img

বদলাচ্ছে আবহাওয়া, জ্বর-সর্দি-কাশি হলে কী করবেন?

প্রকাশিত :  ০৭:৪৯, ০৮ মার্চ ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৭:৫০, ০৮ মার্চ ২০২৫

বদলাচ্ছে আবহাওয়া, জ্বর-সর্দি-কাশি হলে কী করবেন?

প্রকৃতিতে শীত শেষে আসি আসি করছে গরম। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সকলেরই নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। হাঁচি, কাশি, জ্বরের পাশাপাশি মাথা যন্ত্রণাসহ নানান উপসর্গ থাকে। এই সময়ে শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই জ্বর সর্দি কাশি কিংবা  নানাবিধ শারীরিক সমস্যায় ভোগেন। সাধারণ আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এই সমস্ত রোগ অসুখ দেখা যায়।  এই শারীরিক অসুস্থতা থেকে কীভাবে পরিত্রান মিলবে, কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনে সর্দি-কাশি এড়াতে আপনাকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। সেজন্য করতে হবে কিছু কাজ। চলুন জেনে নেওয়া করণীয়-

দুইবার গার্গল করুন

গার্গল করার এই অভ্যাস আপনাকে সর্দি-কাশি থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করবে। সকালে এবং রাতে ঘুমানোর আগে হালকা গরম পানিতে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে গার্গল করুন। এভাবে অভ্যাস করলে সর্দি-কাশিতে আর ভুগতে হবে না।

ভেষজ ওষুধ খান

সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পেতে চাইলে কেমিক্যালযুক্ত ওষুধের বদলে ভেষজ ওষুধ খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে কোনো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া ছাড়াই সুস্থ থাকা সহজ হবে। আদা, লবঙ্গ, পুদিনা পাতা, তুলসী পাতা ইত্যাদির চা খেলেও মিলবে উপকার।

গরম পানি পান করুন

সর্দি-কাশির সমস্যা এড়াতে ঠান্ডা পানির বদলে নিয়মিত গরম পানি পান করার অভ্যাস করুন। এতে হজমশক্তি ভালো হওয়ার পাশাপাশি সর্দি-কাশি, গলাব্যথা ইত্যাদি ধরনের সমস্যাও দূর হবে। তবে উত্তপ্ত গরম পানি পান করা যাবে না, পান করতে হবেহালকা গরম পানি।

নারিকেল তেল ব্যবহার করুন

আমাদের চুল সুন্দর রাখার জন্য নারিকেল তেলের উপকারিতার কথা অনেকেই জানেন। কিন্তু আপনি কি জানেন, এই তেল আমাদের সর্দি-কাশি দূর করার জন্যও কার্যকরী? আপনি যদি ঘুমানোর আগে কানে এবং নাকে নারিকেল তেল লাগিয়ে ঘুমান তাহলে সর্দি-কাশির মতো সমস্যায় উপকার পাবেন।

ভিটামিন এ এবং সি সাপ্লিমেন্ট

সর্দি-কাশি দূর করতে ভিটামিন এ এবং সি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিটামিন এ এবং সি এর আমাদের অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এই দুই ভিটামিনের সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন।

img

হার্ট অ্যাটাক কেন হয়, লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

প্রকাশিত :  ০৯:৫৩, ২৪ মার্চ ২০২৫

হার্ট অ্যাটাক একটি প্রাণঘাতী মেডিকেল ইমার্জেন্সি। দ্রুত এর চিকিৎসা না করালে মৃত্যুঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে কিছু পূর্ব লক্ষণ আগেভাগে বুঝতে পারলে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব।  

হার্ট অ্যাটাকের ৬টি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ 

১. বুকব্যথা  

গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটাকের শিকার রোগীদের মধ্যে ৪০ শতাংশের অনেক আগেই বুকব্যথার অভিজ্ঞতা হয়েছিল। অনেকে সামান্য ব্যথাকে গুরুত্ব দেন না, কিন্তু এটি হার্ট অ্যাটাকের একটি গুরুত্বপূর্ণ পূর্ব লক্ষণ হতে পারে।  

২. বুকে ভারবোধ  

৪৪ শতাংশ রোগী হার্ট অ্যাটাকের আগে বুকে ভারী অনুভূতি বা চাপ অনুভব করেছিলেন। বিশেষ করে শারীরিক পরিশ্রম, সিঁড়ি ওঠা বা দ্রুত হাঁটার পর যদি বুকে চাপ অনুভূত হয়, তবে এটি সতর্ক সংকেত হতে পারে।  

৩. বুক ধড়ফড় করা  

৪২ শতাংশ রোগী বুক ধড়ফড় বা হার্টবিট অনিয়মিত হওয়ার মতো অনুভূতির কথা জানিয়েছেন। কেউ কেউ হার্টবিট মিস হওয়ার কথাও বলেন। এটি হার্টের সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।  

৪. শ্বাসকষ্ট বা হাঁপিয়ে যাওয়া  

শারীরিক পরিশ্রম ছাড়াই যদি শ্বাসকষ্ট অনুভূত হয় বা হাঁপিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে, তবে এটি হার্টের কার্যক্রম দুর্বল হওয়ার ইঙ্গিত দিতে পারে। বিশ্রামের সময়ও এমন লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।  

৫. বুক জ্বালাপোড়া  

অনেকে বুক জ্বালাপোড়া অনুভব করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা মনে করেন এবং গ্যাসের ওষুধ খাওয়া শুরু করেন। তবে যদি গ্যাসের ওষুধেও উপশম না হয়, তাহলে এটি হার্টের সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।  

৬. দুর্বলতা ও ক্লান্তিবোধ  

দীর্ঘদিন ধরে অস্বাভাবিক দুর্বলতা বা ক্লান্তি থাকলে সেটি অবহেলা করা উচিত নয়। অনেক ক্ষেত্রে এটি হার্টের সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে।  

অন্যান্য লক্ষণ  

বুক ব্যথা ছাড়াও হার্ট অ্যাটাকের সময় মাথা ঝিমঝিম করা, বমিভাব, অনিদ্রা, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, পা ফোলা বা ভারী লাগার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে এসব লক্ষণের উপস্থিতি পুরুষদের তুলনায় বেশি দেখা যায়। তবে অনেকের ক্ষেত্রে কোনো পূর্ব লক্ষণ ছাড়াই হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।  

হার্ট অ্যাটাক হলে সঙ্গে সঙ্গে যা করবেন  

১. আতঙ্কিত হবেন না  

হার্ট অ্যাটাক হলে বা উপসর্গ দেখা দিলে প্রথমেই ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিন। আতঙ্কিত হয়ে গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।  

২. দ্রুত চিকিৎসা নিন  

অবিলম্বে নিকটস্থ হাসপাতালে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন। যত দ্রুত চিকিৎসা শুরু হবে, তত বেশি বিপদ এড়ানো সম্ভব।  

৩. অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ান  

লম্বা শ্বাস নিন এবং ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এতে শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়বে এবং হৃৎপিণ্ড কিছুটা স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারবে।  

৪. কাশির মাধ্যমে সাপোর্ট দিন  

হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হলে রোগীকে ঘন ঘন কাশি দিতে বলা হয়। প্রতিবার কাশি দেওয়ার আগে গভীর শ্বাস নিতে হবে। এতে হৃৎপিণ্ড স্বাভাবিকভাবে রক্ত সঞ্চালনের জন্য প্রস্তুত হতে পারে।  

৫. অ্যাসপিরিন বা নাইট্রোগ্লিসারিন নিন  

যদি রোগীর আগে থেকে হার্টের সমস্যা থাকে এবং চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যাসপিরিন বা নাইট্রোগ্লিসারিন ব্যবহার করার নির্দেশনা থাকে, তবে তা দ্রুত গ্রহণ করুন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে ওষুধ নেওয়া ঠিক নয়।  

৬. রোগীকে শুইয়ে দিন  

রোগীকে সমতল স্থানে শুইয়ে দিন এবং যদি সম্ভব হয়, পা কিছুটা উঁচুতে রাখুন। এতে রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করবে।  

৭. আশেপাশের কাউকে জানিয়ে দ্রুত সাহায্য নিন  

হার্ট অ্যাটাক হলে নিজে গাড়ি চালিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা না করে আশপাশের কাউকে জানিয়ে দ্রুত সাহায্য নিন।  

হার্ট অ্যাটাক একটি ভয়াবহ সমস্যা, তবে আগেভাগে লক্ষণ চিনতে পারলে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিলে প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সুষম খাবার গ্রহণ, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যায়।