img

কোভিড ভ্যাকসিন হালাল না হারাম?

প্রকাশিত :  ১৫:১২, ১৪ জানুয়ারী ২০২১
সর্বশেষ আপডেট: ১৫:৫৩, ১৪ জানুয়ারী ২০২১

ড. জাকি রেজওয়ানা আনোয়ার FRSA

কোভিড ভ্যাকসিন হালাল না হারাম?

যে কোন ভ্যাক্সিন গ্রহণের আগে ভ্যাক্সিনটি সম্পর্কে মনের মধ্যে উঁকি দেওয়া সব প্রশ্নের জবাব আদায় করার অধিকার প্রতিটি মানুষের রয়েছে। কোন প্রশ্নই ছোট নয় - অবান্তর তো নয়ই!

গত কয়েক  মাস ধরেই বিভিন্ন মিডিয়াতে, অনলাইনে, অফলাইনে ভ্যাক্সিন নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি, হচ্ছি। দু:খজনকভাবে ইনফরমেশন  এবং মিসইনফরমেশনের একটি অসমসত্ব মিশ্রণে এসব প্রশ্নের উত্তরের নানা ভার্সন ইতোমধ্যেই বাজারে চালুও রয়েছে। এ আর নতুন কি?

আমার মতে প্যান্ডেমিক এবং  ইনফোডেমিক দুটোই ভয়ঙ্কর।ঐতিহাসিকভাবে ইনফোডেমিক প্যান্ডেমিককে দীর্ঘায়িত করেছে, এবারের কোভিড প্যান্ডেমিকেও তার ব্যতিক্রম হয় নি।



কোভিড ভ্যাক্সিন নিয়ে ধর্মীয় গুরুদের মধ্যে দু'ধরনের মতবাদ রয়েছে। আসুন এর বৈজ্ঞানিক তথ্য থেকে আমরা বিষয়টি বুঝে নেই। সেটি বোঝার জন্যে আমাদেরকে প্রথমেই জেনে নিতে হবে একটি ভাইরাসের ভ্যাক্সিনের উপাদানগুলো কি কি?

ভ্যাক্সিনে প্রধান যে উপাদানটি থাকে তা হচ্ছে এক্টিভ ইনগ্রিডিয়েন্ট। এই এক্টিভ ইনগ্রিডিয়েন্ট হিসেবে কখনো ব্যবহার করা হয় জীবিত কিন্তু একবারে দুর্বল ক'রে দেওয়া ভাইরাস, অথবা মৃত ভাইরাস অথবা ভাইরাসের দেহের একটি অংশ। এই এক্টিভ ইনগ্রিডিয়েন্টটি এমনভাবে দেওয়া হয় যাতে এটি আপনার শরীরে প্রবেশ করালে আপনি অসুস্থ হবেন না, কিন্তু আপনার শরীর চিনে রাখবে এই শত্রুকে যাতে ভবিষ্যতে এই শত্রু অর্থাৎ এই ভাইরাস আক্রমণ করলে আপনার শরীর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে। এই এক্টিভ ইনগ্রিডিয়েন্ট ছাড়া  বিশেষ করে যেসব ভ্যাক্সিন ইনজেকশনের মাধ্যমে দেওয়া হয় সেগুলোতে পানি থাকে।

এই ভ্যাক্সিনে বিশেষ করে যেসব ভ্যাকসিন জীবিত ভাইরাস থেকে তৈরীর করা হয় সেসব ভ্যাক্সিনকে সংরক্ষণ এবং স্থিতিশীল  রাখতে ষ্টেবিলাইজার হিসেবে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন ধরনের যৌগিক লবণ অথবা চিনি অথবা প্রাণীর দেহ থেকে নেওয়া জেলাটিন। ভ্যাক্সিন তৈরীর সময় দেখা হয় কোন্ ষ্টেবিলাইজার ব্যবহার করলে ঐ ভ্যাক্সিনটি সব চাইতে সুরক্ষিত থাকবে আর এর কার্যকারিতা অটুট থাকবে।  এখন প্রশ্ন উঠতে পারে এই জেলাটিন তৈরীর করা হয় কিভাবে?

বিভিন্ন প্রাণীর যেমন: মাছ, মুরগী, গরু ও শুকরের দেহ থেকে কোলাজেন নামের এক ধরনের প্রোটিন নিয়ে তাকে হাইড্রোলাইজ করে অর্থাৎ পানির সঙ্গে মিশিয়ে একেবারে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণায় ভেঙে তা ভ্যাক্সিনে ব্যবহার করা হয়। শুকরের দেহ থেকে যে জেলাটিন তৈরীর করা হয় তাকে বলা হয় 'পোর্সাইন জেলাটিন'।

বৃটেনে এ পর্যন্ত যে তিনটি ভ্যাক্সিনকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে (অক্সফোর্ড এষ্ট্রাজেনেকা,ফাইজার বায়োন্টেক ও মডেরনা) সেগুলোর সব উপাদানগুলো পড়লেই যে কেউ নিশ্চিত হতে পারবেন যে এগুলোর কোনোটিতেই পোর্সাইন জেলাটিন বা শুকরের দেহ থেকে তৈরী জেলাটিন নেই। এই তথ্যটি পাবলিক ডমেইন - যে কেউ চাইলে এই ভ্যাক্সিনের উপাদানগুলো কি তা পড়ে নিতে পারেন।

বৃটেনে ইমিউনাইজেশন প্রোগ্রামের মাধ্যে তিনটি ভ্যাকসিনে পোর্সাইন জেলাটিন রয়েছে: (১) শিশুদের মাম্পস, মিসেলস ও রুবেলা প্রতিরোধে  এম-এম-আর ভ্যাক্সিনের একটি ভার্সনে (২) নেজাল স্প্রেয় ফ্লু ভ্যাকসিন যা বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে কোনো কোনো শিশুদের দেওয়া হয় ফ্লু থেকে রক্ষার জন্যে (৩) জোষ্টাভ্যাক্স যা বয়স্কদের শিঙেলস থেকে রক্ষা করার জন্য দেওয়া হয়।

নেজাল স্প্রেয় ভ্যাক্সিনের উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা গেছে খুব শক্তিশালী অনুবিক্ষণ যন্ত্র দিয়েও এই ভ্যাক্সিনে শুকরের দেহের ডি এন এ খুঁজে পাওয়া যায় নি। অর্থাৎ এটি যে শুকরের দেহ থেকে নেওয়া হয়েছে সেটি বোঝারই উপায় নেই।


ইন্দোনেিশয়ার ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ চীনের ভ‍্যাকসিনকে হালাল ঘোষনা দেয়ার পর সেদেশের প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে টিকা নেন।

মাত্র দু'বছর আগে ইন্দোনেশিয়াতে হঠাৎ করে শিশুদের মধ্যে মিসেলসের প্রকোপ বেড়ে গিয়েছিল সামাজিক মাধ্যমে ভ্যাক্সিন বিরোধী প্রচারণার ফলে। যারা এ ধরনের তথ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছেন তাদের বেশীরভাগই সঠিক তথ্যগুলো জানতেন না। কাজেই মোরাল অফ দ‍্যা স্টোরি হচ্ছে, আপনার খুব কাছের বন্ধুও যদি কোন তথ্য পাঠায়  তাহলে যাচাই বাছাই না করে কাউকে ফরোয়ার্ড করবেন না, বিশেষ কোরে তা যদি হয় জনস্বাস্থ্যের জন্যে হুমকিস্বরূপ কোন তথ্য।।

(ড. জাকি রেজওয়ানা আনোয়ার FRSA, মা ও শিশু বিশেষজ্ঞ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও সংবাদ পাঠক)

মতামত এর আরও খবর

img

দুর্লভ খনিজ উপাদান: কেন যুক্তরাষ্ট্রের এগুলো প্রয়োজন এবং কেন এগুলো যুক্তরাষ্ট্র–চীন বাণিজ্যযুদ্ধে কৌশলগত অস্ত্র হয়ে উঠেছে

প্রকাশিত :  ১১:২৪, ০৫ নভেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১১:৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৫

অনুপম সাহা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ ও ‘রেয়ার আর্থ’-এর গুরুত্ব

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে দুর্লভ খনিজ উপাদানসমূহ (Rare Earth Elements – REEs)। এই ১৭টি রাসায়নিক উপাদান আধুনিক প্রযুক্তির মূলভিত্তি — এগুলো ব্যবহার হয় ইলেকট্রিক গাড়ি, কম্পিউটার চিপ, জেট ইঞ্জিন, উইন্ড টারবাইন, স্মার্টফোন, এমনকি উন্নত সামরিক অস্ত্র তৈরিতে।

যদিও প্রকৃতিতে এগুলো তুলনামূলকভাবে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়, কিন্তু বিশুদ্ধভাবে আলাদা করা কঠিন এবং পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। দীর্ঘ কয়েক দশকের বিনিয়োগ ও রাষ্ট্রীয় সহায়তায় চীন আজ এই খনিজগুলোর খনন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে প্রায় একচেটিয়া কর্তৃত্ব অর্জন করেছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চীন রেয়ার আর্থ রপ্তানিতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে—যা যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পখাতে বড় ধাক্কা দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি বেইজিংয়ের সচেতন কৌশল, যাতে তারা এই খনিজ আধিপত্যকে বাণিজ্য আলোচনায় ‘বাঁধা কার্ড’ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।

রেয়ার আর্থ কী এবং কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

রেয়ার আর্থ হলো ১৭টি রাসায়নিকভাবে মিল থাকা উপাদান, যা উচ্চপ্রযুক্তি শিল্পে অপরিহার্য। নামগুলো যেমন— নিওডিমিয়াম (Neodymium), ইট্রিয়াম (Yttrium), ইউরোপিয়াম (Europium)—শুনতে অপরিচিত লাগলেও, এগুলোর ব্যবহারে তৈরি পণ্য আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

নিওডিমিয়াম: শক্তিশালী চুম্বক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়, যা ইলেকট্রিক মোটর, হার্ড ড্রাইভ, স্পিকার ও উইন্ড টারবাইনে অপরিহার্য।

ইট্রিয়াম ও ইউরোপিয়াম: টেলিভিশন ও কম্পিউটার স্ক্রিনে উজ্জ্বল রঙ তৈরি করে।

ল্যান্থানাম: ক্যামেরা লেন্স ও আলোক সরঞ্জামে ব্যবহৃত হয়।

সেরিয়াম: গাড়ির ক্যাটালাইটিক কনভার্টারে ব্যবহৃত হয় যা দূষণ কমায়।

প্রাসিওডিমিয়াম ও গ্যাডোলিনিয়াম: বিমান ইঞ্জিন, এমআরআই যন্ত্র ও নিউক্লিয়ার প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত হয়।

জিঞ্জার ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের পরিচালক টমাস ক্রুমার বলেন,

“যে কোনো জিনিস যা অন-অফ করা যায়—সেগুলো কোনো না কোনোভাবে রেয়ার আর্থের ওপর নির্ভরশীল।”

 কেন রেয়ার আর্থ চীন–যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় এক বড় ‘বাণিজ্য হাতিয়ার’

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এখনো “হেভি” রেয়ার আর্থ প্রক্রিয়াকরণের সক্ষমতা নেই, অথচ চীন নিয়ন্ত্রণ করে বিশ্বের প্রায় ৯০% প্রক্রিয়াজাতকরণ ক্ষমতা। ফলে বেইজিং শক্তিশালী কৌশলগত অবস্থানে রয়েছে। 

২০২৫ সালের ৯ অক্টোবর চীন নতুন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ঘোষণা করে—এটি আসে ঠিক কয়েক সপ্তাহ আগে, যখন APEC সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি ইচ্ছাকৃত সময়-নির্বাচন—যেন আলোচনায় চীন অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে। 

রেয়ার আর্থের ব্যবহার সামরিক সরঞ্জাম, সেমিকন্ডাক্টর ও উন্নত প্রযুক্তিতে হওয়ায় এটি কেবল বাণিজ্যিক নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নেও পরিণত হয়েছে।

চীনের বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইনের নিয়ন্ত্রণ

আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (IEA) তথ্য অনুযায়ী, চীন ৬১% রেয়ার আর্থ উৎপাদন এবং ৯২% প্রক্রিয়াজাতকরণ নিয়ন্ত্রণ করে। এই আধিপত্য এসেছে বছরের পর বছর রাষ্ট্রীয় ভর্তুকি, কম উৎপাদন খরচ ও দুর্বল পরিবেশনীতির কারণে।

চীনের সাবেক নেতা দেং শিয়াওপিং ১৯৯২ সালে বলেছিলেন,

“মধ্যপ্রাচ্যের কাছে তেল আছে, আর চীনের কাছে আছে রেয়ার আর্থ।”

