহীন এবং বিসিএ মেম্বারশিপ সেক্রেটারি ইয়ামিন দিদার। প্রতিযোগিতা চলাকালীন এবং সমাপনী পর্বে বক্তব্য রাখেন বিসিএ প্রেসিডেন্ট ওলি খান এমবিই, সেক্রেটারি জেনারেল মিঠু চৌধুরী, এওয়ার্ড কমিটির কনভেনার আতিক রহমান বি’ ই’এম, চিফ ট্রেজারার টিপু রহমান, প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারি নাজ ইসলাম, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জামাল উদ্দিন মকদ্দস, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এম এ মুনিম (ওবিই) এবং মোঃ কামাল ইয়াকুবসহ বিভিন্ন রিজিওনের নেতৃবৃন্দ ও ক্যাটারার্সরা।

বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ব্রিটেনের অভিজ্ঞ শেফ, রন্ধনশিল্প বিশেষজ্ঞ এবং বিসিএ-সম্পৃক্ত প্রবীণ ক্যাটারার্স। তাঁদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে বাছাই করা হবে এ বছরের সেরা দশ শেফ, যারা চূড়ান্ত পর্বে প্রতিযোগিতা করবেন। আগামী ৯ নভেম্বর লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার পার্ক প্লাজা হোটেলে অনুষ্ঠিত হবে বিসিএ এওয়ার্ড ও গালা ডিনার ২০২৫। সেখানে ব্রিটেনের রাজনীতিক, সংসদ সদস্য, স্থানীয় কাউন্সিলর ও বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে মর্যাদাপূর্ণ “শেফ অব দ্য ইয়ার” পুরস্কার।

অনুষ্টানে বক্তারা বলেন,বাংলাদেশি কারি ইন্ডাস্ট্রির এই প্রতিযোগিতা শুধু রান্নার মানোন্নয়ন নয়, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরার এক অনন্য মাধ্যম।রন্ধনশিল্পের উৎকর্ষ, সৃজনশীলতা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে এই প্রতিযোগিতা এখন যুক্তরাজ্যে এক গৌরবময় প্রবাসী উৎসব হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।

কমিউনিটি এর আরও খবর

img

গাজায় গণহত্যা বন্ধে নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমানের আবেগঘন ও জোরালো বক্তব্য

প্রকাশিত :  ১৪:২০, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৪:৪৫, ০৯ অক্টোবর ২০২৫

"আমার জীবদ্দশায় মানবজীবনের প্রতি এমন অবহেলা কখনো দেখিনি: মেয়র লুৎফুর

"আমার জীবদ্দশায় মানবজীবনের প্রতি এমন অবহেলা কখনো দেখিনি: মেয়র লুৎফুর

- "ফিলিস্তিনী জনগণ কি এমন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি চায়, যে রাষ্ট্র তাদেরকে হত্যার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করে?"

- প্রয়োজন প্রকৃত অর্থে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা⁠

- দুই বছরে প্রায় ৬৭,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত, যার মধ্যে অন্তত ১৮,৫০০ শিশু 

টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান বুধবার ফুল কাউন্সিল মিটিং-এ গাজায় চলমান গণহত্যা বন্ধে এক আবেগঘন ও শক্তিশালী বক্তব্য রাখেন।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তেও নারী ও শিশুরা অবিরামভাবে বোমাবর্ষণের শিকার হচ্ছে। তাদের যন্ত্রণার গভীরতা কোনো ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমার জীবদ্দশায় মানবজীবনের প্রতি এমন অবহেলা আমি কখনও দেখিনি।

মেয়র জানান, গত দুই বছরে প্রায় ৬৭,০০০ ফিলিস্তিনি, যার মধ্যে অন্তত ১৮,৫০০ শিশু, নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রানচেস্কা আলবানেসের মতে, প্রকৃত সংখ্যা সম্ভবত ৬৮০,০০০ পর্যন্ত হতে পারে।

