img

ধর্মের জাত?

প্রকাশিত :  ০৬:৩৮, ১২ মে ২০২৫

ধর্মের জাত?

রেজুয়ান আহম্মেদ

গ্রামের নাম কালিমুদ্দিনপুর। নামটা শুনলেই কেমন যেন একটা গম্ভীর ভাব চলে আসে—মনে হয় যেন এক বুড়ো দরবেশ গম্ভীর গলায় নামটা উচ্চারণ করছেন, \"কা-লি-মু-দ্দি-ন-পু-র...\"  

লোকমুখে শোনা যায়, বহু বছর আগে এক সাধক এসেছিলেন এই গ্রামে—নাম ছিল কালিমুদ্দিন। তিনি নাকি বলতেন, \"ধর্ম মনের বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে, মানুষের হৃদয়ে বাস করে। যে যেটা বিশ্বাস করবে সেটাই তার নিজস্ব ধর্ম।\" সেই থেকেই গ্রামের নাম হয়ে যায় কালিমুদ্দিনপুর।  

আশ্চর্য এই গ্রামটার গল্প আরও মজার। এখানে ধর্ম মানে বিভাজন নয়—বরং মিল। সকালবেলা মসজিদ থেকে আজান আসে, মন্দিরে শাঁখ বেজে ওঠে, গির্জায় বাজে ঘণ্টা, আর পহেলা বৈশাখে পুরো গ্রামটাই রঙে রঙিন—হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই একাকার হয়ে যায়।  

ভোরের সময় পাখির ডাক আর গরুর ডাক একসঙ্গে মিশে এমন এক মধুর সুর তোলে, যেন প্রকৃতি নিজেই গান গাইছে। মানুষ যেমন এই গ্রামকে ভালোবাসে, তেমনি পশুপাখিরাও যেন এখানে আপন হয়ে উঠেছে—ছাগল ডাকে, হাঁস ক্যাঁক-ক্যাঁক করে, মুরগি কুক্কুক-কু-কু ডাকে। শুধু খামারে নয়, এরা গল্পেও ঢুকে পড়ে, খেলাধুলায়ও হাজির হয়।  

আর এই গ্রামে আছে এক বিখ্যাত আড্ডাস্থল—এক পুরনো বিশাল বটগাছ। গাছটার ছায়ায় মাটির বেঞ্চিতে বসে জমে আড্ডা—ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ হাতে রামবাবু ঘোষ (পঞ্চায়েতের প্রবীণ সদস্য), মোতাহার মিয়া (মসজিদের মুয়াজ্জিন, আবার দারুণ রসিক মানুষ), ফাদার জোসেফ (গির্জার পাদ্রী, শান্ত মানুষ), আর হরেন মুদি (তার দোকানে নাকি জিনিস কম, গল্প বেশি)।  

সেদিন বিকেলটা ছিল একটু অন্যরকম। গ্রীষ্মের মৃদু হাওয়া, দূরে আকাশে কালো মেঘ, আর পাখিরা বাসায় ফিরছে। এমন সময় মোতাহার মিয়া এক চুমুক চা খেয়ে হঠাৎ বললেন—  

\"বলুন তো, গরু-ছাগল-মুরগি—ওদের কি কোনো ধর্ম আছে?\"  

রামবাবু তখন লালচায়ের কাপ ঠোঁটে নিয়ে থেমে গেলেন। চোখ কুঁচকে তাকিয়ে বললেন—  

\"এই প্রশ্ন কি আপনি সকালে কাঁচা লঙ্কা খেয়ে করলেন?\"  

সঙ্গে সঙ্গে হাসির ঝড় উঠল। ফাদার জোসেফ হেসে কাঁপছেন, হরেন মুদি তো হেসে পেছনে হেলেছেন।  

কিন্তু মোতাহার মিয়া থামলেন না। আবার বললেন—  

\"ধরুন, আমি রামবাবুর কাছ থেকে একটা গরু কিনলাম। এখন, রামবাবু হিন্দু—তাহলে গরুটাও হিন্দু? আর আমি কিনে নিলে গরুটা মুসলমান হয়ে যাবে? এই বদলটা কেমন করে হয়?\"  

ফাদার জোসেফ তখন হেসে বললেন—  

\"তাহলে আমার হাঁসগুলো খ্রিস্টান! যদিও ওদের ব্যাপটিজম করিনি!\"  

