img

সিলেটে এতিম শিশুদের জন্য হচ্ছে বিশ্বমানের স্কুল, বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ

প্রকাশিত :  ০৬:৩৩, ২৯ নভেম্বর ২০২৫

 সিলেটে এতিম শিশুদের জন্য হচ্ছে বিশ্বমানের স্কুল, বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ

সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ মহাসড়ক লাগোয়া ছালিয়া গ্রামের কাঁচা-ভাঙাচোরা আর সরু সড়ক মাড়িয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর চোখ আটকে যাবে চমতকার নির্মাণশৈলির কিছু ভবনে। ১৫০ শতক জায়গাজুড়ে লাল টিনের একতলা সারি সারি এসব ভবন নজর কাড়বে যে কারো।

এই ভবনগুলোতে চালু হবে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। তবে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বলতেই যেখানে বিপুল খরচের ব্যাপার, এখানে তার ব্যতিক্রম। বৃটিশ কারিকুলামের এই স্কুলে পড়া যাবে সম্পুর্ন বিনামূল্যে। সম্পূর্ন আবাসিক এ স্কুলে থাকা খাওয়াও একদম ফ্রি। আর এখানে পড়ার সুযোগ পাবে এতিম শিশুরা। সমাজে যারা সুবিধাবঞ্চিত হিসেবে পরিচিত।

অনাথ শিশুদের জন্য এই স্কুলটি নির্মাণ করছে সেচ্ছাসেবী সংস্থা ক্যাপ ফাউন্ডেশন। ‘ক্যাপ ফাউন্ডেশন ভিলেজ দ্য গার্ডিয়ানস’ নামের এই প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ক্যাপ ফাউন্ডেশনের ফাউন্ডার ও সিইও আব্দুল নূর হুমায়ুন জানান, ১০০ জন এতিম শিশু নিয়ে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে এই স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। সিলেট ও সুনামগঞ্জ থেকে বাছাইকৃত এতিম শিশুদের এনে এখানে ভর্তি করা হবে।

তিনি জানান, এই স্কুলে ৩য় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার সুযোগ থাকবে। পরে উচ্চ শিক্ষার জন্য এখানকার শিক্ষার্থীদের ক্যাপ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বৃত্তি দেওয়া হবে। কর্মসংস্থানেও সহায়তা করা হবে।

এই স্কুলের পাশে ক্যাপ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে একটি ট্যাকনিকেল কলেজ নির্মান করা হবে বলেও জানান তিনি।

গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে স্কুল ঘুরে ও উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্কুলে শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য ৩টি ডরমেটরি, একাডেমিক ভবন, একটি মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, লাইব্রেরি, প্রশাসনিক ভবন, ইন্টোর স্পোর্টস কমপ্লেক্স ও মসজিদ রয়েছে। এছাড়া স্টাফদের জন্য ৫টি স্টাফ হাউস রয়েছে। স্কুল ক্যাম্পসের ভেতরেই রয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন লেক ও খেলার মাঠ।

এই প্রজেক্টের কো-অর্ডিনেটর দেলোয়ার হোসেন, ২০২১ সাল থেকে এই স্কুল নির্মানের কাজ শুরু হয়। এতে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৫ কোটি টাকা। তবে এখনও কিছু আনুসাঙ্গিক জিনিসপত্র ক্রয় বাকি রয়েছে।

ক্যাপ ফাউন্ডেশনের চিফ প্যাট্রন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সাঈদ মোহাম্মদ বাকীর বলেন, এটি একটি পাইলট প্রকল্প। এই উদ্যোগ সফল হলে এরকম আরও স্কুল করা হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১২ থেকে সিলেটে কাজ শুরু করে ক্যাপ ফাউন্ডেশন। মূলত দুর্যোগ, স্যানিটেশন, বিশুদ্ধ পানি নিয়ে কাজ করে এনজিও ব্যুরোর নিবন্ধনভূক্ত এ প্রতিষ্ঠানটি।