তিনি বলেন, এটিকে গণহত্যা হিশেবে স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘের সিদ্ধান্তের পরও গাজায় যা ঘটছে তাকে গণহত্যা বলতে লেবার সরকার এখনো অস্বীকার করছে। বরং ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বজায় রেখেছে। এটি আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা। আমাদের দরকার বয়কট, নিষেধাজ্ঞা এবং প্রকৃত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা।

মেয়র আরও বলেন, মাত্র দুই সপ্তাহ আগে সরকার ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করেছে। এই স্বীকৃতি আসতে সময় লেগেছে দীর্ঘ ৭৮ বছর। কিন্তু ফিলিস্তিনী জনগণ কি এমন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি চায়, যে রাষ্ট্র তাদেরকে হত্যার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করে?

তিনি জোর দিয়ে বলেন,গাজার গণহত্যাকে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গণহত্যা’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। জরুরি প্রয়োজন এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হওয়া। আমাদের যা কিছু করার সামর্থ্য আছে, তা দিয়ে আমাদের এই গণহত্যা থামাতে হবে।

মেয়র লুৎফুর স্মরণ করিয়ে দেন, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল প্রথম সংস্থাগুলোর একটি, যারা কর্মজীবী মানুষের অবসর তহবিলকে মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত কোম্পানি থেকে মুক্ত রাখার পদক্ষেপ নিয়েছে।

ইহুদি ও মুসলিম কমিউনিটির প্রতি সংহতি: 

মেয়র একই সময়ে ম্যানচেস্টারের হিটন পার্ক সিনাগগে সংঘটিত ইহুদি-বিরোধী হামলা এবং ইস্ট সাসেক্সের একটি মসজিদে অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে তীব্র নিন্দা জানান।

তিনি বলেন, ইহুদিদের সর্বাপেক্ষা পবিত্র দিন ইয়োম কিপুরে এই হামলা গভীরভাবে নিন্দনীয়। একইভাবে ইসলামবিদ্বেষমূলক ঘৃণাজনিত অপরাধও আমাদের সমাজে কোনো স্থান পেতে পারে না। 

তিনি নিহতদের পরিবার এবং যুক্তরাজ্যের ইহুদি ও মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

ঐক্যের বার্তা: বিভাজনের মুখেও ঐক্যবদ্ধ টাওয়ার হ্যামলেটস: 

মেয়র বলেন, টাওয়ার হ্যামলেটস যুক্তরাজ্যের অন্যতম বৈচিত্র্যময় বারা, কিন্তু একই সঙ্গে অন্যতম ঐক্যবদ্ধও। এখানে ৯০% মানুষ বলেন, ভিন্ন পটভূমির মানুষদের সঙ্গে তারা ভালোভাবে মিশে চলেন। 

সম্প্রতি কাউন্সিলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত টাউন হল ওপেন ডে ও ব্রিক লেন কারি ফেস্টিভ্যালে প্রায় ২২,৫০০ মানুষ একত্রিত হয়েছেন — যা সম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন মেয়র।

বাসিন্দাদের জন্য বিনিয়োগ, কাউন্সিলের অঙ্গীকার: 

মেয়র তার কিছু উন্নয়ন কাজের কথাও তুলে ধরেন। বলেন, ২০২২ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই আমার লক্ষ্য একটাই — আমাদের বাসিন্দাদের জন‍্য বিনিয়োগ করা। 

তিনি উল্লেখ করেন, কাউন্সিল ইতিমধ্যে সার্বজনীন বিনামূল্যের স্কুল খাবার, বিনামূল্যে ইউনিফর্ম অনুদান, বিনামূল্যে হোম কেয়ার, সাশ্রয়ী হাউজিং, শীতকালীন জ্বালানি ভাতা, বিনামূল্যে সাঁতারসহ নানা উদ্ভাবনী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে।

কমিউনিটি এর আরও খবর