img

এআই ব্যবহার করে পণ্য নষ্ট দেখিয়ে রিফান্ড, বাড়ছে প্রতারণা

প্রকাশিত :  ১০:০১, ৩০ নভেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১০:০৪, ৩০ নভেম্বর ২০২৫

এআই ব্যবহার করে পণ্য নষ্ট দেখিয়ে রিফান্ড, বাড়ছে প্রতারণা

চীনের ‘ডাবল ইলেভেন’ শপিং ফেস্টিভ্যালকে কেন্দ্র করে অনলাইন বিক্রেতারা নতুন এক ধরনের প্রতারণার মুখোমুখি হচ্ছেন। ক্রেতাদের একটি অংশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে পণ্য নষ্ট হয়েছে—এমন ভুয়া ছবি তৈরি করে রিফান্ড দাবি করছে। এই প্রবণতা নৈতিক ও আইনি উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে বলে জানিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।

প্রতারণার কৌশল হিসেবে প্রথমে ক্রেতারা আসল পণ্যের ছবি তোলে, পরে এআই দিয়ে সেটিকে পচা, ভাঙা বা ক্ষতিগ্রস্ত দেখিয়ে বিক্রেতার কাছে পাঠায়। একজন ফল বিক্রেতা অভিযোগ করেন, তার পাঠানো তাজা ফলের ছবি এআই সম্পাদনার মাধ্যমে পচা দেখিয়ে রিফান্ড দাবি করা হয়।

ইলেকট্রিক টুথব্রাশ বিক্রেতা একজন জানান, একজন ক্রেতা তাকে মরিচা ধরা টুথব্রাশের ছবি পাঠিয়ে অর্থ ফেরত চান—যা বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন। তিনি বলেন, অনেক অভিযোগই ‘মৌলিক যুক্তিবোধের বাইরে’।

একটি পোশাক দোকানের কর্মী বলেন, একজন ক্রেতা এক পিস ড্রেসের কলার ছেঁড়া বলে দাবি করেন এবং যে ছবিটি পাঠান, সেটিতে অস্বাভাবিক আলো আর এআই এডিটিংয়ের স্পষ্ট চিহ্ন চোখে পড়ে।

আরেক ঘটনায়, সিরামিক মগ বিক্রেতা জানান, একজন ক্রেতা মগে মাকড়সার জালের মতো ফাটলের ছবি দেখিয়ে পুরো রিফান্ড চান। নিরাপদ প্যাকেজিং হওয়ায় তিনি বিষয়টি সন্দেহ করেন এবং ভিডিও চাইতেই ক্রেতা অভিযোগ তুলে নেন। পরে ছবিটি এআই-ডিটেক্টরে পরীক্ষা করে দেখা যায়—৯২% সম্ভাবনা এটি কৃত্রিমভাবে তৈরি।

বহুদিন ধরেই চীনা অনলাইন বিক্রেতারা ‘শিপ শিয়ারার্স’ নামের এক চক্রের বিরুদ্ধে লড়ছেন—যারা কম দামের পণ্যে সামান্য ত্রুটি দেখিয়ে রিফান্ড নেয় কিন্তু পণ্য ফেরত দেয় না। বিক্রেতাদের অভিযোগ, অনেক সময় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো যথাযথ প্রমাণ ছাড়াই ক্রেতাদের পক্ষ নেয়। 

এমনকি কিছু বিক্রেতাও এআই ব্যবহার করে পণ্যকে বাস্তবের চেয়ে ভালো দেখিয়ে বিক্রির চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এসব প্রতারণা ঠেকাতে চলতি বছরের এপ্রিলে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো ‘রিফান্ড অনলি’ অপশন বাতিল করেছে। আলিবাবার টাওবাও ও টিমল ক্রেতাদের রিফান্ড আচরণ, ক্রয় ইতিহাস ও বিক্রেতার মতামতের ভিত্তিতে ক্রেতার ‘ক্রেডিট স্কোর’ নির্ধারণের ব্যবস্থাও করেছে।

এ ছাড়া ১ সেপ্টেম্বর থেকে চীন এআই-নির্মিত সব ধরনের কনটেন্টে স্পষ্ট ও গোপন উভয় চিহ্ন যুক্ত করা বাধ্যতামূলক করেছে—যাতে ভুয়া তথ্য বা প্রতারণা কমানো যায়।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এর আরও খবর

img

প্রথমবার একযোগে তিন দেশে এইচআইভির টিকাদান শুরু

প্রকাশিত :  ০৬:৫৭, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৭:০১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রথমবারের মতো আফ্রিকার তিন দেশ ইসওয়াতিনি, দক্ষিণ আফ্রিকা ও জাম্বিয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে এইচআইভি প্রতিরোধে নতুন ইনজেকশন ‘লেনাকাপাভির’ প্রয়োগ শুরু করেছে। মহাদেশটিতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি এইচআইভি আক্রান্ত মানুষ থাকায় এই উদ্যোগকে বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বছরে মাত্র দুবার নেওয়া এই ইনজেকশন সংক্রমণের ঝুঁকি ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি কার্যত একটি শক্তিশালী প্রতিরোধক টিকার মতো কাজ করবে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রতি পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্কের একজন এইচআইভিতে আক্রান্ত। সেখানে উইটস ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণা দল পুরো কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করছে। এই প্রকল্পটি জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা ইউনিটেইডের অর্থায়নে চলছে।

ইউনিটেইড জানিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকার জনগণই প্রথম নিয়মিত প্রতিরোধের অংশ হিসেবে লেনাকাপাভির ব্যবহার শুরু করেছেন। তবে কতজন প্রথম ডোজ পেয়েছেন, তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রে এই ওষুধের এক বছরের খরচ প্রায় ২৮ হাজার ডলার, যা অধিকাংশের নাগালের বাইরে।

জাম্বিয়া ও ইসওয়াতিনি যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে ১ হাজার ডোজ পেয়েছে। বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে এ ইনজেকশন সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হচ্ছে।

এদিকে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গিলিয়াড সায়েন্সেস আগামী তিন বছরে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর ২০ লাখ মানুষকে লেনাকাপাভির বিনালাভে সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যদিও সমালোচকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক দাতাদের দেওয়া ডোজ এখনো প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম, আর ওষুধের দামও অত্যন্ত বেশি। সূত্র : এনডিটিভি