img

ভুলে যাওয়ার সমস্যা বাড়ে যেসব অভ্যাসে

প্রকাশিত :  ১২:৪৪, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ভুলে যাওয়ার সমস্যা বাড়ে যেসব অভ্যাসে

ইদানীং অনেকেই  ভুলে যাওয়ার সমস্যায় ভুগছেন। এমনটা যে বয়স্কদের হচ্ছে তা নয়। অনেক কম বয়সীদের মধ্যেও ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা যাচ্ছে। হুট করে সবকিছু গুলিয়ে যাওয়া, প্রয়োজনীয় জিনিস আনতে ভুলে যাওয়া কিংবা পছন্দের মানুষের জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকীর তারিখ ইত্যাদি ভুলে যাওয়া খুব সাধারণ ঘটনা নয়। চলার পথে হুট করে কিছু মনে না রাখত্রে পারলে খানিকটা পিছিয়ে পড়তে হয়। কখনো কখনো অন্যদের সামনে বেশ অস্বস্তিতেও পড়তে হয়।

কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? গবেষকরা বলছেন, প্রতিদিনের কিছু অভ্যাস মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে ব্যাহত করছে। দিনের পর দিন একই অভ্যাসের কারণে মস্তিষ্কের ক্ষতি হচ্ছে। 

উচ্চস্বরে গান শোনা: গান শোনা খুব ভালো একটি অভ্যাস। গান শুনলে মস্তিষ্ক শীতল হয়। দুশ্চিন্তা দূর হয়। কিন্তু কানে হেডফোন গুঁজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা উচ্চস্বরে গান শুনলে মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি হয়। টানা ৩০ মিনিট অতি উচ্চমাত্রার শব্দ শুনতে থাকলে শ্রবণশক্তি সম্পূর্ণ রূপে লোপ পেতে পারে। শ্রবণশক্তি লোপ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিশক্তিও লোপ পেতে পারে। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের টিস্যু নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম: অতিরিক্ত ‘স্ক্রিন টাইম’ও মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করে। অফিসে সারা ক্ষণ কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপের সামনে মুখ গুঁজে বসে থাকা, সারাক্ষণ ফোন স্ক্রল করা, স্ক্রিনে গেমস খেলা, ওয়েব সিরিজ দেখা ইত্যাদি কাজগুলো করলে দিনের অধিকাংশ সময় স্ক্রিনে চোখ থাকে। এতে চোখের যেমন  ক্ষতি হয়, মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও কমে যায়। এতে মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে অচল হয়ে পড়ে।

অন্ধকারে থাকা: কেউ কেউ অন্ধকারে থাকতে ভালোবাসেন। দীর্ঘ সময় অন্ধকারে থাকার অভ্যাস মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করে। এই অভ্যাস মনে বিষণ্ণতা তৈরি করে। আর বিষণ্ণতা মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে ধীর করে দেয়। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা সঠিক রাখতে প্রাকৃতিক আলোতে থাকতে হবে। সূর্যের আলোতে সময় কাটাতে হবে। এতে মেজাজ ভাল থাকে, মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও বাড়ে।

একা থাকার অভ্যাস: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢুঁ মারলে অনেক বন্ধু পাওয়া যায়। কিন্তু ভার্চুয়াল বন্ধুরা কাছের হয় না। এখন বেশিরভাগ মানুষ ভেতর থেকে একা হয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই ভীড়-আড্ডা-অনুষ্ঠানে যেতে চান না। পারিবারিক অনুষ্ঠান হোক কিংবা অফিসের পার্টি— সব কিছুই এড়িয়ে চলতে চান। অর্থাৎ নিজের মতো একা থাকতে চান। একা থাকার অভ্যাসও কিন্তু মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করে। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, যাঁরা কাছের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন, তাঁরা অন্যদের তুলনায় হাসিখুশি ও কর্মদক্ষ হন। তাঁদের স্মৃতিশক্তিও অন্যদের তুলনায় বেশি হয়।

অধিক পরিমাণে চিনি খাওয়া: অতিরিক্ত চিনি ও চিনি জাতীয় খাবার খাওয়াও মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর। আবার বার্গার, ভাজাপোড়া খাবার, আলুর চিপ্স বা কোমল পানীয়ের মতো খাবার স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার জন্য দায়ী। তাই এসব খাবারের বদলে খাদ্যতালিকায় সবুজ শাকসবজি, ফল ও বাদামজাতীয় খাবার রাখতে হবে। 

img

চশমা ছাড়াই বাচ্চাদের দৃষ্টি সমস্যা সমাধানে আসছে এল আই ড্রপ

প্রকাশিত :  ১৩:২২, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৩:২৫, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা হচ্ছে মানেই চিকিৎকের কাছে যাও। তারপর পাওয়ার দেখে চশমা দেওয়া হবে। এই ঝামেলা থেকে রেহাই দিতেই নতুন আই ড্রপ আসছে দেশের বাজারে। 

মূলত মায়োপিয়ার চিকিৎসায় এই আই ড্রপের ব্যবহার হবে। মায়োপিয়া মানেই হল দূরের দৃষ্টি ঝাপসা হতে থাকা। দেশে মায়োপিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। ক্রমাগত মোবাইল বা ট্যাবে চোখ, ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিভি দেখা, কম আলোয় মোবাইল স্ক্রল করার কারণেই দৃষ্টিজনিত সমস্যায় ভুগছে শিশু ও কমবয়সিরা।

নতুন ফর্মুলায় আই ড্রপটি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্মাতা সংস্থা এনটড ফার্মাসিউটিক্যালস। তাদের দাবি, এই ড্রপটি চোখে দিলে মায়োপিয়ার ঝুঁকি কমবে। যে শিশুর দূরের দৃশ্য দেখতে সমস্যা হচ্ছে, স্কুলের ব্ল্যাকবোর্ডে লেখা পড়তে পারছে না অথবা চোখে যন্ত্রণা, চোখ দিয়ে পানি পড়ার সমস্যা হচ্ছে, তারা এই আই ড্রপটি ব্যবহার করতে পারে। 

তবে মায়োপিয়া যদি ধরা পড়ে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শেই আই ড্রপটি নিতে হবে। কেন্দ্রীয় ড্রাগ নিয়ামক সংস্থা আই ড্রপটির ব্যবহারে ছাড়পত্র দিয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি সেটি দেশের বাজারে চলে আসবে বলে জানা গেছে।

আই ড্রপটি ছোটদের জন্যই তৈরি করা হয়েছে। ৬ থেকে ১২ বছরের শিশুদের দেওয়া যাবে। এনটড ফার্মাসিউটিক্যালস জানিয়েছে, ওষুধটি তিন পর্যায়ের ট্রায়ালের পরে তার কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এখনো অবধি কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে দেখা যায়নি।

কিছুদিন আগেই ‘দ্য ল্যানসেট’ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের অর্ধেক সংখ্যক মানুষ মায়োপিয়ায় আক্রান্ত হবেন। বিশেষ করে শিশুরা এই অসুখে বেশি ভুগবে। মায়োপিয়ায় আক্রান্ত রোগী কাছের জিনিস দেখতে পারলেও দূরের জিনিস দেখতে তাদের সমস্যা হয়। মায়োপিয়ার অন্যতম বড় কারণ হল সূর্যের আলোয় কম সময় কাটানো। 

গবেষকেরা জানাচ্ছেন, প্রাকৃতিক আলোর চেয়ে কৃত্রিম আলোতেই বেশি অভ্যস্ত এখনকার প্রজন্ম। শিশুদের ক্ষেত্রে সূর্যের আলোয় বেশিক্ষণ থাকলে রেটিনায় ডোপামিন নামক যৌগের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই যৌগ দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে এবং মায়োপিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে। কিন্তু অন্ধকারে যদি মোবাইল বা ট্যাব দেখার অভ্যাস থাকে, তাহলে বিদ্যুতিন ডিভাইস থেকে বেরোনো নীল আলো রেটিনার দফারফা করে দেয়। তখন কেবল দৃষ্টিজনিত সমস্যা নয়, চোখে যন্ত্রণা, চোখ লাল হয়ে ওঠা, পানি পড়া, মাথাযন্ত্রণা, এমনকি মাইগ্রেনও ভোগাতে পারে।

নতুন আই ড্রপটি চোখ খারাপ হওয়া থেকে বাঁচাবে। তবে পাশাপাশি শিশুদের চোখের যত্ন নিতে ও ‘স্ক্রিন টাইম’ বেঁধে দেওয়ারও পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকেরা।