ক্ষমতার প্রতি লোভ: রাজনীতির কেন্দ্রে যখন ব্যক্তিস্বার্থ!
প্রকাশিত :
১৯:৪০, ০৩ জুলাই ২০২৫
রেজুয়ান আহম্মেদ
রাজনীতি আদর্শগতভাবে জনসেবার সর্বোচ্চ মাধ্যম। একসময় এই ধারণার মধ্যেই নিহিত ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্রের মূল্যবোধ এবং সাধারণ মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। অথচ বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা ক্রমেই সেই আদর্শ থেকে সরে গিয়ে বিপরীত পথে অগ্রসর হচ্ছে। আজ রাজনীতি কেবল সেবার মাধ্যম নয়—এটি পরিণত হয়েছে এক শ্রেণির মানুষের লোভ পূরণের হাতিয়ারে।
অনেক রাজনীতিবিদের কাছে ক্ষমতা এখন ব্যক্তিগত বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি। ক্ষমতায় আসীন হলেই অর্থ, প্রভাব, পদমর্যাদা ও নানাবিধ সুযোগ মিলবে—এ কথা এখন আর গোপন নয়। বরং গর্বের সঙ্গে বলা হয়, \"রাজনীতি করতে হলে খরচ করতে হয়\"—আর এই খরচের বিনিময়ে প্রত্যাশা থাকে ক্ষমতায় গিয়ে তা বহুগুণে আদায় করার।
এই লোভের সংস্কৃতি রাজনীতিকে পরিণত করেছে এক প্রতিযোগিতার ময়দানে, যেখানে জনসেবা নয়, বরং প্রশাসন, অর্থনীতি ও রাষ্ট্রযন্ত্রের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠাই মুখ্য লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। ফলে, যারা একসময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন, তারাই ক্ষমতায় এসে সেই অপকর্মের অংশীদার হয়ে পড়েন।
ক্ষমতার প্রতি এই অতিমাত্রিক লোভের একটি মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যাও রয়েছে। মানুষের স্বভাবেই আধিপত্য ও নিয়ন্ত্রণের প্রবণতা থাকে। কিন্তু রাজনীতিতে যখন এই প্রবণতা আদর্শবোধকে অতিক্রম করে, তখন তা বিপজ্জনক রূপ নেয়। যখন রাজনীতিকেরা দেখেন যে ক্ষমতার মাধ্যমে বিচারব্যবস্থা থেকে শুরু করে নিয়োগপ্রক্রিয়া পর্যন্ত হস্তক্ষেপ সম্ভব, তখন ক্ষমতা দায়িত্বের বদলে পরিণত হয় সম্পদ আহরণের এক অনিয়ন্ত্রিত মাধ্যম হিসেবে।
আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর কাঠামোতেও এই সমস্যার গভীর ছাপ পড়েছে। বহু দল এখন ব্যক্তি বা পরিবারকেন্দ্রিক। দল মানেই যেন এক নেতা, এক পরিবার, কিংবা একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী। এর ফলে দলীয় অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়ে, এবং নেতৃত্বের ব্যক্তিস্বার্থই হয়ে ওঠে রাজনীতির মুখ্য উদ্দেশ্য।
এই পরিস্থিতি কেবল দলীয় রাজনীতিতেই সীমাবদ্ধ নয়; প্রশাসনিক ব্যবস্থাকেও এটি কলুষিত করে তুলছে। ক্ষমতাসীনরা প্রায়শই তাদের অবস্থান দীর্ঘস্থায়ী করতে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কিংবা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অপব্যবহার করেন। অথচ গণতন্ত্রের প্রকৃত শক্তি নিহিত রয়েছে ক্ষমতার রোটেশন ও জবাবদিহিতায়। যদি ক্ষমতা কিছু লোকের হাতে কুক্ষিগত হয়ে পড়ে, তবে তা এক ধরনের \"নির্বাচিত কর্তৃত্ববাদ\" এ পরিণত হয়।
রাজনীতিতে আগ্রহী তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও একটি অসুস্থ প্রবণতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে—রাজনীতিকে তারা দেখছে ক্যারিয়ার গঠনের হাতিয়ার হিসেবে, যার লক্ষ্য বিলাসবহুল জীবন, সরকারি সুযোগ-সুবিধা ও ক্ষমতার প্রদর্শন। রাজনীতিবিদদের বিলাসী জীবনযাপন যেন তরুণদের মধ্যে এই মানসিকতা সৃষ্টি করছে। ফলে রাজনীতি আজ জনসেবার পরিবর্তে হয়ে উঠেছে পুঁজিবাদী বিনিয়োগের একটি ক্ষেত্র।
উত্তরণের পথ কী?
প্রথমত, রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ সংস্কার অপরিহার্য। নেতৃত্বে পরিবর্তন, জবাবদিহিমূলক কাঠামো এবং তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীদের মতামতের মূল্যায়ন ছাড়া রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন সম্ভব নয়।
দ্বিতীয়ত, নির্বাচন কমিশন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যদি নিরপেক্ষ না থাকে, তবে রাজনীতি আরও বেশি স্বার্থান্বেষী ও দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে উঠবে।
তৃতীয়ত, গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজকে হতে হবে আরও সক্রিয় ও সোচ্চার। ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও সম্পদের পাচার সংক্রান্ত ঘটনা তুলে ধরে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, একটি নতুন রাজনৈতিক দর্শনের বিকাশ—যেখানে ক্ষমতা নয়, বরং দায়িত্ববোধ ও জনকল্যাণ হবে মূল চালিকাশক্তি। রাজনীতিবিদদের মধ্যে সরল জীবনযাপন, সততা ও জনসেবার প্রতিফলন ঘটলেই সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরে আসবে।
রাজনীতি যদি তার প্রকৃত উদ্দেশ্যে ফিরে যেতে চায়—\"আমি ক্ষমতায় যাচ্ছি দেশ গড়তে\"—তবে এই বক্তব্য কেবল স্লোগান হিসেবে নয়, বাস্তব কর্মসূচি হিসেবে বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যথায়, এই লোভনির্ভর রাজনীতি শুধু রাজনৈতিক অবক্ষয়ই ডেকে আনবে না, বরং সমাজের নৈতিক ভিত্তিকেও ধ্বংস করে ফেলবে।
প্রকাশিত :
০৭:৩৬, ১৭ অক্টোবর ২০২৫ সর্বশেষ আপডেট: ০৭:৫২, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
নুজহাত নূর সাদিয়া
আহা ! বুকের পাঁজর ভাঙা গগনবিদারী আর্তনাদ , নাহ-কোন নিরব জঠর যন্ত্রনায় কুঁকড়ে যাওয়া গর্ভবতী মায়ের নবজাতক জন্ম দেওয়ার অবিস্মরণীয় ক্ষণটি উদযাপনের আনন্দচ্ছোস নয়, এ যে সহস্র দিনের গ্লানি শেষে এক নিকষ কালো আঁধার পেরিয়ে মাতৃভূমির বুকে নির্ভীক পা রাখা । আবার সেই চিরপরিচিত সবুজ দুর্বা ঘাসে ছুঁটে বেড়ানো , বাড়ন্ত স্কোয়াশের পূর্ণ ঝুঁড়ি, মাংসের রসাল স্যুপ, হাতে বানানো গমের রুটি সহযোগে উদর পূর্তির সেই পারিবারিক সুখস্মৃতি , মায়ায় জড়ানো বছর পার করে দেওয়া সংগ্রামী পরিবারগুলো ফিরে কি পাবে তাদের সেই প্রাণোচ্ছল ফিলিস্তিন । বহু চর্চিত এই প্রশ্নটির উত্তর অজানা আশংকা আর অনিশ্চয়তার অদৃশ্য গেরোতে আটকে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল থাকলে ও বিপরীত শিবিরে ও বহু দিনের ঘরবন্দী প্রিয়মুখগুলো স্বজনদের বাহুডোরে ফেরার অপেক্ষায় । আগ্রাসী ইসরায়েলের ধূলো উড়ানো পথ ও যে আজ শান্তিকামী মানুষের স্বতস্ফূর্ত হাসিতে ভরপুর।
আনুষ্ঠানিক হিসেব অনুযায়ী, মোট হতাহতের সংখ্যা ৬৬,০০০ হাজার ছাঁড়িয়ে গেছে, জীবন-ভর পঙ্গুত্বের অভিশাপ নিয়ে বাঁচতে হবে ২,৫০,০০০ জন হতভাগ্যকে , বেঁচে যাওয়া অসংখ্য দুরন্ত শৈশব বাকিটা জীবন সম্ভবত এক দুর্বিসহ স্মৃতি নিয়েই বেঁচে থাকবে, আকাশ ছোঁয়া দালান , সুসজ্জিত স্থাপনা আর পুরাকীর্তির শহর ফিলিস্তিন আজ এক মৃতপ্রায় ভুতুড়ে নগরী ।
এই যে ক্ষতি , তা সন্দেহাতীতভাবেই অপূরণীয় ক্ষতি । নেতানিয়াহু নামের এক বিকট দানবের ব্যক্তিগত আক্রোশ আর অপরিণামদর্শী যুদ্ধ কৌশলের খেস ারত দিতে হল ফোরাত নদীর তীরবর্তী নিরীহ প্রাণগুলোর। বিশ্ব মানচিত্র হতে ফিলিস্তিন নামক ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলটি ( গাজা প্রায়২১ লক্ষ লোকের আবাস) মাত্র মাসখানিক আগে ও নিরবে মুছে যাচ্ছিল ধনী রাষ্ট্রের তাবেদার মুসলিম বিশ্বের অলস শাসনকর্তাদের নির্লিপ্ত আচরণের কারণে । মুসলমান ভাই -ভাই, জুলুমবাজের নিস্তার নাই, বিপন্ন মানবতা বহুল চর্চিত প্রবাদগুলো নিতান্তই খাঁচায় বন্দি তোতাপাখির মুখস্থ বুলির মত আউড়ে চলছিল বিশ্বরাজনীতির মোড়লরা । তবে কি, আমজনতার পরম আরাধ্য পার্থিব জীবনের ও সমাপ্তি আছে, আর সেই সমাপ্তি বরাবরই ইতিহাসের পাতায় লিখিত হয়েছে স্রষ্টার একান্ত ইচ্ছেয়, অসহায়ের পূর্ণ সমর্থনে আর দিনশেষে সত্য ও ন্যায়ের বিজয়ে ।
গৃহকোণের শান্তি গৃহকর্ত্রীর পরম প্রিয়, আর সেই শান্তির সুশীতল পরশ এ ভূগোলকের পরতে পরতে ছঁড়িয়ে দিতে যে উদ্যোগী মানুষগুলো অনন্য সাধারণ কাজগুলোকে বাস্তবতার আলো দেখান সে মানুষগুলোই কর্মকুশলতায় অর্জন করে নেন সর্ব্বোচ সম্মান -নোবেল । এ নোবেল প্রাপ্তি, কার ও দারিদ্র্য বিমোচনে, চলতি ‘২৫ সালে বিতর্কিত মারিয়া কোরিয়া মাচানো -যার রাষ্ট্রীয় নীতি বহু অসহায় মানুষকে দুর্ভোগের মুখে ঠেলে দিয়েছে, প্রাক্তন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি বারাক সহ শান্তিতে নোবেল পাওয়া আলোচিত মানুষগুলো পুরষ্কারের কোঠা না মানদন্ড না তাদের কাজের বিষয় এ সূক্ষèাতিসূক্ষè বিষয়গুলো
রীতিমত প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠছে।
কর্তার ইচ্ছেয় কর্ম, আর স্বেচ্ছাচারী কর্তা যখন নিজ খেয়াল-খুশি মত আইন -কানুন তৈরি করে অসহায়দের উপর তা জোরপূর্বক চাপিয়ে দেন তখন তা ঐতিহাসিকভাবে চলে আসা জায়ানবাদীদের আধিপত্য আর কতৃর্ত্ববাদের নির্মমতার করুণ পুনরাবৃত্তি বই আর কিছুই নয় । আর ও নির্মম কৌতুক, একদা জায়ানবধের রাজ্য বলে খ্যাত , হিটলারের জার্মান, মাঁখোর ফ্রান্স , কূটনৈতিক ব্রিটেন সহ দু‘মুখো আরব বিশ্ব সকলে এ নির্মম রসিকতায় সামিল ! দুনিয়া যে ক্ষমতা আর অর্থের পূজারী - পড়ন্ত বেলার প্রাজ্ঞ প্রবীণদের গভীর হতাশার সুরে তা সুস্পষ্ট ।
রুপকথার গল্পের চেয়ে ও বাস্তব জীবনের গল্প অনেকসময় অনেক বেশি সুন্দর হয়ে উঠে , হয়ে উঠে প্রকৃত রুপক নতুবা তার চেয়ে ও শক্তিশালী আখ্যান । বিশ টি বছর ধরে ক্ষুধা, দারিদ্র্য আর নানা প্রতিকুলতায় অবরুদ্ধ হামাস , ঠিক জিতে গেল সাহস আর দেশের প্রতি ভালবাসাকে হৃদয়ে লালন করে।
আর, সেই ছোট্ট গেরিলা সদস্যের দলটি আজ কত বড়! মানচিত্র ছাঁড়িয়ে , সীমানা ছাঁড়িয়ে নব প্রজন্মের অকুতোভয় হামাসরা আজ দুয়ারে দাঁড়ানো দৃঢ় দ্বাররক্ষী । তারাই পারে ,তথাকথিত অজেয় পশ্চিমা শক্তিকে শান্তিচুক্তি নামক সে নাটকীয় ঘটনার অন্যতম যোগানদার করতে। মার্কিন সরকার প্রধান উপযাচক মাত্র-পরিস্থিতি বুঝেই হয়তবা বন্ধুর পথে হাঁটতে চাইছেন, ঢাল হয়ে দাঁড়ানো বর্মটি যে ভিষণ শক্তপোক্ত ও একরোখা ।
তবে, মধ্যপ্রাচ্যে ছঁড়ি ঘুরানোর দীর্ঘদিনের শক্তলাঠিটি কে যে এবার বাঁকাতেই হয় । সাপ ও মরবে লাঠি ও ভাঙবে না, হায় বেনিয়ামিন কি অসম্মানের এক পরাজয় ! কি অপেক্ষা করছে দুর্নীতি মামলায় জর্জরিত বুড়ো নেকড়েটির কপালে -বিধ্বস্ত চেহারায় কপালের কুঞ্চিত রেখাগুলো দীর্ঘতর হচ্ছে বৈকি।
প্রতিরোধ, যুদ্ধের নামে আগ্রাসন আর বসতি স্থানান্তরের নামে বাস্তুচ্যুত লক্ষাধিক শরণার্থী , আনুষ্ঠানিক চুক্তির প্রাথমিক পর্যায় হয়তবা এখন পর্যন্ত বিজয় উদযাপনে ব্যস্ত । তবে নারীর প্রতি সম্মান রক্ষার্থে ট্রাম্প তার প্রাক্তন রাজনৈতিক প্রতিদন্বী বারাকের উপর সম্ভবত সচেতনভাবেই তার রাষ্ট্র পরিচালনার মেয়াদকালে বিতর্কিত সন্ত্রাসী বনাম ইসলামিক সেনাবাহিনী মতানৈক্যের বিষয়টির উপর ইঙ্গিত দিয়েছেন । আর , ব্রিটিশ সংসদে চিত্রিত ইরাক যুদ্ধের ভয়াবহতা স্মরণ করে পুরনো বন্ধু ব্লেয়ারের পদাংক অনুসরিত কিনা, তাই আপনমনে যাচাই-বাছাই করে চলেছেন।
পরিস্থিতির পরিবর্তিত মোড় , কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন লিখিত শান্তি চুক্তির যে ভিন্ন ভিন্ন ২০টি শর্ত শোভা পাচ্ছে তার সুচারু বাস্তবায়ন খোদ ট্রাম্পের পক্ষেই যথেষ্ট দুরুহ । পেন্ডুলামের কাঁটা চলমান, হঠকারী ছোটভাই একবার নয় বেশ ক‘বার বড় ভাইয়ের অবাধ্য হয়েছেন , আস্ত উড়োজাহাজ উপহার আর বন্ধুপ্রতীম কাতারের উপর অর্তকিত আক্রমণ । রক্তে যার খুনে নেশা সে পাগলা ঘোড়া কি আদৌ থামবে ? বিলুপ্ত হিজবুল্লা, হুতির হারিয়ে যাওয়া হামাসের নেতৃত্বের শক্তি ক্ষয় , সিরিয়ায় ভাঙ্গন, ইরানের সফল প্রতিরক্ষার ব্যুহ ভেদ- আপাত , দ্বিধাগ্রস্থ ইসরাইল প্রধান সফলতার মাপকাঠিতে আত্নতৃপ্তিতে ভুগতে পারেন হয়তবা । তবে,গাজামুখি সারি সারি ত্রাণবাহী গাড়ির বহরের দী¦প্ত যাত্রা কি তার রাতের ঘুম কেড়ে নেয় নি, নিশ্চিতভাবেই উত্তরটি হ্যা ।
কাঁকচক্ষু দৃষ্টিতে , দৃঢ়তা আর ন্যায়ের বিজয় তবে, অসম এ যুদ্ধে উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপের চড়া মূল্য দিতে হল হামাসকে। ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস , নিহত হন ১ হাজার ২০০ জন ইসরাইলি নাগরিক , প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা। এই যে অপরিণামদর্শী পদক্ষেপ সেই জীবননাশের মূল্য দিতে হল চরমভাবে-গত দু‘বছরে ৬৭,০০০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত । শক্তিশালী শত্রুর সাথে টক্কর লাগানো কি এত সোজা! লোকবল আর সামরিক শক্তিতে তুলনামূলক ভাবে পিঁছিয়ে, তবে কিনা নীতি আর ঈমানের শক্তিতে বরাবরি বলীয়ান হামাসিয়ানরা । তাই , এ ক্রান্তিকালে ও ধাপে ধাপে অধিকাংশ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল তারা, সর্বশেষ গাজায় ৪৮ জন বন্দী ছিলেন , বেঁচে যাওয়া সৌভাগ্যবান ২০ জন। আর্ন্তজাতিক দাতব্য সংস্থা রেডক্রসের মাধ্যমে দু‘ধাপে জীবিত জিম্মিদের ইসরায়েলের হাতে তুলে দেয় হামাস গত ১৩ই অক্টোবর । মৃতদের মাঝে চার জনের মরদেহ ফেরত দেওয়ার কথা ও জানিয়েছে তারা।অপরদিকে, প্রতিপক্ষ ইসরাইলের আচরণ রুঢ়তার সীমা আকাশ ছুঁয়েছে বহু আগেই-কারাগারে ফিলিস্তিনিদের অনাহারে রাখা এবং নিপীড়ন করা নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যৌন হয়রানির খবর ও পাওয়া গেছে । আর্ন্তজাতিক গনমাধ্যম আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি সাংবাদিক আল-রিমায়ি বলেন- এ দু‘টি বছরে তার ওজন কমেছে ৫০ কেজি ! হাড় সর্বস্ব শরীর জড়িয়ে কন্যার ব্যাকুল আর্তি, বাবা আমি ব্যাথা পাই ।
এখন আবার ট্রাম্পের নতুন চমক, ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপনাস্ত্র উপহার দিবেন এই পাগলাটে রাষ্ট্রপতি রাশান যুদ্ধ থামাতে । শুরু হওয়া আফগান -পাকিস্তান সংঘাতে ও তালেবান দের ভূমিকা নিয়ে এক নতুন চেহারার ব্যবসায়ীকে দেখা গেছে -জামাতা কুশনারের ব্যবসায়িক বুদ্ধির জুড়ি নেই রাজনৈতিক বুদ্ধিতে ও যে শ্বশুরকে ভবিষ্যতে টেক্কা দিতে সমর্থ হবেন তা তার সাম্প্রতিক স্রোত বুঝে চলার ই পরিপক্ক রুপ ।
আজকের এই পার্থিব পৃথিবীতে স্রোতস্বিনী টেমস নদী ব্যবহারের মাসকাবারি বিল পরিশোধের সময় ও যে অতি গুরুত্বপূর্ণ বাক্যটি মগজে নিত্য গেঁথে থাকে -প্রতিটি পানিবিন্দু পরিশোধে পাওনা প্রাপ্য ! অর্থাৎ, জীবনের অপর নাম পানি ও বাতাস সেবনে ও মূল্য চুকাতে হয়, তা যদি হয় কেনসিংটন নামক অভিজাত এলাকার মনোরম ব্যালকনির মুক্ত হাওয়া । বিনামূল্যে সেবা, সে তো অতীতের গাল গল্প । অথচ, নিঠুর ইসরাইলী বাহিনী গাজায় ৩০০০ জলপাই গাছ কেটে , অগণিত বন্য ও পোষা প্রাণী মেরে আক্ষরিক অর্থেই প্রকৃতিকে বিপন্ন করে তুলতে চাইছিল । সেই প্রকৃতিই কিনা আপন মহিমায় নতুন বোনা জলপাই গাছের পাশ দিয়ে ছুটন্ত শিশুদের সাদরে বরণ করছে যাদের খাঁচা ভর্তি প্রিয় পোষা পাখিটির গুঞ্জন।
ফিলিস্তিন বাসীদের প্রিয় ম্যান্ডেলা ‘ আল ফাত্তাহ ‘ এখন ও জায়ানবাদীদের জিম্মায় , ইসরাইলী সেনাবাহিনী তাকে যমের মত ভয় পায় -যার মুক্তির আলো দেখা এখন ও সংশয়ে ভরা । সন্দেহাতীতভাবেই, তিনিই প্যালেস্টাইনি জনগণের অবিস্বরণীয় মুক্তি সংগ্রামের পরবর্তী আন্দোলনের দিকপাল ।
আজকের দিনের ফ্রি পত্রিকাগুলোর অন্যতম স্লোগান-মুক্ত খবর, মুক্ত চিন্তা । আর বিশ্বজুঁড়ে এই প্রবল বিজয় উদযাপনে মানবতাবাদীদের একটাই আশা মুক্ত হোক মানবতা , জয় হোক শুভ বুদ্ধির।