img

“মানবতাকেই অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে আনতে হবে”

প্রকাশিত :  ১৭:৫৮, ১১ জুন ২০২৫

“মানবতাকেই অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে আনতে হবে”

নিজস্ব প্রতিবেদক: লন্ডনের বিশ্ববিখ্যাত চ্যাথাম হাউস (রয়েল ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স)-এ এক গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সভায় ড. ইউনূস বলেন,

“আমরা এমন এক বিশ্বে বাস করছি, যেখানে অর্থনীতি কেবল ধনীদের আরও ধনী করে তোলার হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখনই সময়—একটি মানবতাকেন্দ্রিক অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে তোলার।”

তিনি আরও বলেন,

“আমার লক্ষ্য এমন একটি সমাজ গড়ে তোলা, যেখানে দারিদ্র্য থাকবে না, বেকারত্ব থাকবে না, এবং কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। এই ‘থ্রি-জিরো ওয়ার্ল্ড’-এর স্বপ্ন একা নয়, সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই বাস্তবায়নযোগ্য।”

আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশের অবস্থান

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নীতি-নির্ধারক, গবেষক, কূটনীতিক ও চিন্তাবিদদের সামনে ড. ইউনূস তাঁর ‘সোশ্যাল বিজনেস’-এর ধারণার সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন। তরুণ প্রজন্মকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন,

“চাকরি খোঁজা নয়, চাকরি তৈরি করাই হওয়া উচিত তরুণদের লক্ষ্য। উন্নয়ন মানে কেবল অবকাঠামো নয়, বরং মানবিক মূল্যবোধ ও ন্যায়বোধের চর্চা।”

বিশ্লেষণ ও প্রতিক্রিয়া

সভায় উপস্থিত আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা ড. ইউনূসের চিন্তাধারাকে স্বাগত জানান। যুক্তরাজ্যের কয়েকজন নীতিনির্ধারক বলেন,

“ড. ইউনূসের ভাষণ আমাদের মনে করিয়ে দেয়—উন্নয়নশীল একটি দেশও কিভাবে বিশ্বকে নৈতিক নেতৃত্ব দিতে পারে।”

বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই সভার মাধ্যমে আরও ইতিবাচকভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের পেশাদারিত্ব ও দূরদর্শী অবস্থানের একটি স্পষ্ট প্রতিফলন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

অনুষ্ঠান-পরবর্তী মুহূর্ত

সভা শেষে আন্তর্জাতিক অতিথিরা ড. ইউনূসের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে মতবিনিময় করেন। অনেকেই তাঁর সঙ্গে ছবি তোলেন এবং বক্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এই সভা প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশ কেবল উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে না, বরং ন্যায়ভিত্তিক নেতৃত্বের একটি নতুন মানদণ্ড স্থাপন করছে। বিশ্ব যখন অর্থনৈতিক সংকটে দিশেহারা, তখন একজন বাংলাদেশির কণ্ঠে উঠে আসা মানবিক অর্থনীতির আহ্বান বিশ্বকে দেখিয়েছে নতুন আলোর দিশা।

যুক্তরাজ্য এর আরও খবর

ইংলিশ চ্যানেলে নৌকা ডুবে শিশুসহ নিহত ৫ | JANOMOT | জনমত

img

যুক্তরাজ্যে ভোটারদের বয়স ১৬ করার প্রস্তাব

প্রকাশিত :  ০৭:০৫, ১৮ জুলাই ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৭:৩৭, ১৮ জুলাই ২০২৫

মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া

বিশ্বের অন্যতম সর্বনিম্ন বয়সের ভোটার নির্ধারণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে যুক্তরাজ্যে। 

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার যুক্তরাজ্যে ১৬ বছর বয়সীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসার আগে নির্বাচনের সময় ১৬ বছর বয়সীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। 

লেবার পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এর মাধ্যমে গণতন্ত্র আরও অধিকতর সুসংসহত এবং কার্যকর হয়ে উঠবে। তবে, এ পরিকল্পনার বিরুদ্ধেও অনেকে অভিমত প্রকাশ করেছেন।


প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার বিরোধীদের উদ্দেশে বলেন, ১৬ বছর বয়সীরা যদি কাজ করতে পারেন তাঁরা যদি ট্যাক্স প্রদান করে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারেন, তাহলে তাঁদের এবং জনগণের টাকা এবং ট্যাক্স কোন পথে ব্যয় হবে সে ব্যাপারে মতামত প্রকাশে তাঁদেরকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা দেশের এবং জনগণের জন্য কল্যাণকর হবে। তিনি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যাপারে নতুন প্রজন্মের ভোটারদের মতামত গ্রহণ করলে তা বিপুল জনগোষ্ঠীর উপকারে আসবে।

লেবার দলের বিরোধীরা বলছেন, নতুন প্রজন্মের ভোটাররা মধ্য বামপন্থি লেবার সমর্থক হওয়ায় এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

তবে, এই পরিকল্পনা কার্যকর করতে সংসদে একিটি বিল পাশ করতে হবে। এ ক্ষেত্রেও স্যার কিয়ার স্টারমার এগিয়ে যাবেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। কারণ, সংসদের লেবার পার্টির নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।

বিশ্বের অন্যান্য বেশ কয়েকটি দেশ যেমন অস্ট্রিয়া, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল,ইকুয়েডর এবং কিউবাতে ১৬ বছর বয়সীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী ও লেবার নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার বলেছেন, এর লক্ষ হল গণতন্ত্রকে আধুনিকিকরণ এবং ভোটার উপস্থিতি বৃদ্ধি করা। স্কটল্যাণ্ড এবং ওয়েলসের অল্প বয়সীরা স্থানীয় নির্বাচনে অনেক আগে থেকেই ভোট দেয়ার অধিকার পেয়ে আসছেন।



যুক্তরাজ্য এর আরও খবর