আজ তার সেই ভবিষ্যদ্বাণীই বিশ্ব অর্থনীতির বাস্তব চিত্রে রূপ নিয়েছে।

রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ও উত্তেজনার বৃদ্ধি

যুক্তরাষ্ট্র নতুন শুল্ক আরোপের পর চীন সাতটি “হেভি” রেয়ার আর্থে রপ্তানি সীমাবদ্ধতা জারি করে। এখন এই খনিজ বা সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি রপ্তানিতে বিশেষ অনুমতি লাগে।

অক্টোবর ২০২৫-এ চীন আরও পাঁচটি উপাদান ও সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিকে নিয়ন্ত্রণ তালিকায় যোগ করে। যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে এটি “অর্থনৈতিক জবরদস্তি” এবং “বিশ্ব সরবরাহ শৃঙ্খল দখলের চেষ্টা।”

এই উপাদানগুলো বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা শিল্পে — যেমন F-35 যুদ্ধবিমান, টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র, ও রাডার সিস্টেম তৈরিতে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া ও চ্যালেঞ্জ

২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৭০% রেয়ার আর্থ আমদানি এসেছে চীন থেকে। দেশে একটি খনি থাকলেও এর আকরিক এখনো চীনে পাঠাতে হয় প্রক্রিয়াকরণের জন্য।

ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেন ও গ্রীনল্যান্ডের সঙ্গে খনিজ সরবরাহ চুক্তির চেষ্টা করছে, কিন্তু রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও পরিবেশগত বাধা অগ্রগতিকে ধীর করছে।

ব্রিটেনের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. গ্যাভিন হার্পার সতর্ক করেছেন,

“এই ঘাটতি অব্যাহত থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপ্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা শিল্পে উৎপাদন বিলম্ব ও খরচ বৃদ্ধি পাবে।”

সাম্প্রতিক অগ্রগতি: এক বছরের অস্থায়ী সমঝোতা

রয়টার্স জানিয়েছে, ২০২৫ সালের ৩০ অক্টোবর চীন ও যুক্তরাষ্ট্র এক বছরের একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে—চীন রপ্তানি অব্যাহত রাখবে এবং যুক্তরাষ্ট্র কিছু শুল্ক কমাবে।

দ্য গার্ডিয়ান এটিকে চীনের “শক্তিশালী বাণিজ্য অস্ত্র” বলে উল্লেখ করেছে, আর পলিটিকো জানায়, কানাডা নেতৃত্বাধীন জি৭ দেশগুলো এখন চীনের ওপর নির্ভরতা কমানোর উদ্যোগ নিচ্ছে।

তবে আল জাজিরার মতে, চীনের নতুন রপ্তানি নিয়ম—যা ট্রাম্প–শি বৈঠকের ঠিক আগে কার্যকর হয়—ইঙ্গিত দেয় যে বেইজিং ভবিষ্যতেও এই খনিজ আধিপত্যকে আলোচনার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে।

শি–ট্রাম্প বৈঠকের তাৎপর্য

বিশ্ব অর্থনীতির দৃষ্টি ছিল এই বৈঠকের দিকে। ট্রাম্প বলেছিলেন, “চীনের আর কোনো বাধা নেই”, কিন্তু বেইজিং এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। যেহেতু বিশ্বে রেয়ার আর্থ প্রক্রিয়াজাতকরণের ৯০% চীনের হাতে, তাই যেকোনো সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক বাজারে বিশাল প্রভাব ফেলতে পারে।

যদি এই চুক্তি স্থায়ী হয়, তাহলে তা বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনকে কিছুটা স্থিতিশীল করতে পারে। কিন্তু ব্যর্থ হলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা বিকল্প উৎস তৈরির চেষ্টা ত্বরান্বিত করবে—যা ভবিষ্যতে বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা কাঠামোকে আমূল পরিবর্তন করতে পারে।

সারসংক্ষেপ

রেয়ার আর্থ কেবল খনিজ নয় — এটি আধুনিক প্রযুক্তির ভিত্তি এবং এখন এক নতুন ভূরাজনৈতিক মুদ্রা। চীনের এই খনিজ নিয়ন্ত্রণ তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় অসাধারণ প্রভাবশালী করেছে। ফলে, এই উপাদানগুলো কেবল শিল্প বা বাণিজ্যের বিষয় নয়, বরং বৈশ্বিক শক্তির ভারসাম্য নির্ধারণের অন্যতম উপাদান হয়ে উঠেছে।


অনুপম সাহা: একাউন্টেন্ট, কলামিস্ট

মতামত এর আরও খবর