ধর্মের লেবাসে প্রতারণা: নিরীহ মানুষের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী!
প্রকাশিত :
০৬:১৩, ১৬ আগষ্ট ২০২৫
বাংলাদেশের সমাজ ধর্মপ্রাণ। এখানে ধর্মীয় অনুশাসন ও বিশ্বাস মানুষের জীবনের অন্যতম ভিত্তি। কিন্তু সেই বিশ্বাসকেই পুঁজি করে প্রতারণার নতুন কৌশল গড়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে, এক শ্রেণির মানুষ বাহ্যিক ধর্মীয় লেবাস পরে নিরীহ ও সহজ-সরল মানুষদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এরা নিজেদের ‘আল্লাহভীরু’ হিসেবে উপস্থাপন করে, অথচ অন্তরালে পরিকল্পনা সাজায়—কীভাবে বিশ্বাসকে ব্যবহার করে ব্যবসা চালানো যায়।
গালভরা দাড়ি, মাথায় টুপি, হাতে তসবিহ—এসব দেখে সাধারণ মানুষ সহজেই ধরে নেন তিনি একজন ধার্মিক ও সৎ ব্যক্তি। ধর্মীয় আবহে মোড়ানো এই লেবাস আসলে প্রতারণার ঢাল হয়ে উঠছে। একজন ধর্মপ্রাণ মানুষকে যেমন দেখানো হয়, তেমনই সাজসজ্জা করে তারা নিরীহ মানুষকে আস্থার ফাঁদে ফেলছে।
অভিযোগ রয়েছে, এরা কুরআন ও হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে মিষ্টি কথার জাল বোনে। অনেকেই ছোট ছোট দরবার বা ওয়াজ মাহফিলে বসে মানুষের আবেগ নাড়িয়ে দেন। আল্লাহর ভয়, আখেরাতের হিসাব, দান-খয়রাতের সওয়াব—এসব বিষয়ে সুন্দর বক্তৃতা সাজিয়ে মানুষকে বিশ্বাস করানো হয়। এরপর কেউ মসজিদ নির্মাণের অনুদান, কেউ এতিমখানার জন্য সাহায্য, কেউবা ‘বিশেষ দোয়া’র বিনিময়ে টাকা দাবি করে।
ঢাকার মিরপুরে সম্প্রতি এক প্রতারক চক্র ধরা পড়েছে, যারা \"কুরআন শেখার দোয়া\" নামে ভুয়া তসবিহ ও তাবিজ বিক্রি করে কয়েক মাসে প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। একইভাবে চট্টগ্রামে এক ভণ্ড পীর ধরা পড়েন, যিনি দোয়া-পথ্য দিয়ে রোগ সারানোর দাবি করে প্রায় ৫০০ পরিবারকে সর্বস্বান্ত করেন।
এই প্রতারণার শিকার হচ্ছেন মূলত নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ধর্মপ্রাণ মানুষ। তাঁরা ধর্মীয় আবেগে সহজেই বিশ্বাস করে ফেলেন এবং ভেবে নেন—\"এ কাজ করলে সওয়াব হবে।\" অনেক সময় দেখা যায়, মাসিক অল্প আয়ের পরিবারও শেষ সম্বল থেকে টাকা দিয়ে দেয়। পরে যখন সত্য প্রকাশ পায়, তখন লজ্জা ও অপমানে অনেকে বিষয়টি প্রকাশ করতে চান না। বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে ধর্মের নামে প্রতারণার অভিযোগে ৭০০টিরও বেশি মামলা হয়েছে।
এ ধরনের প্রতারণা শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতিই করছে না, বরং ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপরও আঘাত হানছে। মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে—কে প্রকৃত ধার্মিক আর কে ভণ্ড? একদিকে প্রতারণায় ক্ষতিগ্রস্তরা ধর্মের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন, অন্যদিকে প্রকৃত আলেম-ওলামাদেরও প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। ধর্মীয় আবেগকে পুঁজি করে ব্যবসা করার কারণে ধর্মের পবিত্র ভাবমূর্তি কলুষিত হচ্ছে।
ধর্মীয় শিক্ষার আলোকে প্রতারণার নিন্দা
ইসলামে প্রতারণাকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হাদিসে এসেছে—
“যে ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।” (সহিহ মুসলিম)
অন্য এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,
“সৎ ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন নবী, সিদ্দিক ও শহীদদের সঙ্গে থাকবে।” (তিরমিজি)
অতএব, ধর্মকে ব্যবসা বা প্রতারণার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা ইসলামের মৌলিক শিক্ষার পরিপন্থী। অথচ এই ভণ্ডরা সেই শিক্ষাকেই বিকৃত করে মানুষের সর্বনাশ করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারুক আহমেদ বলেন, “ধর্মীয় আবেগকে পুঁজি করে প্রতারণা সমাজে আস্থার সংকট তৈরি করছে। মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে—কারা প্রকৃত ধার্মিক আর কারা নয়। এটি দীর্ঘমেয়াদে নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে দিতে পারে।”
ধর্মীয় বিশ্লেষকরা বলছেন, সমাজে প্রকৃত ইসলামি শিক্ষার প্রচার বাড়াতে হবে। ইসলাম কখনো বাহ্যিক লেবাস নয়, বরং আচার-আচরণ ও সততার মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
করণীয়
১. সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি: মানুষকে বুঝতে হবে, বাহ্যিক সাজসজ্জা দেখে কারও প্রতি অন্ধ আস্থা রাখা উচিত নয়।
২. আইনের কঠোর প্রয়োগ: ধর্মের নামে প্রতারণাকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৩. প্রকৃত আলেমদের ভূমিকা: ভণ্ডদের মুখোশ উন্মোচন করে মানুষকে সচেতন করতে হবে।
৪. গণমাধ্যমের দায়িত্ব: প্রতারণার কৌশল ও ঘটনার উদাহরণ তুলে ধরে মানুষকে সাবধান করতে হবে।
ধর্ম মানুষের হৃদয়ের সঙ্গে জড়িত। এর পবিত্রতা ও সততার ওপর সমাজের স্থিতিশীলতা নির্ভর করে। কিন্তু যখন অসাধু ব্যক্তিরা ধর্মকে পুঁজি করে প্রতারণার ব্যবসা চালায়, তখন তা শুধু আর্থিক ক্ষতি নয়, সমাজে আস্থার সংকটও তৈরি করে। তাই এ ধরনের অপকর্ম রোধে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র—সবাইকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। না হলে ভণ্ডদের প্রতারণায় নিরীহ মানুষ প্রতারিত হতে থাকবে, আর ধর্মের পবিত্রতা কলঙ্কিত হবে।