পরিদর্শনে পর্তুগীজ রাজপরিবারের সদস্যরা

গত বৃহস্পতিবার ( ১৩ নভেম্বর) ‘ক্যাপ ফাউন্ডেশন ভিলেজ দ্য গার্ডিয়ানস’ প্রকল্পটি পরিদর্শনে আসেন পর্তুগিজ রাজপরিবারের তিন সদস্য। প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দেখার পাশাপাশি তারা প্রকল্পের অভ্যন্তরে লেকের উদ্বোধন করেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির আঙ্গিনায় স্মৃতি স্মারক হিসেবে তিনটি বৃক্ষও রোপন করেন।

পর্তুগিজ রাজ পরিবারের সদস্যরা হলেন- এইচআরএইচ দ্যুম ডুয়ার্থ পিই ডি ব্রাগানজা, এইচআরএইচ ইসাবেল ইনেস ডি কাস্ত্রো সি. ডি হেরেডিয়া ডি ব্রাগানজা এবং এইচআরএইচ আফোন্সো ডি সান্তা মারিয়া ডি ব্রাগানজা।

এসময় তারা এমন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘এটি একটি চমতকার উদ্যোগ। আমরা এসেছি মানবিক সহায়তা ও শুভেচ্ছা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে।’

ক্যাপ ফাউন্ডেশনের অনাথ ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কল্যাণে তারাও কাজ করবেন বলে জানান।

ক্যাপ ফাউন্ডেশনের পক্ষে এসময় উপস্থিত ছিলেন- প্রতিষ্ঠানটির চিফ প্যাট্রন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সাঈদ মোহাম্মদ বাকীর, লিগ্যাল অ্যাডভাইজার ব্যারিস্টার মইনুল ইসলাম এবং ফাউন্ডার ও সিইও আব্দুল নূর হুমায়ুন প্রমুখ।

সিলেটের খবর এর আরও খবর

img

রেড ক্রিসেন্ট সুনামগঞ্জ ইউনিটের ভাইস প্রেসিডেন্ট সাজু, সম্পাদক সোহেল

প্রকাশিত :  ১৮:১৬, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৯:০০, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সুনামগঞ্জ ইউনিটের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন (২০২৫-২০২৭) অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে সংস্থাটির ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন শিক্ষাবিদ নুরুল ইসলাম সাজু এবং সেক্রেটারি নির্বাচিত হয়েছেন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য অ্যাড. মল্লিক মো. মঈন উদ্দিন আহমদ সোহেল। খবর ‘বাসস’ এর।

গত ২৮ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি সুনামগঞ্জ ইউনিটের ৫৭২ জন ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন ৪২৮ জন। 

প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা গেছে, ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ নুরুল ইসলাম সাজু। তিনি পেয়েছেন ২০৩ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাশুক আলম পেয়েছেন ১২৪ ভোট এবং আমির হোসেন পেয়েছেন ৯৬ ভোট। 

সেক্রেটারি নির্বাচিত হয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ও বর্তমান জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য অ্যাড. মল্লিক মো. মঈন উদ্দিন আহমদ সোহেল। তিনি পেয়েছেন ২৩৭ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পৌর কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শেরগুল আহমেদ পেয়েছেন ১৮৪ ভোট। 

এদিকে সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন সৈয়দ মোনাওয়ার আলী (২৮৫ ভোট), ইজাজুল হক চৌধুরী নাসিম (২৩৮ ভোট), আব্দুস সাত্তার মো. মামুন (২১৮ ভোট), মো. আশরাফ হোসেন লিটন (১৯৫ ভোট), মো. আনিসুজ্জামান (১৬১ ভোট)। 

নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অ্যাড. শামসুর রহমান। 

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সুনামগঞ্জ ইউনিটের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে ৩ জন, সেক্রেটারি পদে ২ জন এবং সদস্য পদে ১৩জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।