img

শাপলার লালিমায় জেগে ওঠা শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওর, লাল গালিচার রাজ্যে পর্যটকের ঢল

প্রকাশিত :  ০৮:৫৭, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫

শাপলার লালিমায় জেগে ওঠা শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওর, লাল গালিচার রাজ্যে পর্যটকের ঢল

সংগ্রাম দত্ত: মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের হাইল হাওরজুড়ে এখন লাল শাপলার রাজত্ব। ভোরের আলোয় বিস্তীর্ণ বিলজুড়ে হাজারো লাল শাপলার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নতুন ঠিকানা হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে শ্রীমঙ্গলের এই ‘লাল শাপলা বিল’।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা ও মৌলভীবাজার জেলা সদর উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত সুবিশাল হাইল হাওর। এই হাইল হাওরের আয়তন ১৪ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় পড়েছে ১০ হাজার হেক্টর, আর বাকি ৪ হাজার হেক্টর পড়েছে মৌলভীবাজারের সদর উপজেলায়। হাওরের ১৪টি বিলের একটি সানন্দা বিল—বর্তমানে পরিচিত লাল শাপলা বিল নামে। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে মাথা তুলে দাঁড়ানো অসংখ্য লাল শাপলা যেন দূর থেকে লাল কার্পেট বিছিয়ে দিয়েছে পুরো জলাভূমিতে। এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন হাজারো মানুষ। ফলে মির্জাপুরের এই প্রত্যন্ত অঞ্চলটি এখন হয়ে উঠেছে নতুন পর্যটনকেন্দ্র।

সিলেটের কানাইঘাট থেকে আসা পর্যটক জুবায়ের আহমদ বলেন, ‘পুরো সিলেটই প্রকৃতির সৌন্দর্যে ভরপুর। তবে শাপলা বিলে এসে অন্যরকম ভালো লাগল।’

শ্রীমঙ্গলের কলেজছাত্রী দীপান্বিতা দাশগুপ্তা বলেন, ‘একসঙ্গে এত লাল শাপলা আগে কখনও দেখিনি। আমরা মুগ্ধ।’

দর্শনার্থী ফাহিম আহমদ জানান, ‘এ বছর শাপলার সংখ্যা আশ্চর্যভাবে বেড়েছে। লাল শাপলার সঙ্গে পরিযায়ী পাখির কলতান—সব মিলিয়ে মন ভরে যায়।’

হবিগঞ্জের ব্যবসায়ী জমসেদ আলী বলেন, ‘শাপলা বিল সত্যিই পর্যটনের নতুন সংযোজন। আমার সন্তানরা এতটাই মুগ্ধ যে এখানেই থাকতে চায়।’

স্থানীয় ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, ‘শাপলা দেখতে এসে অনেকেই ফুল ছিঁড়ে নিচ্ছেন। আমরা চাই প্রকৃতির এই সৌন্দর্য অক্ষুণ্ণ থাকুক। সবাইকে অনুরোধ ফুল না ছেঁড়ার।’

নৌকার মাঝি তাহির মিয়া বলেন, ‘এখন মাছ ধরা বাদ দিয়ে নৌকা চালিয়েই ভালো আয় হচ্ছে।’

মির্জাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু আজম জানান, ‘লাল শাপলা রাতে ফোটে। তাই ভোরেই এলে পাওয়া যায় বিলের আসল রূপ।’

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, ‘লাল শাপলা এখন শ্রীমঙ্গলের অন্যতম আকর্ষণ। পর্যটকদের সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

প্রকৃতির রঙিন সাজে সজ্জিত লাল শাপলার এই রাজ্য শুধু পর্যটনকে সমৃদ্ধ করছে না, স্থানীয় অর্থনীতিকেও প্রাণ দিচ্ছে। অনাবিল এই সৌন্দর্য দেশের পর্যটন মানচিত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।



সিলেটের খবর এর আরও খবর

img

কোম্পানীগঞ্জে ঘর থেকে ধরে নিয়ে ৬ বছরের শিশুকে যৌন নির্যাতন

প্রকাশিত :  ১৫:৩৯, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে ছয় বছরের এক শিশু যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে। আক্রান্ত শিশুর চিৎকারে এলাকাবাসী অভিযুক্ত যুবককে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেছে। আক্রান্ত শিশুকে কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

এলাকাবাসী জনানা, বুধবার দুপুরে ওই শিশু (৬) কে নিজ বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায় প্রতিবেশি আব্দুর মছাব্বির ওরফে মনা। এর পর নির্জন স্থানে যৌন নির্যাতনের চেষ্টা করে। শিশুটি চিৎকার শুরু করলে এলাকাবাসী সেখানে চলে আসে। ঘটনার পরপরই শিশুকে উদ্ধার হয়।

অভিযুক্ত আব্দুর মছাব্বির ওরফে মনা (২১) কে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। কোম্পানীগঞ্জের ডাকঘর গ্রামের বাসিন্দা।

কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রতন শেখ জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরই পুলিশ শিশুকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিকেও হেফাজতে রাখা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।