img

লন্ডনে 'ই-ইমামস' ওয়েবসাইটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা : ইসলামি সেক্টরের চাকরি প্রার্থীদের জন্য সুখবর

প্রকাশিত :  ১০:১২, ০৯ অক্টোবর ২০২৫

লন্ডনে 'ই-ইমামস' ওয়েবসাইটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা : ইসলামি সেক্টরের চাকরি প্রার্থীদের জন্য সুখবর

লন্ডন, ৮ অক্টোবর ২০২৫ :  যুক্তরাজ্যে মসজিদ, মাদ্রাসাসহ সব ধরনের ইসলামিক প্রতিষ্ঠান ও ইমাম সমাজ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য সহজলভ্য করতে প্রথমবারের মতো ই-ইমামস.কম (eimams.com) নামে একটি ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হয়েছে । এই ওয়েবসাইটে মুসলিম সেক্টরের চাকরির খবরা-খবর থাকবে । বিশ্বের যেকোনো প্রান্থ থেকে ওয়েবসাইট ভিজিট করে চাকরির আবেদন করাসহ যেকোনো তথ্য সংগ্রহ করা যাবে।

৪ অক্টোবর শনিবার দুপুরে লন্ডন মুসলিম সেন্টারে ব্রিটেনের শীর্ষ স্থানীয় উলামা, কমিউনিটির বিশিষ্টজন ও প্রিন্ট এন্ড ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে এই ওয়েবসাইটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।  

ওয়েবসাইটের প্রবর্তক মাওলানা শাকির আহমেদ প্রজেক্টারের মাধ্যমে সুবিধাগুলো তুলে ধরেন । এসময় দেখা যায়, ২ শতাধিক জব ভেকেন্সি ওয়েবসাইটে ডিসপ্লে হচ্ছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন শায়খ আবু সাঈদ চোধুরী । বিশেষ অতিথি ছিলেন কভেন্ট্রি শাহজালাল জামে মসজিদের প্রাক্তণ ইমাম হাফিজ আমির হোসাইন, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ জুবায়ের, জেনারেল সেক্রেটারি তাইসির মাহমুদ ও চ্যানেল এস-এর ইস্ট মিডল্যান্ডস করেসপন্ডেন্ট সাংবাদিক নোমান রাজা । যুক্তরাজ্যর বিভিন্ন শহর থেকে বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরামগণ সহ শতাধিক ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন।

ওয়েবসাইটের প্রবর্তক মাওলানা শাকির আহমেদ আগত অতিথিদের ধন‍্যবাদ জানিয়ে তাদের সামনে এটির প্রয়োজনীয়তা এবং এর সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে ২১ বিলিয়ন পাউণ্ডের বেশি আর্থিক যোগান আসে মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ।  এই সম্প্রদায়ের নিজস্ব বিশেষায়িত কাজের পাশাপাশি মুলধারায় শুধুমাত্র মুসলিমদের জন‍্য যথেষ্ট কাজের সুযোগ রয়েছে। এই সব কাজের জন্য যোগ্য ব্যক্তিরাও রয়েছেন । শুধুমাত্র চাকরি দাতা এবং চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে যথোপযুক্ত যোগাযোগের মাধ‍্যমের অভাবে অনেকেই তার যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাচ্ছেন না। ই-ইমামস.কম মুলত উভয়ের মধ্যে সহজ যোগাযোগ স্থাপনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে ।

এই ওয়েবসাইট ভিজিট করে চাকরি দাতা এবং চাকরি প্রার্থীরা উপকৃত হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন অতিথিরা।

মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফিজ আমির হোসাইন ।


কমিউনিটি এর আরও খবর

img

গাজায় গণহত্যা বন্ধে নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমানের আবেগঘন ও জোরালো বক্তব্য

প্রকাশিত :  ১৪:২০, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৪:৪৫, ০৯ অক্টোবর ২০২৫

"আমার জীবদ্দশায় মানবজীবনের প্রতি এমন অবহেলা কখনো দেখিনি: মেয়র লুৎফুর

"আমার জীবদ্দশায় মানবজীবনের প্রতি এমন অবহেলা কখনো দেখিনি: মেয়র লুৎফুর

- "ফিলিস্তিনী জনগণ কি এমন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি চায়, যে রাষ্ট্র তাদেরকে হত্যার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করে?"

