img

সঞ্চয়পত্র–প্রাইজবন্ডসহ পাঁচ সেবা স্থগিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

প্রকাশিত :  ০৬:৫১, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

সঞ্চয়পত্র–প্রাইজবন্ডসহ পাঁচ সেবা স্থগিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

বাংলাদেশ ব্যাংক সাধারণ মানুষের জন্য সরাসরি দেওয়া পাঁচটি রিটেইল সেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ভবনের আধুনিকায়ন, উন্নত ভল্ট সুবিধা তৈরি এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি কমানোর লক্ষ্যেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

\r\n

এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল সদর দপ্তরসহ অন্যান্য শাখায়ও সংশ্লিষ্ট সব সেবা বন্ধ থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়কে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে এবং খুব শিগগিরই সাধারণ জনগণকে অবহিত করতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২৮টি কাউন্টারের মাধ্যমে সরকারের পক্ষে মোট ১০ ধরনের সেবা দিয়ে থাকে। এর মধ্যে পাঁচটি সেবা—সঞ্চয়পত্র আদান–প্রদান, প্রাইজবন্ড বিক্রি, ত্রুটিযুক্ত নোট বিনিময়, পিএডি লেনদেন এবং চালানের ভাংতি—চলতি সিদ্ধান্তের আওতায় বন্ধ হচ্ছে। পাশাপাশি এসব সেবা পরিচালনায় ব্যবহৃত ১২টি কাউন্টারও বন্ধ থাকবে। তবে দাপ্তরিক প্রয়োজনে সঞ্চয়পত্র, প্রাইজবন্ড ও চালানসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় লেনদেনের জন্য একটি অভ্যন্তরীণ কাউন্টার রাখা হবে।

গত কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিক সভায় বিষয়টি আলোচনা শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে ২২ জুন গভর্নর মূল ভবনের ক্যাশ বিভাগ পরিদর্শন করে কয়েকটি নিরাপত্তা ঝুঁকির দিক নির্দেশ করেন। পরবর্তীতে গঠিত কমিটি সেপ্টেম্বরে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়—বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল ভবন কেপিআই নিরাপত্তা নীতিমালার আওতাভুক্ত। একই ভবনে মুদ্রা ইস্যু–বিতরণ, ভল্ট কার্যক্রম, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা এবং ব্যাংকিং তদারকির মতো অত্যন্ত স্পর্শকাতর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সাধারণ মানুষের অতিরিক্ত ভিড় এসব কার্যক্রমের নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। অতীতে রিজার্ভ হ্যাকিং, সঞ্চয়পত্র জালিয়াতি, ভবনের ভেতরে ছবি–ভিডিও ধারণ এবং নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে উত্তেজনা তৈরির ঘটনাও ঘটেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সঞ্চয়পত্র ও প্রাইজবন্ড বিক্রির মতো সেবা বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে সহজেই দেওয়া সম্ভব। বর্তমানে দেশের ৬০টির বেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা এ ধরনের সেবা দিতে সক্ষম। ফলে এসব রিটেইল সেবা বন্ধ হলেও জনগণের ভোগান্তি হবে না। বিশ্বের কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি এ ধরনের রিটেইল সেবা জনগণকে দেয় না বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

তবে সঞ্চয়পত্র বিক্রি বন্ধ হলেও পূর্বে ইস্যু করা সঞ্চয়পত্রের মেয়াদকাল পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সব সেবা স্বাভাবিকভাবে চালু থাকবে। মেয়াদপূর্তির পর সেগুলো পুনঃবিনিয়োগ করা যাবে না। ব্যাংক হিসাব পরিবর্তন, মোবাইল নম্বর হালনাগাদ, নমিনি সংযোজন বা পরিবর্তন, ক্রেতার মৃত্যুর পর নমিনির মাধ্যমে পরিচালনা, আগাম নগদায়নসহ স্বাভাবিক আইনগত সেবা অব্যাহত থাকবে।

অর্থনীতি এর আরও খবর

img

অনুমতি ছাড়াই ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি, কোম্পানিগুলোকে তলব

প্রকাশিত :  ০৭:১৭, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫

সরকারের অনুমতি ছাড়া ভোক্তা পর্যায়ে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর পর তেল আমদানিকারক ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তলব করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। 

আজ বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান জানান, কোম্পানিগুলো ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে আবেদন করলেও তাতে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তবুও তারা বাজারে লিটারপ্রতি ৯ টাকা করে সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়েছে।

ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ায় দেশীয় বাজারেও সমন্বয় আনা হয়েছে। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, দাম বৃদ্ধির আবেদন থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি।

এদিকে, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ব্যবসায়ীরা যে প্রক্রিয়ায় ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েছেন এর আইনগত কোনো ভিত্তি নেই।

উপদেষ্টা আরও বলেন, \'তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে সরকার কিছুই জানতো না। আমরা আধা ঘণ্টা আগে এটা জেনেছি। কোম্পানিগুলো সামগ্রিকভাবে একত্রিত হয়ে এ কাজটি (ভোজ্য তেলের দাম বাড়ানো) করেছে। সামগ্রিক একত্রিতভাবে করা এই কাজটি কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।\'

এর আগে গত অক্টোবরেও একইভাবে সরকারের অনুমতি ছাড়া ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েছিল কোম্পানিগুলো। তখন সরকার জানায়, এভাবে মূল্য বাড়ানোর সুযোগ নেই। পরবর্তী সময়ে চাপের মুখে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে প্রতিষ্ঠানগুলো।

অর্থনীতি এর আরও খবর