img

চাঁদে পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত :  ০৮:১৬, ০৬ আগষ্ট ২০২৫

চাঁদে পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

২০৩০ সালের মধ্যে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা চাঁদে পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। মার্কিন গণমাধ্যমের বরাতে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, চাঁদের পৃষ্ঠে মানুষের বসবাসের জন্য একটি স্থায়ী ঘাঁটি তৈরি করার মার্কিন উচ্চাকাঙ্ক্ষার অংশ এটি।

পলিটিকোর মতে, নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান চীন এবং রাশিয়ার অনুরূপ পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বলেছেন—এই দুটি দেশ চাঁদে একটি কিপ-আউট জোন ঘোষণা করতে পারে। তার আগেই চাঁদের দখল নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।

তবে সাম্প্রতিক নাসার বাজেট হ্রাসের কারণে লক্ষ্য এবং সময়সীমা কতটা বাস্তবসম্মত তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। কিছু বিজ্ঞানী উদ্বিগ্ন হয়ে বলছেন, পরিকল্পনাগুলো ভূ-রাজনৈতিক লক্ষ্য দ্বারা পরিচালিত। বাস্তব কার্যকারিতা উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রশাসন আমলে নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।

যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, ভারত, জাপানসহ কয়েকটি দেশ চাঁদের পৃষ্ঠে রহস্য অন্বেষণের জন্য তাড়াহুড়ো করছে। কিছু দেশ স্থায়ী মানব বসতির পরিকল্পনা নিয়েও এগোচ্ছে।

মার্কিন পরিবহন সচিব শন ডাফিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নাসার অস্থায়ী প্রধান নিযুক্ত করেন। তিনি জানান, ভবিষ্যতের চন্দ্র অর্থনীতি, মঙ্গলে উচ্চ শক্তি উৎপাদন এবং মহাকাশে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিকে সঠিকভাবে এগিয়ে নিতে সংস্থাটির দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

ডাফি বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে এমন একটি চুল্লি তৈরির প্রস্তাব চেয়েছেন, যা কমপক্ষে ১০০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে।

এটি তুলনামূলকভাবে ছোট। একটি সাধারণ অন-শোর উইন্ড টারবাইন ২-৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। চাঁদে বিদ্যুৎ উৎস হিসেবে পারমাণবিক চুল্লি তৈরির ধারণাটি নতুন নয়। ২০২২ সালে নাসা একটি চুল্লি ডিজাইন করার জন্য কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ৫ মিলিয়ন ডলারের তিনটি চুক্তি করেছে।

এই বছরের মে মাসে চীন ও রাশিয়া ঘোষণা করেছে, তারা ২০৩৫ সালের মধ্যে চাঁদে একটি স্বয়ংক্রিয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা করছে।

অনেক বিজ্ঞানী একমত যে, এটি চন্দ্রপৃষ্ঠে অবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের সেরা বা সম্ভবত একমাত্র উপায় হবে।

এক চন্দ্র দিবস পৃথিবীতে চার সপ্তাহের সমান। যার মধ্যে দুই সপ্তাহ অবিরাম রোদ এবং দুই সপ্তাহ অন্ধকার থাকে। এর ফলে সৌরশক্তির ওপর নির্ভর করা খুবই চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। ধার‌ণা করা হচ্ছে, যে দেশ সর্বপ্রথম চাঁদে বিদ্যুৎ শক্তির জোগান দিতে পারবে তার একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা হবে। তাই সুযোগটি হাতছাড়া করতে চাইছে না যুক্তরাষ্ট্র।


img

ফ্রিডম হাউসের প্রতিবেদন: দেশে বেড়েছে ইন্টারনেট ব্যবহারের স্বাধীনতা

প্রকাশিত :  ১২:০৬, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

মার্কিন সংস্থা ফ্রিডম হাউস জানিয়েছে, বিশ্বে অনলাইনের স্বাধীনতা কমে গেলেও বাংলাদেশে এর উন্নতি হয়েছে । আজ প্রকাশিত ‘ফ্রিডম অন দ্য নেট ২০২৫’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর মূল্যায়নে থাকা ৭২টি দেশের মধ্যে ইন্টারনেট স্বাধীনতায় সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে বাংলাদেশে।

এ গবেষণায় ২০২৪ সালের জুন থেকে ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে।

ফ্রিডম হাউস বলছে, ২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে হওয়া অভ্যুত্থানে একটি কর্তৃত্ববাদী সরকার ক্ষমতা হারায়। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ডিজিটাল ক্ষেত্রে কিছু ইতিবাচক সংস্কার আনে। এর ফলেই বাংলাদেশের ইন্টারনেট স্বাধীনতা সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১০০-এর মধ্যে ৪৫ হয়েছে। গত বছর এই স্কোর ছিল ৪০। এটি গত সাত বছরের সেরা অবস্থান।

তবে এত উন্নতির পরও বাংলাদেশ এখনো ‘আংশিক মুক্ত’ দেশ হিসেবে তালিকায় রয়ে গেছে—যে অবস্থানে ২০১৩ সাল থেকে রয়েছে।

ফ্রিডম হাউস তিনটি বড় বিষয় দেখে স্কোর নির্ধারণ করে—

(১) ইন্টারনেটে প্রবেশের বাধা,

(২) অনলাইনে প্রকাশিত বিষয়বস্তুর ওপর নিয়ন্ত্রণ,

(৩) ব্যবহারকারীর অধিকার লঙ্ঘন।

এই তিনটি বিভাগে মোট ২১টি সূচক ব্যবহার করে প্রতিটি দেশের অনলাইন স্বাধীনতার মাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা কিছু বড় পরিবর্তন হলো—২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মুহাম্মদ এমদাদ-উল-বারীকে বিটিআরসির চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়। তিনি ইন্টারনেট বন্ধ না করার নীতি গ্রহণ করেন এবং ইন্টারনেট প্রবেশাধিকারকে মানবাধিকার হিসেবে দেখার কথা বলেন।

২০২৫ সালের মে মাসে সরকার বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন (সিএসএ) বাতিল করে। এর বদলে সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ (সিএসও) জারি হয়।

এতে কিছু ভালো দিক যেমন অনলাইন হয়রানি ও যৌন নির্যাতনবিরোধী সুরক্ষা রয়েছে, তবে আগের মতোই কিছু উদ্বেগজনক বিষয়—যেমন অনলাইনে বক্তব্যের জন্য শাস্তি ও নজরদারি রয়ে গেছে।

এদিকে দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে। তবে ভারত ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে পেছনে রয়েছে। পাকিস্তান ২৭ পয়েন্ট পেয়ে ‘মুক্ত নয়’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। শ্রীলঙ্কা ৫৩ ও ভারত ৫১ পয়েন্ট পেয়ে দুটোই ‘আংশিক মুক্ত’ শ্রেণিতে রয়েছে।


বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এর আরও খবর