- প্রয়োজন প্রকৃত অর্থে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা⁠

- দুই বছরে প্রায় ৬৭,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত, যার মধ্যে অন্তত ১৮,৫০০ শিশু 

টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান বুধবার ফুল কাউন্সিল মিটিং-এ গাজায় চলমান গণহত্যা বন্ধে এক আবেগঘন ও শক্তিশালী বক্তব্য রাখেন।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তেও নারী ও শিশুরা অবিরামভাবে বোমাবর্ষণের শিকার হচ্ছে। তাদের যন্ত্রণার গভীরতা কোনো ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমার জীবদ্দশায় মানবজীবনের প্রতি এমন অবহেলা আমি কখনও দেখিনি।

মেয়র জানান, গত দুই বছরে প্রায় ৬৭,০০০ ফিলিস্তিনি, যার মধ্যে অন্তত ১৮,৫০০ শিশু, নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রানচেস্কা আলবানেসের মতে, প্রকৃত সংখ্যা সম্ভবত ৬৮০,০০০ পর্যন্ত হতে পারে।

তিনি বলেন, এটিকে গণহত্যা হিশেবে স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘের সিদ্ধান্তের পরও গাজায় যা ঘটছে তাকে গণহত্যা বলতে লেবার সরকার এখনো অস্বীকার করছে। বরং ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বজায় রেখেছে। এটি আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা। আমাদের দরকার বয়কট, নিষেধাজ্ঞা এবং প্রকৃত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা।

মেয়র আরও বলেন, মাত্র দুই সপ্তাহ আগে সরকার ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করেছে। এই স্বীকৃতি আসতে সময় লেগেছে দীর্ঘ ৭৮ বছর। কিন্তু ফিলিস্তিনী জনগণ কি এমন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি চায়, যে রাষ্ট্র তাদেরকে হত্যার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করে?

তিনি জোর দিয়ে বলেন,গাজার গণহত্যাকে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গণহত্যা’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। জরুরি প্রয়োজন এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হওয়া। আমাদের যা কিছু করার সামর্থ্য আছে, তা দিয়ে আমাদের এই গণহত্যা থামাতে হবে।

মেয়র লুৎফুর স্মরণ করিয়ে দেন, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল প্রথম সংস্থাগুলোর একটি, যারা কর্মজীবী মানুষের অবসর তহবিলকে মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত কোম্পানি থেকে মুক্ত রাখার পদক্ষেপ নিয়েছে।

ইহুদি ও মুসলিম কমিউনিটির প্রতি সংহতি: 

মেয়র একই সময়ে ম্যানচেস্টারের হিটন পার্ক সিনাগগে সংঘটিত ইহুদি-বিরোধী হামলা এবং ইস্ট সাসেক্সের একটি মসজিদে অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে তীব্র নিন্দা জানান।

তিনি বলেন, ইহুদিদের সর্বাপেক্ষা পবিত্র দিন ইয়োম কিপুরে এই হামলা গভীরভাবে নিন্দনীয়। একইভাবে ইসলামবিদ্বেষমূলক ঘৃণাজনিত অপরাধও আমাদের সমাজে কোনো স্থান পেতে পারে না। 

তিনি নিহতদের পরিবার এবং যুক্তরাজ্যের ইহুদি ও মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

ঐক্যের বার্তা: বিভাজনের মুখেও ঐক্যবদ্ধ টাওয়ার হ্যামলেটস: 

মেয়র বলেন, টাওয়ার হ্যামলেটস যুক্তরাজ্যের অন্যতম বৈচিত্র্যময় বারা, কিন্তু একই সঙ্গে অন্যতম ঐক্যবদ্ধও। এখানে ৯০% মানুষ বলেন, ভিন্ন পটভূমির মানুষদের সঙ্গে তারা ভালোভাবে মিশে চলেন। 

সম্প্রতি কাউন্সিলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত টাউন হল ওপেন ডে ও ব্রিক লেন কারি ফেস্টিভ্যালে প্রায় ২২,৫০০ মানুষ একত্রিত হয়েছেন — যা সম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন মেয়র।

বাসিন্দাদের জন্য বিনিয়োগ, কাউন্সিলের অঙ্গীকার: 

মেয়র তার কিছু উন্নয়ন কাজের কথাও তুলে ধরেন। বলেন, ২০২২ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই আমার লক্ষ্য একটাই — আমাদের বাসিন্দাদের জন‍্য বিনিয়োগ করা। 

তিনি উল্লেখ করেন, কাউন্সিল ইতিমধ্যে সার্বজনীন বিনামূল্যের স্কুল খাবার, বিনামূল্যে ইউনিফর্ম অনুদান, বিনামূল্যে হোম কেয়ার, সাশ্রয়ী হাউজিং, শীতকালীন জ্বালানি ভাতা, বিনামূল্যে সাঁতারসহ নানা উদ্ভাবনী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে।

কমিউনিটি এর আরও খবর