img

দৃষ্টিনন্দন সামার ফেয়ার উপভোগে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষের অংশগ্রহণ

প্রকাশিত :  ১১:২১, ০৬ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১১:২৬, ০৬ অক্টোবর ২০২৫

এ বছর গ্রীস্মকালিন ছুটির দিনগুলিতে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের উদ্যোগে বারাজুড়ে সামার অব ফান ফেয়ার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বারার পার্ক, ইয়ূথ এবং চিলড্রেন্স সেন্টার, আইডিয়া স্টোর্স এবং লাইব্রেরী, স্পোর্টস ভ্যানু এবং লেইজার সেন্টারসহ বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত সামার অব ফান প্রোগ্রামের শত শত এক্টিভিটিস বা কার্যক্রম এবং অনুষ্ঠান উপভোগ করতে ৫০ হাজারের বেশি বাসিন্দা অংশ নিয়েছেন।

সামার ফান প্রোগ্রামে ৮শ'র বেশি রকমের ফ্রি স্কুল সামার হলিডে ইভেন্ট বা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা স্বস্থির সাথে খেলাধুলা অথবা শারিরীক কার্যকলাপে অংশ নিয়েছেন এবং উপভোগ করেছেন নিত্য-নতুন সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা। এছাড়াও এই  প্রোগ্রাম বারার সব ধর্ম, বর্ণ ও সব বয়সের মানুষকে বারার সব ধরনের সুবিধা ব্যবহারের সুযোগ এনে দিয়েছিল পাশাপাশি  টাওয়ার হ্যামলেটসকে ভালোবাসার মতো  আকর্ষণীয় ও সৌন্দর্যমন্ডিত বিষয়গুলোও উন্মোচনের সুযোগ করে দিয়েছিল।

আর্টস, পার্ক এন্ড ইভেন্টস, আইডিয়া স্টোর্স, লোকাল হিস্টোরি লাইব্রেরি এন্ড আর্কাইভ বা সংরক্ষনাগার, বি ওয়েল, ইয়ং টাওয়ার হ্যামলেটস, স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট এবং ফ্যামিলি হ্যাবসহ কাউন্সিলের বিভিন্ন দপ্তর এই প্রোগ্রাম উদযাপন এবং শিশু-কিশোর এবং তাদের পরিবারকে সহযোগিতার মাধ্যমে অংশিদারিত্ব কাজের দুর্লভ নজীর স্থাপন করেছে।

টাওয়ার হ্যামলেটসের ডেপুটি মেয়র এবং এডুকেশন, ইয়ূথ এন্ড লাইফলং লার্নিং বিষয়ক কেবিনেট মেম্বার কাউন্সিলর মাইয়ূম তালুকদার বলেছেন, ''আমাদের স্টাফ এবং অংশীদারী সংগঠনগুলো গ্রীস্মকালীন স্কুল ছুটি চলাকালে পুরো বারাজুড়ে বিণামূল্যে শত শত অনুষ্ঠান উদযাপনের মাধ্যমে পরিবারগুলোকে সমর্থন দিয়েছেন, এ জন্যে আমি গর্বিত।

''এই কার্যক্রমগুলো বাসিন্দাদেরকে তাদের স্থানীয় পরিবেশ সম্পর্কে জানতে অনুপ্রাণিত করেছে, টাওয়ার হ্যামলেটসকে ভালোবাসার মতো নতুন এবং অজানা বিষয়গুলো জানতে তাদের মধ্যে কৌতুহল জাগিয়েছে। উপস্থিতির সংখ্যা আমাদের অনুমানের চেয়েও বেশি হয়েছে এবং সকল বয়সের অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে ইতিবাচক সারা পেয়ে আমি আনন্দিত।”

সামার ফান ২০২৫ প্রোগ্রামে উল্লেখ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে:

* দ্যা সামার অব ফান রিডিং চ্যালেঞ্জ: আইডিয়া স্টোরগুলোর সহায়তায় পুরো বারাজুড়ে অনুষ্ঠিত বুক রিডিং চ্যালেঞ্জে অংশ গ্রহণকারীরা বই পড়া, স্ট্যাম্প সংগ্রহ এবং প্রাইজ ড্রতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

* সাপ্তাহিক লাভ টাওয়ার হ্যামলেটস কমিউনিটি ফ্যামিলি ফান ডে: পার্ক এবং ফ্যামিলি হ্যাব টিমগুলো প্রতি বুধবার এটির আয়োজন করেছিল যেখানে খেলাধুলা, শিল্প ও কারুশিল্প, এবং আরও অনেক কিছু ছিল।

* নেক্সট স্টপ-টাওয়ার হ্যামলেটসে ৯শ বছরের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট প্রদর্শনী: টাওয়ার হ্যামলেটস লোকাল হিস্টোরি লাইব্রেরী এবং সংরক্ষনাগার এর আয়োজন করেছিল। এখানে এসে পরিদর্শকরা রেড বাস এবং ট্রেইনসহ ৯শ বছরের পুরনো পাবলিক ট্রান্সপোর্টের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

* ভিক্টোরিয়া পার্কে খেলাধুলা এবং স্বাস্থ্যকর দিন: ইয়ং টাওয়ার হ্যামলেটস, টাওয়ার হ্যামলেটস ইয়ূথ সার্ভিস বিভিন্ন পার্ক এবং খোলা জায়গায় ৮টি অনুষ্ঠান উদযাপন করেছিল। যেখানে শিশু-কিশোর এবং পরিবারের সদস্যদের আনন্দ বিনোদনের জন্যে ইনফ্ল্যাটাবল এক্টিভিটিজ, বাঙ্গি দৌঁড়সহ নানা ধরনের এক্টিভিটিজ ছিল। এছাড়াও তরুন-তরুনীদের জন্যে ইয়ং টাওয়ার হ্যামলেটস বিণামূল্যে ইয়ূথ সেন্টার ভিত্তিক শত শত এক্টিভিটিজ, কর্মশালা, ভ্রমণ এবং গেইমের আয়োজন করেছিল।

সামার ফান রিডিং চ্যালেঞ্জে প্রায় ২ হাজার শিশু কিশোর অংশ নিয়েছিল এবং তারা প্রায় ৫ হাজার ৪শ ৫১ বই পড়েছে। 

ডেপুটি মেয়র ও কালচার এবং রিক্রিয়েশন বিষয়ক কেবিনেট মেম্বার কাউন্সিলর কামরুল হোসাইন হোয়াইটচ্যাপল টাউন হলে বিশেষ অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিজয়ী শিশু এবং তাদের অভিভাবকদের স্বাগত জানান এবং বিজয়ী ইয়ংস্টারদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

কালচার এবং রিক্রিয়েশন বিষয়ক কেবিনেট মেম্বার কাউন্সিলর কামরুল হোসাইন বলেছেন: ''গ্রীস্মকালিন ছুটিতে বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী শিশু-তরুন এবং তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে যা শুনেছি,  এ বছরের সামার ফান প্রোগ্রাম জীবন সমৃদ্ধ করতে সহায়ক ছিল তাতে কোনো সন্দেহ নেই।''

২৪টি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ৬টি বই পড়ে স্বর্ণপদক (গোল্ড এওয়ার্ড) জিতেছে ৭ বছরের আধিতি। তার মা ভিদায়া বলেছেন: ''বো এবং হোয়াইটচ্যাপল আইডিয়া স্টোরের অনুষ্ঠান ছাড়াও অসংখ্য আউটডোর কার্যক্রমে অংশ নিয়েছি। গল্পকার এবং কমিক ওয়ার্কশপগুলি দুর্দান্ত ছিল। আমরা ফুটবল এবং ডিম এবং চামচ দৌড়ও উপভোগ করেছি এবং আধিতির তৈরী শিল্পকর্মে আমাদের দেয়ালগুলি এখন পরিপূর্ন হয়ে আছে।''

বেথনালগ্রীন সোলো ক্যাফের দানকৃত ৪০ পাউন্ডের ভাউচার জিতেছে ৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ এবং ভিক্টোরিয়া পার্কের হ্যাব ক্যাফের সৌজন্যে ৪০ পাউন্ডের ভাউচার জিতেছে ৯ বছর বয়সী আলিশা।

মোহাম্মদের মা সারা ইসমাইল বলেছেন, ''ওয়াটনি মার্কেট ও হোয়াইটচ্যাপল আইডিয়া স্টোরে ল্যাগো কর্মশালা এবং স্টেপনী গ্রীনের ফানডেতে বেশ কিছু কার্যক্রম আমরা উপভোগ করেছি। মোহাম্মদ ল্যাগো অবকাঠামো নির্মান করতে ভালোবাসে এবং একটি জলবায়ূ পরিবর্তন কর্মশালায় অংশ নিয়ে সে একটি আরবান ফরেস্ট মডেল তৈরী করে সে বলে, এটি টাওয়ার হ্যামলেটসে বায়ূদোষণ বন্ধে সহযোগিতা করবে।''

১০ বছর বয়সী মোহাম্মদ ৬টি বই পড়ে সামার অব ফান রিডিং চ্যালেঞ্জ সম্পন্ন করেছে। তাকে ১০ পাউন্ডের বুক ভাউচার প্রদান করা হয়। মোহাম্মদ বলেছে: ''অ্যালেক্স রাইডারের উপন্যাসগুলি আমার প্রিয়, এবং আরও বইয়ের জন্য আমি ভাইচারটি ব্যয় করব।"

কমিউনিটি এর আরও খবর

img

গাজায় গণহত্যা বন্ধে নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমানের আবেগঘন ও জোরালো বক্তব্য

প্রকাশিত :  ১৪:২০, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৪:৪৫, ০৯ অক্টোবর ২০২৫

"আমার জীবদ্দশায় মানবজীবনের প্রতি এমন অবহেলা কখনো দেখিনি: মেয়র লুৎফুর

"আমার জীবদ্দশায় মানবজীবনের প্রতি এমন অবহেলা কখনো দেখিনি: মেয়র লুৎফুর

- "ফিলিস্তিনী জনগণ কি এমন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি চায়, যে রাষ্ট্র তাদেরকে হত্যার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করে?"

- প্রয়োজন প্রকৃত অর্থে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা⁠

- দুই বছরে প্রায় ৬৭,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত, যার মধ্যে অন্তত ১৮,৫০০ শিশু 

টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান বুধবার ফুল কাউন্সিল মিটিং-এ গাজায় চলমান গণহত্যা বন্ধে এক আবেগঘন ও শক্তিশালী বক্তব্য রাখেন।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তেও নারী ও শিশুরা অবিরামভাবে বোমাবর্ষণের শিকার হচ্ছে। তাদের যন্ত্রণার গভীরতা কোনো ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমার জীবদ্দশায় মানবজীবনের প্রতি এমন অবহেলা আমি কখনও দেখিনি।

মেয়র জানান, গত দুই বছরে প্রায় ৬৭,০০০ ফিলিস্তিনি, যার মধ্যে অন্তত ১৮,৫০০ শিশু, নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রানচেস্কা আলবানেসের মতে, প্রকৃত সংখ্যা সম্ভবত ৬৮০,০০০ পর্যন্ত হতে পারে।

তিনি বলেন, এটিকে গণহত্যা হিশেবে স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘের সিদ্ধান্তের পরও গাজায় যা ঘটছে তাকে গণহত্যা বলতে লেবার সরকার এখনো অস্বীকার করছে। বরং ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বজায় রেখেছে। এটি আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা। আমাদের দরকার বয়কট, নিষেধাজ্ঞা এবং প্রকৃত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা।

মেয়র আরও বলেন, মাত্র দুই সপ্তাহ আগে সরকার ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করেছে। এই স্বীকৃতি আসতে সময় লেগেছে দীর্ঘ ৭৮ বছর। কিন্তু ফিলিস্তিনী জনগণ কি এমন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি চায়, যে রাষ্ট্র তাদেরকে হত্যার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করে?

তিনি জোর দিয়ে বলেন,গাজার গণহত্যাকে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গণহত্যা’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। জরুরি প্রয়োজন এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হওয়া। আমাদের যা কিছু করার সামর্থ্য আছে, তা দিয়ে আমাদের এই গণহত্যা থামাতে হবে।

মেয়র লুৎফুর স্মরণ করিয়ে দেন, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল প্রথম সংস্থাগুলোর একটি, যারা কর্মজীবী মানুষের অবসর তহবিলকে মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত কোম্পানি থেকে মুক্ত রাখার পদক্ষেপ নিয়েছে।

ইহুদি ও মুসলিম কমিউনিটির প্রতি সংহতি: 

মেয়র একই সময়ে ম্যানচেস্টারের হিটন পার্ক সিনাগগে সংঘটিত ইহুদি-বিরোধী হামলা এবং ইস্ট সাসেক্সের একটি মসজিদে অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে তীব্র নিন্দা জানান।

তিনি বলেন, ইহুদিদের সর্বাপেক্ষা পবিত্র দিন ইয়োম কিপুরে এই হামলা গভীরভাবে নিন্দনীয়। একইভাবে ইসলামবিদ্বেষমূলক ঘৃণাজনিত অপরাধও আমাদের সমাজে কোনো স্থান পেতে পারে না। 

তিনি নিহতদের পরিবার এবং যুক্তরাজ্যের ইহুদি ও মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

ঐক্যের বার্তা: বিভাজনের মুখেও ঐক্যবদ্ধ টাওয়ার হ্যামলেটস: 

মেয়র বলেন, টাওয়ার হ্যামলেটস যুক্তরাজ্যের অন্যতম বৈচিত্র্যময় বারা, কিন্তু একই সঙ্গে অন্যতম ঐক্যবদ্ধও। এখানে ৯০% মানুষ বলেন, ভিন্ন পটভূমির মানুষদের সঙ্গে তারা ভালোভাবে মিশে চলেন। 

সম্প্রতি কাউন্সিলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত টাউন হল ওপেন ডে ও ব্রিক লেন কারি ফেস্টিভ্যালে প্রায় ২২,৫০০ মানুষ একত্রিত হয়েছেন — যা সম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন মেয়র।

বাসিন্দাদের জন্য বিনিয়োগ, কাউন্সিলের অঙ্গীকার: 

মেয়র তার কিছু উন্নয়ন কাজের কথাও তুলে ধরেন। বলেন, ২০২২ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই আমার লক্ষ্য একটাই — আমাদের বাসিন্দাদের জন‍্য বিনিয়োগ করা। 

তিনি উল্লেখ করেন, কাউন্সিল ইতিমধ্যে সার্বজনীন বিনামূল্যের স্কুল খাবার, বিনামূল্যে ইউনিফর্ম অনুদান, বিনামূল্যে হোম কেয়ার, সাশ্রয়ী হাউজিং, শীতকালীন জ্বালানি ভাতা, বিনামূল্যে সাঁতারসহ নানা উদ্ভাবনী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে।

কমিউনিটি এর আরও খবর