লন্ডন স্পোর্টিফ ও অ্যাপেক্সেরে যৌথ উদ্যোগে টাওয়ার হ্যামলেটস কমিউনিটি টেবিল টেনিস কাপ ২০২৫ অনুষ্ঠিত
প্রকাশিত :
১১:০৬, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
প্রথনবারের মতো লন্ডন স্পোর্টিফ ও অ্যাপেক্সেরে যৌথ উদ্যোগে টাওয়ার হ্যামলেটস কমিউনিটি টেবিল টেনিস কাপ ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৫ই অক্টোবর উৎসবমূখর পরিবেশে দিনব্যাপী খেলা অনুষ্টিত হয় লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমিতে। উত্তেজনাপূর্ণ কমিউনিটি টুর্নামেন্টে টাওয়ার হ্যামলেটসের বিভিন্ন এলাকা এবং আশপাশ থেকে খেলোয়াররা অংশগ্রহণ করেন । তরুণ ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয় বয়সের নারী-পুরুষ খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণে টুর্নামেন্টটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন টিমোথি তিয়ান এন থাই। রানার্স আপ হন পেরি ফাং। কনসোলেশন ইভেন্ট বিজয়ী মিলান সৌজানি।লন্ডন স্পোর্টিফের ম্যানেজার মুহি মিকদাদ ও অ্যাপেক্সের কোচ জশ সকল খেলোয়ার-বিজয়ীদের অভিনন্দন জানান তাদের প্রচেষ্টা, উদ্যম ও কমিউনিটির প্রতি নিষ্ঠার জন্য।
অ্যাপেক্স বর্তমানে সপ্তাহে তিন দিন নিয়মিত টেবিল টেনিস সেশন পরিচালনা করে, যা তরুণ ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের জন্য উন্মুক্ত খেলাটিকে ছড়িয়ে দিতে এবং দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করার লক্ষ্যে। রবিবারের টুর্নামেন্টটি দারুণ সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে, যা স্থানীয় মানুষকে একত্র করেছে এবং কমিউনিটি স্পোর্টসের ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরেছে।
লন্ডন স্পোর্টিফের ম্যানেজার মুহি মিকদাদ বলেন: আমাদের কমিউনিটিতে টেবিল টেনিস প্রচারের এটি এক অসাধারণ সুযোগ। আজ আমরা বিভিন্ন বয়সের খেলোয়াড়দের মধ্যে অসাধারণ উৎসাহ ও খেলাধুলার মানসিকতা দেখেছি। আমাদের লক্ষ্য হলো একটি শক্তিশালী কমিউনিটি ক্লাব নেটওয়ার্ক গঠন করা।
অ্যাপেক্সের কোচ জশ বলেন: সকল অংশগ্রহণকারীকে ধন্যবাদ, এবং আমরা আশা করি ভবিষ্যতে আরও বেশি মানুষ এই খেলায় যুক্ত হবে।”
টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান বুধবার ফুল কাউন্সিল মিটিং-এ গাজায় চলমান গণহত্যা বন্ধে এক আবেগঘন ও শক্তিশালী বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, এই মুহূর্তেও নারী ও শিশুরা অবিরামভাবে বোমাবর্ষণের শিকার হচ্ছে। তাদের যন্ত্রণার গভীরতা কোনো ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমার জীবদ্দশায় মানবজীবনের প্রতি এমন অবহেলা আমি কখনও দেখিনি।
মেয়র জানান, গত দুই বছরে প্রায় ৬৭,০০০ ফিলিস্তিনি, যার মধ্যে অন্তত ১৮,৫০০ শিশু, নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রানচেস্কা আলবানেসের মতে, প্রকৃত সংখ্যা সম্ভবত ৬৮০,০০০ পর্যন্ত হতে পারে।
তিনি বলেন, এটিকে গণহত্যা হিশেবে স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘের সিদ্ধান্তের পরও গাজায় যা ঘটছে তাকে গণহত্যা বলতে লেবার সরকার এখনো অস্বীকার করছে। বরং ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বজায় রেখেছে। এটি আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা। আমাদের দরকার বয়কট, নিষেধাজ্ঞা এবং প্রকৃত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা।
মেয়র আরও বলেন, মাত্র দুই সপ্তাহ আগে সরকার ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করেছে। এই স্বীকৃতি আসতে সময় লেগেছে দীর্ঘ ৭৮ বছর। কিন্তু ফিলিস্তিনী জনগণ কি এমন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি চায়, যে রাষ্ট্র তাদেরকে হত্যার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করে?
তিনি জোর দিয়ে বলেন,গাজার গণহত্যাকে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গণহত্যা’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। জরুরি প্রয়োজন এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হওয়া। আমাদের যা কিছু করার সামর্থ্য আছে, তা দিয়ে আমাদের এই গণহত্যা থামাতে হবে।
মেয়র লুৎফুর স্মরণ করিয়ে দেন, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল প্রথম সংস্থাগুলোর একটি, যারা কর্মজীবী মানুষের অবসর তহবিলকে মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত কোম্পানি থেকে মুক্ত রাখার পদক্ষেপ নিয়েছে।
ইহুদি ও মুসলিম কমিউনিটির প্রতি সংহতি
মেয়র একই সময়ে ম্যানচেস্টারের হিটন পার্ক সিনাগগে সংঘটিত ইহুদি-বিরোধী হামলা এবং ইস্ট সাসেক্সের একটি মসজিদে অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে তীব্র নিন্দা জানান।
তিনি বলেন, ইহুদিদের সর্বাপেক্ষা পবিত্র দিন ইয়োম কিপুরে এই হামলা গভীরভাবে নিন্দনীয়। একইভাবে ইসলামবিদ্বেষমূলক ঘৃণাজনিত অপরাধও আমাদের সমাজে কোনো স্থান পেতে পারে না।
তিনি নিহতদের পরিবার এবং যুক্তরাজ্যের ইহুদি ও মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
মেয়র বলেন, টাওয়ার হ্যামলেটস যুক্তরাজ্যের অন্যতম বৈচিত্র্যময় বারা, কিন্তু একই সঙ্গে অন্যতম ঐক্যবদ্ধও। এখানে ৯০% মানুষ বলেন, ভিন্ন পটভূমির মানুষদের সঙ্গে তারা ভালোভাবে মিশে চলেন।
সম্প্রতি কাউন্সিলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত টাউন হল ওপেন ডে ও ব্রিক লেন কারি ফেস্টিভ্যালে প্রায় ২২,৫০০ মানুষ একত্রিত হয়েছেন — যা সম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন মেয়র।
বাসিন্দাদের জন্য বিনিয়োগ, কাউন্সিলের অঙ্গীকার
মেয়র তার কিছু উন্নয়ন কাজের কথাও তুলে ধরেন। বলেন, ২০২২ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই আমার লক্ষ্য একটাই — আমাদের বাসিন্দাদের জন্য বিনিয়োগ করা।
তিনি উল্লেখ করেন, কাউন্সিল ইতিমধ্যে সার্বজনীন বিনামূল্যের স্কুল খাবার, বিনামূল্যে ইউনিফর্ম অনুদান, বিনামূল্যে হোম কেয়ার, সাশ্রয়ী হাউজিং, শীতকালীন জ্বালানি ভাতা, বিনামূল্যে সাঁতারসহ নানা উদ্ভাবনী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে।