img

ভাইরাল মডেল-নায়িকাদের পেশা যখন হানি ট্র্যাপ অপারেশন

প্রকাশিত :  ০৬:০৯, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

ভাইরাল মডেল-নায়িকাদের পেশা যখন হানি ট্র্যাপ অপারেশন

সাইফুল খান (স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট) : বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ইতিহাসে চলচ্চিত্রের একটি গৌরবময় অধ্যায় ছিল। রাজ্জাক, ববিতা, আলমগীর কিংবা সুচন্দা। তাঁদের অভিনয়, মর্যাদা ও সাংস্কৃতিক দায়বদ্ধতা ছিল বলেই মানুষ তাঁদের সম্মান করত। কিন্তু সময় বদলেছে। বিশেষ করে গত এক দশকে এমন এক সময় এসেছে, যখন \'নায়িকা\' শব্দটি একটি কৌতুক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনসব নারীরাও নিজেকে নায়িকা বলে পরিচয় দিয়েছেন, যাঁদের চলচ্চিত্রজীবন বলতে গেলে নেই বললেই চলে। কেউ কেউ মাত্র এক-দু’টি অখ্যাত সিনেমায় মূল বা পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেও মিডিয়ার আলোতে উঠে এসেছেন। কিন্তু কীভাবে?

এই প্রশ্ন থেকেই শুরু হয় এক অদৃশ্য প্রক্রিয়ার সন্ধান। দেখা যায়, এই ‘নায়িকারা’ সারা বছর আলোচনায় থাকেন সিনেমার কারণে নয়, বরং আপত্তিকর ভিডিও, ব্যক্তিগত স্ক্যান্ডাল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কিত ছবি কিংবা বিদেশ ভ্রমণের মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার কারণে। বিষয়টি নিছক এক নারীর ব্যক্তিগত আচরণ হিসেবে দেখলে ভুল হবে। বরং এর পেছনে রয়েছে একটি সুপরিকল্পিত অপারেশন, যার সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে রাষ্ট্রেরই কিছু গোষ্ঠী এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র।

এই ভাইরাল নায়িকাদের অধিকাংশেরই জীবনচিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তাঁদের উত্থান আকস্মিক এবং ব্যাকগ্রাউন্ড প্রায়শই অস্পষ্ট। তাঁদের মধ্যে কেউ ছিলেন বিউটি পার্লারের কর্মী, কেউ একজন রাজনীতিবিদের ‘চেনাজানা মানুষ’, কেউবা উঠতি মডেল। কিন্তু অল্প সময়েই তাঁরা বড় বড় ব্র্যান্ডের শুটিং, ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যে ঘনঘন সফর, ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে ছবি সবকিছুই পেয়ে যান।

এই অবস্থান তাঁদের দেয় আরও বড় সুযোগ। ক্ষমতাবানদের ঘনিষ্ঠতা অর্জন। বিশেষ করে, দেখা গেছে একাধিক ভাইরাল মডেল রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। তাঁদের সঙ্গে গোপন ভিডিও তৈরি হয়েছে, যা পরে ‘ফাঁস’ হয়েছে, কিংবা \'ব্যাকআপ\' হিসেবে নিরাপদে রাখা হয়েছে। এগুলোকে ঘিরে দেশের প্রশাসনে শুরু হয় এক নীরব ব্ল্যাকমেইলের সংস্কৃতি।যা কিনা ছিল একটি \'সফট কন্ট্রোল মেকানিজম\'।

এই প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয়েছে পুরনো এক গোয়েন্দা কৌশল হানি ট্র্যাপ। নারীর সৌন্দর্যকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয় এখানে। এতে মডেল বা তথাকথিত নায়িকা যেমন তাঁর ‘উন্নয়ন’ ঘটাতে পারেন, তেমনি তাঁকে দিয়ে কাজও আদায় করা যায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো- এই অপারেশন পরিচালনা করছিল কারা?

গভীরে অনুসন্ধান করলে উঠে আসে এক ভয়ংকর চিত্র

দেশের অভ্যন্তরে এই অপারেশন চালাচ্ছিল ফ্যাসিবাদ আমলে কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহল এবং তাদের নিয়ন্ত্রিত কিছু গোয়েন্দা ইউনিট। তাঁদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল রাষ্ট্রযন্ত্রের ভিতরে ভিতরে ‘কী চলছে’ তা জানতে পারা, প্রভাব বিস্তার করা এবং প্রয়োজনমতো ভিডিও ফাঁসের মাধ্যমে কাউকে হুমকি দেওয়া।

কিন্তু একে শুধু দেশি ষড়যন্ত্র বললে ভুল হবে। বিষয়টি আরও গভীর। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা RAW-এর দীর্ঘদিনের কৌশল হলো-প্রতিবেশী রাষ্ট্রে ‘সোশ্যাল ফ্যাব্রিক’ দুর্বল করে দেওয়া। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও নৈতিক কাঠামোকে নষ্ট করতে বিনোদন জগতে নেমে আসে এক ‘ভারতপন্থী’ ঢেউ। ভারতীয় টিভি সিরিয়ালের দখলে চলে যায় ঘরের পর্দা, ভারতীয় স্টাইলের পোশাক ও ভাবনার দখলে চলে যায় ফ্যাশন। এই ভাইরাল নায়িকাদের অনেককেই ভারতীয় মিডিয়া কিংবা প্রযোজকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে দেখা যায়। কেউ কেউ ভারত সফরে গিয়ে ‘বিশেষ সংযোগ’ তৈরি করে আসেন, যার সূত্র ধরে তাঁদের \'দ্রুত উত্থান\' শুরু হয়।

একটি উদাহরণই যথেষ্ট: একজন ভাইরাল নায়িকা, যিনি কোনো প্রথাগত সিনেমায় প্রধান চরিত্রে কখনও ছিলেন না, অথচ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। তাঁর নামে থাকা অসংখ্য ফ্ল্যাট, গাড়ি ও বিদেশ ভ্রমণের খরচের উৎস খুঁজে পাওয়া যায় না। কিন্তু তিনি নিয়মিত ভাইরাল। কখনো রাজনীতিবিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি, কখনো হঠাৎ করে হজে যাওয়া, আবার কখনো \'ভক্তদের জন্য লাইভ\' করে অন্তর্বাসে চা খাওয়ার ভিডিও। সবই যেন এক নির্দিষ্ট গেমপ্ল্যানের অংশ।

এখানেই স্পষ্ট হয়, এটি একটি সাংগঠনিক প্রক্রিয়া। একজন নারী এখানে কেবল ‘মিডিয়াম’ মাত্র। মূল লক্ষ্য হলো রাষ্ট্রীয় মনোযোগ ভিন্নদিকে সরানো, বিরোধীদের মুখ বন্ধ রাখা এবং জনগণের মানসিক কাঠামোকে ভেঙে দেওয়া। যখন মিডিয়া ভাইরাল নায়িকার ভিডিও নিয়েই ব্যস্ত থাকে, তখন গুম-খুন-দুর্নীতির খবর চাপা পড়ে যায়।

এটি কেবল একক একটি সরকারের বিষয় নয়। এটি একটি নিরব সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, যার পেছনে জড়িত রয়েছে আন্তর্জাতিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষ এবং দেশেরই কিছু বিশ্বাসঘাতক চক্র। তাই এই ভাইরাল নায়িকাদের আর ব্যক্তিগত ব্যর্থতা হিসেবে দেখা যাবে না। এরা মূলত একেকটি \'অপারেশনাল টুল\'। যাদের মাধ্যমে গোটা রাষ্ট্রের ভিতর থেকে নিয়ন্ত্রণের ছক আঁকা হয়ে গেছে বিগত আমলে।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন গণসচেতনতা, মিডিয়ার দায়িত্বশীলতা এবং সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সাংস্কৃতিক জাগরণ। সত্যিকার শিল্পী ও চিন্তাশীল মানুষেরা যদি আবার নেতৃত্বে না আসেন, তবে ভাইরাল নায়িকাদের এই অপারেশন ভবিষ্যতের জাতিকে আরও ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দেবে।


img

বাগ্‌দানের খবর নিজেই জানালেন ব্রিটিশ গায়িকা ডুয়া লিপা

প্রকাশিত :  ০৭:১৪, ১৫ জুন ২০২৫

ব্রিটিশ গায়িকা ডুয়া লিপা অবশেষে নানা জল্পনার অবসান ঘটালেন। নিজেই জানালেন তার বাগ্‌দানের খবর। ভক্তদের সেই বহু প্রতীক্ষিত ‘লাখ টাকার’ প্রশ্ন—ক্যালাম টার্নারের সঙ্গে তার বাগ্‌দান সেরেছেন কি না, তার উত্তর এল সরাসরি ডুয়ার কাছ থেকেই।

সম্প্রতি ব্রিটিশ সাময়িকী ভোগ-এ দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে ২৯ বছর বয়সী এই গায়িকা বলেন, ‘হ্যা, আমরা বাগ্‌দান সেরেছি। এটা ছিল খুবই রোমাঞ্চকর সময়। একসঙ্গে জীবন কাটানোর সিদ্ধান্তটা অনেক সুন্দর। সারা জীবন একে অপরের সেরা বন্ধু হয়ে থাকার ভাবনাই একে আরও বিশেষ করে তোলে।’

ডুয়া আরও জানান, বাগ্‌দানের আগে ক্যালাম তার বোন ও কাছের বন্ধুদের সঙ্গে পরামর্শ করে আংটিটি তৈরি করেছিলেন। তিনি বলেন,‘সে আমাকে ঠিক কতটা ভালো বোঝে, সেটা এই আংটি দেখেই বোঝা যায়।’

ডুয়ার বাগ্‌দানের গুঞ্জন প্রথম চাউর হয় গত বছরের বড়দিনে। বছরের শেষের দিকে তার হাতে একটি বিশেষ আংটি দেখা যায়, এরপর সবাই ধরেই নেয় বাগ্‌দান সেরেছেন ডুয়া। তবে তখন এ সম্পর্কে কিছুই জানাননি তিনি। এখন বাগ্‌দানের কথা স্বীকার করলেও কবে সেটা সেরেছেন, সেটা প্রকাশ করেননি ব্রিটিশ গায়িকা।

গায়িকা জানান, শিগগিরই তারা বিয়ে করতে চান তারা, তবে দিন-তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ডুয়া জানান, তার চলমান বিশ্বভ্রমণ কনসার্ট শেষ করেই বিয়ের দিনক্ষণ পাকা করবেন। চলতি বছরের ডিসেম্বরে মেক্সিকোতে শেষ হবে তার ওয়ার্ল্ড ট্যুর। ‘আমরা এ সময়টা উপভোগ করছি। আমি কখনো বিয়ে নিয়ে খুব একটা ভাবিনি, তবে বাগ্‌দানের পর বিয়ে নিয়ে রোমাঞ্চিত। বিয়ের দিন কী পরব, সেটা নিয়েই ভাবছি।’ বলেন ডুয়া।

এক বছরের বেশি সময় একসঙ্গে আছেন ডুয়া ও ক্যালাম। ৩৫ বছর বয়সী লন্ডনের এই অভিনেতা ‘ফ্যান্টাস্টিক বিস্টস’ ও ‘মাস্টার্স অব দ্য এয়ার’ দিয়ে পরিচিতি পান। ২০২০ সালে বিবিসি ওয়ানের ‘দ্য ক্যাপচার’ সিরিজে অভিনয়ের জন্য বাফটা মনোনয়নও পেয়েছিলেন তিনি।

বর্তমানে টার্নার ব্যস্ত নতুন কাজ নিয়ে। তিনি অভিনয় করছেন অ্যাপল টিভি প্লাসের নতুন সায়েন্স ফিকশন সিরিজ ‘নিউরোমান্সার’-এ; এটি তৈরি হচ্ছে উইলিয়াম গিবসনের ১৯৮৪ সালের উপন্যাস অবলম্বনে।