খেলাপি ঋণ অবলোপনে 'সময়সীমার বাধা' তুলে নতুন নির্দেশনা জারি
বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণ অবলোপনে থাকা সময়সীমার বাধা তুলে দিয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। এখন থেকে কোনো ঋণ মন্দ বা ক্ষতিজনক হিসেবে শ্রেণিকৃত হলে এবং তা আদায় হওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে—সময়সীমা অপেক্ষা না করে অবলোপন করা যাবে।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এর আগে গত ১৯ অক্টোবরের সার্কুলারে নোটিশ দেওয়ার সময়সীমা ছিল ৩০ দিন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, “৩০ দিনের সময়সীমায় একটি মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘ সময় লাগে। প্রক্রিয়া দ্রুত করার লক্ষ্যেই সময় কমানো হয়েছে।”
সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলো তাদের নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নগদ প্রণোদনা দিতে পারবে। কোনো ব্যাংকের এ ধরনের নীতিমালা না থাকলে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে তা প্রণয়ন করতে হবে।
কোনো গ্রাহকের ঋণ একাধারে মন্দ এবং ক্ষতিজনক শ্রেণিতে থাকলে তা অবলোপন করা যাবে। তবে অধিক পুরনো ঋণগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাইট-অফ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানিয়েছে, রাইট-অফ করার পরও ঋণগ্রহীতা যতদিন পর্যন্ত সম্পূর্ণ দেনা পরিশোধ না করবে, ততদিন তিনি খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবেই বিবেচিত হবেন। সেজন্য অবলোপনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে গ্রাহককে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করা বাধ্যতামূলক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৪ সালের আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ৬২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
ক্লাসিফায়েড লোন রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪.২০ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩.৪২ লাখ কোটি টাকা মন্দ ও ক্ষতিজনক মানের ঋণ, যা মোট খেলাপির ৮১.৩৭ শতাংশ।
অর্থাৎ, বর্তমানে ব্যাংক খাতে যেসব মন্দ শ্রেণির ঋণ রয়েছে, সেগুলো প্রয়োজনে ব্যাংকগুলো অবলোপন করতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো ঋণ অবলোপন করতে হলে তার বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন রাখতে হবে। কোনো ব্যাংকের ক্ষেত্রে প্রভিশন ঘাটতি থাকলে চলতি বছরের আয় হিসাব (ইনকাম অ্যাকাউন্ট) থেকে সমন্বয় করে প্রভিশন তৈরি করতে হবে।


