প্রকাশিত :
০৭:৩৬, ১৭ অক্টোবর ২০২৫ সর্বশেষ আপডেট: ০৭:৫২, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
নুজহাত নূর সাদিয়া
আহা ! বুকের পাঁজর ভাঙা গগনবিদারী আর্তনাদ , নাহ-কোন নিরব জঠর যন্ত্রনায় কুঁকড়ে যাওয়া গর্ভবতী মায়ের নবজাতক জন্ম দেওয়ার অবিস্মরণীয় ক্ষণটি উদযাপনের আনন্দচ্ছোস নয়, এ যে সহস্র দিনের গ্লানি শেষে এক নিকষ কালো আঁধার পেরিয়ে মাতৃভূমির বুকে নির্ভীক পা রাখা । আবার সেই চিরপরিচিত সবুজ দুর্বা ঘাসে ছুঁটে বেড়ানো , বাড়ন্ত স্কোয়াশের পূর্ণ ঝুঁড়ি, মাংসের রসাল স্যুপ, হাতে বানানো গমের রুটি সহযোগে উদর পূর্তির সেই পারিবারিক সুখস্মৃতি , মায়ায় জড়ানো বছর পার করে দেওয়া সংগ্রামী পরিবারগুলো ফিরে কি পাবে তাদের সেই প্রাণোচ্ছল ফিলিস্তিন । বহু চর্চিত এই প্রশ্নটির উত্তর অজানা আশংকা আর অনিশ্চয়তার অদৃশ্য গেরোতে আটকে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল থাকলে ও বিপরীত শিবিরে ও বহু দিনের ঘরবন্দী প্রিয়মুখগুলো স্বজনদের বাহুডোরে ফেরার অপেক্ষায় । আগ্রাসী ইসরায়েলের ধূলো উড়ানো পথ ও যে আজ শান্তিকামী মানুষের স্বতস্ফূর্ত হাসিতে ভরপুর।
আনুষ্ঠানিক হিসেব অনুযায়ী, মোট হতাহতের সংখ্যা ৬৬,০০০ হাজার ছাঁড়িয়ে গেছে, জীবন-ভর পঙ্গুত্বের অভিশাপ নিয়ে বাঁচতে হবে ২,৫০,০০০ জন হতভাগ্যকে , বেঁচে যাওয়া অসংখ্য দুরন্ত শৈশব বাকিটা জীবন সম্ভবত এক দুর্বিসহ স্মৃতি নিয়েই বেঁচে থাকবে, আকাশ ছোঁয়া দালান , সুসজ্জিত স্থাপনা আর পুরাকীর্তির শহর ফিলিস্তিন আজ এক মৃতপ্রায় ভুতুড়ে নগরী ।
এই যে ক্ষতি , তা সন্দেহাতীতভাবেই অপূরণীয় ক্ষতি । নেতানিয়াহু নামের এক বিকট দানবের ব্যক্তিগত আক্রোশ আর অপরিণামদর্শী যুদ্ধ কৌশলের খেস ারত দিতে হল ফোরাত নদীর তীরবর্তী নিরীহ প্রাণগুলোর। বিশ্ব মানচিত্র হতে ফিলিস্তিন নামক ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলটি ( গাজা প্রায়২১ লক্ষ লোকের আবাস) মাত্র মাসখানিক আগে ও নিরবে মুছে যাচ্ছিল ধনী রাষ্ট্রের তাবেদার মুসলিম বিশ্বের অলস শাসনকর্তাদের নির্লিপ্ত আচরণের কারণে । মুসলমান ভাই -ভাই, জুলুমবাজের নিস্তার নাই, বিপন্ন মানবতা বহুল চর্চিত প্রবাদগুলো নিতান্তই খাঁচায় বন্দি তোতাপাখির মুখস্থ বুলির মত আউড়ে চলছিল বিশ্বরাজনীতির মোড়লরা । তবে কি, আমজনতার পরম আরাধ্য পার্থিব জীবনের ও সমাপ্তি আছে, আর সেই সমাপ্তি বরাবরই ইতিহাসের পাতায় লিখিত হয়েছে স্রষ্টার একান্ত ইচ্ছেয়, অসহায়ের পূর্ণ সমর্থনে আর দিনশেষে সত্য ও ন্যায়ের বিজয়ে ।
গৃহকোণের শান্তি গৃহকর্ত্রীর পরম প্রিয়, আর সেই শান্তির সুশীতল পরশ এ ভূগোলকের পরতে পরতে ছঁড়িয়ে দিতে যে উদ্যোগী মানুষগুলো অনন্য সাধারণ কাজগুলোকে বাস্তবতার আলো দেখান সে মানুষগুলোই কর্মকুশলতায় অর্জন করে নেন সর্ব্বোচ সম্মান -নোবেল । এ নোবেল প্রাপ্তি, কার ও দারিদ্র্য বিমোচনে, চলতি ‘২৫ সালে বিতর্কিত মারিয়া কোরিয়া মাচানো -যার রাষ্ট্রীয় নীতি বহু অসহায় মানুষকে দুর্ভোগের মুখে ঠেলে দিয়েছে, প্রাক্তন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি বারাক সহ শান্তিতে নোবেল পাওয়া আলোচিত মানুষগুলো পুরষ্কারের কোঠা না মানদন্ড না তাদের কাজের বিষয় এ সূক্ষèাতিসূক্ষè বিষয়গুলো
রীতিমত প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠছে।
কর্তার ইচ্ছেয় কর্ম, আর স্বেচ্ছাচারী কর্তা যখন নিজ খেয়াল-খুশি মত আইন -কানুন তৈরি করে অসহায়দের উপর তা জোরপূর্বক চাপিয়ে দেন তখন তা ঐতিহাসিকভাবে চলে আসা জায়ানবাদীদের আধিপত্য আর কতৃর্ত্ববাদের নির্মমতার করুণ পুনরাবৃত্তি বই আর কিছুই নয় । আর ও নির্মম কৌতুক, একদা জায়ানবধের রাজ্য বলে খ্যাত , হিটলারের জার্মান, মাঁখোর ফ্রান্স , কূটনৈতিক ব্রিটেন সহ দু‘মুখো আরব বিশ্ব সকলে এ নির্মম রসিকতায় সামিল ! দুনিয়া যে ক্ষমতা আর অর্থের পূজারী - পড়ন্ত বেলার প্রাজ্ঞ প্রবীণদের গভীর হতাশার সুরে তা সুস্পষ্ট ।
রুপকথার গল্পের চেয়ে ও বাস্তব জীবনের গল্প অনেকসময় অনেক বেশি সুন্দর হয়ে উঠে , হয়ে উঠে প্রকৃত রুপক নতুবা তার চেয়ে ও শক্তিশালী আখ্যান । বিশ টি বছর ধরে ক্ষুধা, দারিদ্র্য আর নানা প্রতিকুলতায় অবরুদ্ধ হামাস , ঠিক জিতে গেল সাহস আর দেশের প্রতি ভালবাসাকে হৃদয়ে লালন করে।
আর, সেই ছোট্ট গেরিলা সদস্যের দলটি আজ কত বড়! মানচিত্র ছাঁড়িয়ে , সীমানা ছাঁড়িয়ে নব প্রজন্মের অকুতোভয় হামাসরা আজ দুয়ারে দাঁড়ানো দৃঢ় দ্বাররক্ষী । তারাই পারে ,তথাকথিত অজেয় পশ্চিমা শক্তিকে শান্তিচুক্তি নামক সে নাটকীয় ঘটনার অন্যতম যোগানদার করতে। মার্কিন সরকার প্রধান উপযাচক মাত্র-পরিস্থিতি বুঝেই হয়তবা বন্ধুর পথে হাঁটতে চাইছেন, ঢাল হয়ে দাঁড়ানো বর্মটি যে ভিষণ শক্তপোক্ত ও একরোখা ।
তবে, মধ্যপ্রাচ্যে ছঁড়ি ঘুরানোর দীর্ঘদিনের শক্তলাঠিটি কে যে এবার বাঁকাতেই হয় । সাপ ও মরবে লাঠি ও ভাঙবে না, হায় বেনিয়ামিন কি অসম্মানের এক পরাজয় ! কি অপেক্ষা করছে দুর্নীতি মামলায় জর্জরিত বুড়ো নেকড়েটির কপালে -বিধ্বস্ত চেহারায় কপালের কুঞ্চিত রেখাগুলো দীর্ঘতর হচ্ছে বৈকি।
প্রতিরোধ, যুদ্ধের নামে আগ্রাসন আর বসতি স্থানান্তরের নামে বাস্তুচ্যুত লক্ষাধিক শরণার্থী , আনুষ্ঠানিক চুক্তির প্রাথমিক পর্যায় হয়তবা এখন পর্যন্ত বিজয় উদযাপনে ব্যস্ত । তবে নারীর প্রতি সম্মান রক্ষার্থে ট্রাম্প তার প্রাক্তন রাজনৈতিক প্রতিদন্বী বারাকের উপর সম্ভবত সচেতনভাবেই তার রাষ্ট্র পরিচালনার মেয়াদকালে বিতর্কিত সন্ত্রাসী বনাম ইসলামিক সেনাবাহিনী মতানৈক্যের বিষয়টির উপর ইঙ্গিত দিয়েছেন । আর , ব্রিটিশ সংসদে চিত্রিত ইরাক যুদ্ধের ভয়াবহতা স্মরণ করে পুরনো বন্ধু ব্লেয়ারের পদাংক অনুসরিত কিনা, তাই আপনমনে যাচাই-বাছাই করে চলেছেন।
পরিস্থিতির পরিবর্তিত মোড় , কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন লিখিত শান্তি চুক্তির যে ভিন্ন ভিন্ন ২০টি শর্ত শোভা পাচ্ছে তার সুচারু বাস্তবায়ন খোদ ট্রাম্পের পক্ষেই যথেষ্ট দুরুহ । পেন্ডুলামের কাঁটা চলমান, হঠকারী ছোটভাই একবার নয় বেশ ক‘বার বড় ভাইয়ের অবাধ্য হয়েছেন , আস্ত উড়োজাহাজ উপহার আর বন্ধুপ্রতীম কাতারের উপর অর্তকিত আক্রমণ । রক্তে যার খুনে নেশা সে পাগলা ঘোড়া কি আদৌ থামবে ? বিলুপ্ত হিজবুল্লা, হুতির হারিয়ে যাওয়া হামাসের নেতৃত্বের শক্তি ক্ষয় , সিরিয়ায় ভাঙ্গন, ইরানের সফল প্রতিরক্ষার ব্যুহ ভেদ- আপাত , দ্বিধাগ্রস্থ ইসরাইল প্রধান সফলতার মাপকাঠিতে আত্নতৃপ্তিতে ভুগতে পারেন হয়তবা । তবে,গাজামুখি সারি সারি ত্রাণবাহী গাড়ির বহরের দী¦প্ত যাত্রা কি তার রাতের ঘুম কেড়ে নেয় নি, নিশ্চিতভাবেই উত্তরটি হ্যা ।
কাঁকচক্ষু দৃষ্টিতে , দৃঢ়তা আর ন্যায়ের বিজয় তবে, অসম এ যুদ্ধে উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপের চড়া মূল্য দিতে হল হামাসকে। ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস , নিহত হন ১ হাজার ২০০ জন ইসরাইলি নাগরিক , প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা। এই যে অপরিণামদর্শী পদক্ষেপ সেই জীবননাশের মূল্য দিতে হল চরমভাবে-গত দু‘বছরে ৬৭,০০০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত । শক্তিশালী শত্রুর সাথে টক্কর লাগানো কি এত সোজা! লোকবল আর সামরিক শক্তিতে তুলনামূলক ভাবে পিঁছিয়ে, তবে কিনা নীতি আর ঈমানের শক্তিতে বরাবরি বলীয়ান হামাসিয়ানরা । তাই , এ ক্রান্তিকালে ও ধাপে ধাপে অধিকাংশ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল তারা, সর্বশেষ গাজায় ৪৮ জন বন্দী ছিলেন , বেঁচে যাওয়া সৌভাগ্যবান ২০ জন। আর্ন্তজাতিক দাতব্য সংস্থা রেডক্রসের মাধ্যমে দু‘ধাপে জীবিত জিম্মিদের ইসরায়েলের হাতে তুলে দেয় হামাস গত ১৩ই অক্টোবর । মৃতদের মাঝে চার জনের মরদেহ ফেরত দেওয়ার কথা ও জানিয়েছে তারা।অপরদিকে, প্রতিপক্ষ ইসরাইলের আচরণ রুঢ়তার সীমা আকাশ ছুঁয়েছে বহু আগেই-কারাগারে ফিলিস্তিনিদের অনাহারে রাখা এবং নিপীড়ন করা নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যৌন হয়রানির খবর ও পাওয়া গেছে । আর্ন্তজাতিক গনমাধ্যম আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি সাংবাদিক আল-রিমায়ি বলেন- এ দু‘টি বছরে তার ওজন কমেছে ৫০ কেজি ! হাড় সর্বস্ব শরীর জড়িয়ে কন্যার ব্যাকুল আর্তি, বাবা আমি ব্যাথা পাই ।
এখন আবার ট্রাম্পের নতুন চমক, ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপনাস্ত্র উপহার দিবেন এই পাগলাটে রাষ্ট্রপতি রাশান যুদ্ধ থামাতে । শুরু হওয়া আফগান -পাকিস্তান সংঘাতে ও তালেবান দের ভূমিকা নিয়ে এক নতুন চেহারার ব্যবসায়ীকে দেখা গেছে -জামাতা কুশনারের ব্যবসায়িক বুদ্ধির জুড়ি নেই রাজনৈতিক বুদ্ধিতে ও যে শ্বশুরকে ভবিষ্যতে টেক্কা দিতে সমর্থ হবেন তা তার সাম্প্রতিক স্রোত বুঝে চলার ই পরিপক্ক রুপ ।
আজকের এই পার্থিব পৃথিবীতে স্রোতস্বিনী টেমস নদী ব্যবহারের মাসকাবারি বিল পরিশোধের সময় ও যে অতি গুরুত্বপূর্ণ বাক্যটি মগজে নিত্য গেঁথে থাকে -প্রতিটি পানিবিন্দু পরিশোধে পাওনা প্রাপ্য ! অর্থাৎ, জীবনের অপর নাম পানি ও বাতাস সেবনে ও মূল্য চুকাতে হয়, তা যদি হয় কেনসিংটন নামক অভিজাত এলাকার মনোরম ব্যালকনির মুক্ত হাওয়া । বিনামূল্যে সেবা, সে তো অতীতের গাল গল্প । অথচ, নিঠুর ইসরাইলী বাহিনী গাজায় ৩০০০ জলপাই গাছ কেটে , অগণিত বন্য ও পোষা প্রাণী মেরে আক্ষরিক অর্থেই প্রকৃতিকে বিপন্ন করে তুলতে চাইছিল । সেই প্রকৃতিই কিনা আপন মহিমায় নতুন বোনা জলপাই গাছের পাশ দিয়ে ছুটন্ত শিশুদের সাদরে বরণ করছে যাদের খাঁচা ভর্তি প্রিয় পোষা পাখিটির গুঞ্জন।
ফিলিস্তিন বাসীদের প্রিয় ম্যান্ডেলা ‘ আল ফাত্তাহ ‘ এখন ও জায়ানবাদীদের জিম্মায় , ইসরাইলী সেনাবাহিনী তাকে যমের মত ভয় পায় -যার মুক্তির আলো দেখা এখন ও সংশয়ে ভরা । সন্দেহাতীতভাবেই, তিনিই প্যালেস্টাইনি জনগণের অবিস্বরণীয় মুক্তি সংগ্রামের পরবর্তী আন্দোলনের দিকপাল ।
আজকের দিনের ফ্রি পত্রিকাগুলোর অন্যতম স্লোগান-মুক্ত খবর, মুক্ত চিন্তা । আর বিশ্বজুঁড়ে এই প্রবল বিজয় উদযাপনে মানবতাবাদীদের একটাই আশা মুক্ত হোক মানবতা , জয় হোক শুভ বুদ্ধির।