আবারও হাসির রোল। কিন্তু ওই একটাই প্রশ্ন যেন সবার মনে গেঁথে গেল।  

পরদিন সকাল থেকে পুরো গ্রামে হৈচৈ! চায়ের দোকান, স্কুলের বারান্দা, হাটের মোড়—সবখানে আলোচনা, \"পশুপাখির ধর্ম কী?\"  

কেউ বলছে, \"মুরগি তো হাঁড়ির ধর্ম জানে!\"  

কেউ বলে, \"গরু তো গোমাতা, হিন্দু হতেই হবে!\"  

আরেকজন ফিসফিস করে বলে, \"ধর্মের আবার গন্ধ হয় নাকি?\"  

তর্ক-বিতর্ক যখন থামছেই না, তখন সবাই সিদ্ধান্ত নিল—সব ধর্মগুরুদের কাছে গিয়ে জেনে আসা যাক।  

তাই একে একে হাজির হল সবাই—মন্দিরের পুরোহিত শ্যামলবাবুর কাছে, মসজিদের ইমাম মৌলভি আব্দুল হকের কাছে, গির্জার ফাদার জোসেফ তো আগেই আছেন, আর বৌদ্ধ ভিক্ষু ধর্মরত্নও বাদ গেলেন না।  

শ্যামলবাবু বললেন—  

\"গরু তো আমাদের গোমাতা। সে তো হিন্দু, জন্ম থেকেই!\"  

মৌলভি সাহেব বললেন—  

\"পশুর কোনো ধর্ম নেই। হালাল হলে খাই, না হলে খাই না। ব্যস।\"  

ফাদার জোসেফ আবার বললেন—  

\"আমি তো হাঁসদের গির্জায় নিয়ে যাইনি, তাহলে খ্রিস্টান কীভাবে হবে?\"  

ভিক্ষু ধর্মরত্ন হেসে বললেন—  

\"জীবহত্যা আমরা করিই না। এইসব ভাবনা নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার কী?\"  

তবুও মন ভরল না। তখন প্রস্তাব উঠল—\"চলো, পাহাড়ের পাদদেশে নির্গুণানন্দ স্বামীর আশ্রমে যাই। তিনি নাকি প্রকৃতির গভীর ভাষা বোঝেন।\"  

এক সকালে রওনা হলেন সবাই—রামবাবু, মোতাহার মিয়া, ফাদার জোসেফ, হরেন মুদি আর কয়েকজন স্কুলের মাস্টার মশাই।  

স্বামীজি তখন গভীর ধ্যানে। তাঁকে দেখে সবার মন প্রশান্তিতে ভরে উঠল। প্রশ্ন শুনে তিনি ধীরে চোখ মেললেন, মুখে হালকা হাসি। বললেন—  

\"তোমরা পশুপাখির ধর্ম খুঁজছো, অথচ নিজের ধর্ম কতটা বোঝো?\"  

মোতাহার মিয়া নিচু গলায় বললেন—  

\"তাহলে কি পশুপাখির কোনো ধর্মই নেই?\"  

স্বামীজি মাথা নাড়িয়ে বললেন—  

\"না, নেই। ধর্ম মানুষের তৈরি এক বিশ্বাস। পশুপাখি তো প্রকৃতির সন্তান—তারা ধর্ম জানে না, জানার দরকারও হয় না। তারা শুধু প্রকৃতির নিয়মে চলে, মায়া জানে, প্রেম বোঝে—কিন্তু ধর্মের রাজনীতি বোঝে না।\"  

সবাই নিঃশব্দ। যেন হাওয়ার শব্দটাই বড় হয়ে উঠেছে।  

স্বামীজি আবার বললেন—  

\"তোমরা যখন কোনো গরুকে পূজায় উৎসর্গ করো, কিংবা কোরবানিতে জবাই করো—সেটা তোমাদের ধর্মীয় আচার। গরুর কাছে তার মানে নেই। সে শুধু তোমার চোখে তাকিয়ে থাকে—ভালোবাসা আর ভয়ের মাঝখানে এক অদ্ভুত বিস্ময় নিয়ে।\"  

এই কথাগুলো শুনে আর কেউ কিছু বলতে পারল না।  

সবাই ফিরে এলো গ্রামে। মনটা কেমন যেন বদলে গেল। কেউ কিছু বলেনি, কিন্তু যেন মনে মনে সবাই একটু একটু করে বুঝে গেল কিছু কথা।  

ফিরে এসে মোতাহার মিয়া বললেন—  

\"পশুপাখির কোনো ধর্ম নেই।\"  

তখন হরেন মুদি চোখ টিপে বললেন—  

\"তবে কি আমার খাসিটা বৌদ্ধ হয়ে গেল? কাউকে তো কখনো কামড়ায় না!\"  

আবারও বটগাছের নিচে হাসির রোল।  

তবুও কোথাও যেন প্রশ্নটা রয়ে গেল—  

\"তাহলে আমার হাঁসটা হিন্দু, না মুসলমান?\"  

হয়তো এই প্রশ্নের উত্তর মানুষের হাতে নেই—প্রকৃতির কোলে ই তার ঠিকানা।  

শেষ।

img

বাংলাদেশের ইতিহাসে রাণী ভবানী ও নাটোর রাজবাড়ী: অর্ধবঙ্গেশ্বরীর গৌরবগাথা

প্রকাশিত :  ০৯:২৫, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

সংগ্রাম দত্ত

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত নাটোর জেলা একসময় ছিল রাজকীয় ঐশ্বর্যের কেন্দ্রস্থল। এই জেলার সদর উপজেলায় অবস্থিত বিখ্যাত রাণী ভবানী রাজবাড়ী, বাংলার ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায়ের সাক্ষী। জমিদারি প্রথার উত্থান-পতনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই রাজবংশের নাম, যেখান থেকে এক নারী – রাণী ভবানী – সমগ্র বাংলার “অর্ধবঙ্গেশ্বরী” হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন।

নাটোর রাজবংশের সূচনা: অষ্টাদশ শতকের শুরুতে নাটোর রাজবংশের যাত্রা শুরু হয়। ১৭০৬ খ্রিস্টাব্দে পরগণা বানগাছির জমিদার গণেশ রায় ও ভবানীচরণ চৌধুরী রাজস্ব প্রদানে ব্যর্থ হয়ে চাকরিচ্যুত হন। তাঁদের জমিদারি কেড়ে নিয়ে দেওয়ান রঘুনন্দন তাঁর ভাই রামজীবনের নামে বন্দোবস্ত নেন। এই রামজীবনই ছিলেন নাটোর রাজবংশের প্রথম রাজা।

রাজা রামজীবন ১৭০৬ খ্রিস্টাব্দে (মতান্তরে ১৭১০ খ্রিস্টাব্দে) জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৭৩৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর নিজ সন্তান না থাকায় জীবদ্দশায় এক পুত্র দত্তক নেন—রামকান্ত।

রাণী ভবানীর আগমন:১৭৩০ খ্রিস্টাব্দে রাজা রামজীবনের দত্তকপুত্র রামকান্তের সঙ্গে বিয়ে হয় রাণী ভবানীর। রাজা রামকান্তের মৃত্যুর পর ১৭৪৮ সালে নবাব আলীবর্দী খাঁ রাণী ভবানীর হাতে জমিদারি পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেন।

রাণী ভবানীর জন্ম ১৭২৩ সালে বগুড়া জেলার আদমদিঘি থানার ছাতিয়ানগ্রাম গ্রামে। তাঁর পিতা আত্মারাম চৌধুরী ও মাতা জয়দুর্গা দেবী। অল্প বয়সেই তিনি রাজবংশের বধূ হিসেবে নাটোরে আসেন।

অর্ধবঙ্গেশ্বরী রাণী ভবানী: রাণী ভবানীর রাজত্বকালে নাটোর রাজবাড়ির প্রভাব বিস্তৃত হয় এক বিশাল অঞ্চলে। তাঁর জমিদারি ছড়িয়ে ছিল বর্তমান বাংলাদেশের রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, কুষ্টিয়া, যশোর, রংপুর জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ও মালদহ পর্যন্ত।

ইংরেজ লেখক হলওয়েলের হিসাবে, তাঁর জমিদারি থেকে বার্ষিক রাজস্ব আয় হতো প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা, যা তৎকালীন সময়ের এক বিরাট অঙ্ক। দক্ষ প্রশাসন, প্রজাহিতৈষী মনোভাব ও দানশীলতার কারণে প্রজারা তাঁকে ভালোবেসে “অর্ধবঙ্গেশ্বরী” নামে অভিহিত করেছিল।

প্রজাদের কল্যাণে দানশীল রাণী: রাণী ভবানীর জীবনযাপন ছিল অনাড়ম্বর, কিন্তু সমাজসেবায় তাঁর দৃষ্টান্ত অনন্য। তিনি শত শত মন্দির, অতিথিশালা ও রাস্তা নির্মাণ করেন। প্রজাদের জন্য পুকুর খনন করে পানীয় জলের ব্যবস্থা করেন এবং শিক্ষা বিস্তারে অনুদান প্রদান করেন।

১৭৫৩ সালে তিনি কাশীতে (বর্তমান বারাণসী) ভবানীশ্বর শিব ও দুর্গাবাড়ী, দুর্গাকুণ্ড ও কুরুক্ষেত্রতলা নামক পবিত্র স্থান নির্মাণ করেন। তাঁর উদ্যোগেই হাওড়া থেকে কাশী পর্যন্ত দীর্ঘ সড়কপথ নির্মিত হয়, যা তখন পরিচিত ছিল “রাণী ভবানী রোড” বা “বেনারস রোড” নামে।

ধর্মীয় অবদান ও দেবোত্তর সম্পত্তি: বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর শক্তিপীঠ উন্নয়নে রাণী ভবানীর অবদান আজও স্মরণীয়। কথিত আছে, তিনি প্রতি বছর দু’বার হাতি বহর নিয়ে ভবানীপুরে যেতেন।

পাকিস্তান আমলে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলেও রাণী ভবানী স্টেটের উত্তরাধিকারীরা ২৬২ একর জমি দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে ভবানীপুর শক্তিপীঠের নামে দানপত্রে নিবন্ধন করে দেন। বর্তমানে ঐ জমির একটি বড় অংশ প্রভাবশালী মহলের দখলে চলে গেছে, যার পুনরুদ্ধারে আদালতে একাধিক মামলা চলছে।

তারাপীঠে অবদান ও বামাক্ষ্যাপার নিয়োগ: বীরভূম জেলার বিখ্যাত তারাপীঠ মন্দিরও তাঁর জমিদারির অন্তর্গত ছিল। ভগ্নপ্রায় অবস্থায় থাকা মন্দিরটি তিনি পুনর্নির্মাণ করেন এবং কিংবদন্তি সাধক বামাক্ষ্যাপাকে মন্দিরের পুরোহিত হিসেবে নিয়োগ দেন।

রাণী ভবানীর রাজবাড়ি, স্থাপত্য ও ঐতিহ্য: নাটোর রাজবাড়ি নির্মাণ শুরু হয় ১৭০৬-১৭১০ সালের মধ্যে। রাজবাড়ির আয়তন প্রায় ১২০ একর, যেখানে ছোট-বড় ৮টি ভবন, ৭টি পুকুর, এবং দুটি স্তরের বেষ্টনী প্রাচীর রয়েছে।

রাজবাড়ি বিভক্ত দুই ভাগে—বড় তরফ ও ছোট তরফ। এখানকার প্রধান মন্দিরগুলো হলো শ্যামসুন্দর মন্দির, আনন্দময়ী কালিবাড়ি ও তারকেশ্বর শিবমন্দির।

রাজবংশের রাজধানী স্থাপনের জন্য রামজীবন ভাতঝাড়ার বিল এলাকা নির্বাচন করেন, যা পরবর্তীতে “নাট্যপুর” নাম ধারণ করে “নাটোর” নামে পরিচিত হয়।

জীবনের শেষ অধ্যায়: দত্তক পুত্র রামকৃষ্ণের হাতে জমিদারি দায়িত্ব অর্পণ করে রাণী ভবানী মুর্শিদাবাদ জেলার বড়নগরে চলে আসেন এবং সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ভাগীরথী নদীর তীরে তিনি নির্মাণ করেন ১০০টি শিবমন্দির, যার কিছু আজও টিকে আছে।

তাঁর মৃত্যুর পর ওয়ারেন হেস্টিংস তাঁর রংপুরের জমিদারি দখল করেন। দীর্ঘ ও কর্মবহুল জীবনের পর রাণী ভবানী ১৮০২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর, ৭৯ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন।

বর্তমান অবস্থা: নাটোর রাজবাড়ি আজ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ও পর্যটন স্থাপনা। ১৯৮৬ সাল থেকে রাজবাড়ির পুরো এলাকা জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে “রাণী ভবানী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও যুবপার্ক” নামে পরিচালিত হচ্ছে।

রাণী ভবানী কেবল নাটোর বা রাজশাহীর ইতিহাসে নয়, সমগ্র বাংলার ইতিহাসে এক আলোকবর্তিকা—যিনি প্রমাণ করেছিলেন, নারীর নেতৃত্বও রাজনীতি ও প্রশাসনে সমান সফল হতে পারে। তাঁর স্মৃতি, দানশীলতা ও প্রজাহিতৈষী মনোভাব আজও বাংলার মাটিতে কিংবদন্তি হয়ে আছে।