img

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার: সাহসী বিপ্লবী ও নারীশক্তির প্রতীক

প্রকাশিত :  ১২:৫২, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার: সাহসী বিপ্লবী ও নারীশক্তির প্রতীক

সংগ্রাম দত্ত: প্রতি বছর ২৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের আত্মত্যাগ স্মরণ করা হয়। যদিও প্রকৃত ঘটনা ঘটেছিল ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৩২ সালে, তবু আমাদের স্মৃতিতে ২৪ তারিখটি প্রীতিলতার সাহস, আদর্শ এবং দেশপ্রেমকে উদযাপনের দিন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রীতিলতা কিশোর বয়স থেকেই স্বাধীনতার প্রতি প্রবল আকর্ষণ অনুভব করতেন। তার দৃঢ় সংকল্প, সাহসী মনোভাব এবং দেশপ্রেম তাকে এক অনন্য বিপ্লবীর আকারে গড়ে তুলেছিল—যিনি নারীর সক্ষমতা এবং সাহসিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।

প্রীতিলতার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় অধ্যায়টি হলো পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান নাইট ক্লাব আক্রমণের সময় ঘটে যাওয়া ঘটনা। সে সময় প্রীতিলতা বাম বাহুতে গুলি লেগেও পালানোর বদলে মৃত্যুকে বেছে নেন। মৃত্যুর আগে তিনি তাঁর সহযোদ্ধাকে অনুরোধ করেছিলেন, পটাশিয়াম সায়ানাইড মুখে ঢেলে দেওয়ার জন্য, যাতে স্বাধীনতার লড়াইয়ে তাঁর আত্মত্যাগ অপচয় না হয়। তাঁর হাতে লেখা চিঠি আজও আমাদের মনে করায়—“দেশের মুক্ত সংগ্রামে নারী-পুরুষের পার্থক্য আমাকে ব্যথিত করিয়েছে। যদি আমার ভাইরা মাতৃভূমির জন্য যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে পারে, আমরা ভগিনীরা কেন পারব না?” এই লাইনটি কেবল প্রীতিলতার সাহসই নয়, বরং নারীর ক্ষমতাকে সমানভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বানও।

প্রীতিলতা কিশোর বয়স থেকেই বিপ্লবী চেতনার প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। বহুবার তিনি দলের নেতা মাস্টারদারের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছেন এবং দলের কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার সুযোগ চেয়েছেন। যদিও দলের নীতি অনুযায়ী সাধারণ নারী সদস্যদের সীমিত রাখা হয়, প্রীতিলতার নিষ্ঠা, সাহস এবং অবিচলতা শেষ পর্যন্ত মাস্টারদারের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়। এই আস্থা প্রমাণ করে, নারীর উৎসাহ এবং ধৈর্য কোনো সীমার মধ্যে আবদ্ধ নয়—পরিস্থিতি সঠিক হলে তারা যে কোনো বিপ্লবী কাজের অগ্রদূত হতে পারে।

প্রীতিলতার জীবন কেবল স্বাধীনতার প্রতীক নয়। এটি নারীশক্তির চিরন্তন উদাহরণ। সমাজে নারীরা আজও নানা ক্ষেত্রে সমান মর্যাদা পাচ্ছেন না, তবু তাদের অবদান অপরিসীম। মা, বোন, স্ত্রী—নারীরা সন্তান শিক্ষাদীক্ষা, চরিত্রগঠন এবং সামাজিক নৈতিকতা প্রতিষ্ঠায় মূল ভূমিকা পালন করেন। প্রীতিলতার মতো নারীরা কেবল নিজের স্বাধীনতার জন্য নয়, পুরো সমাজকে মুক্তি এবং উন্নতির পথ দেখান। এই দৃষ্টান্ত আমাদের শেখায়, নারীর শক্তি কখনো কম নয়; বরং সঠিক প্রেরণা এবং লক্ষ্য থাকলে তারা দেশের স্বাধীনতা ও সমাজের উন্নয়নের অগ্রদূত হতে পারে।

প্রীতিলতার আত্মত্যাগের সঙ্গে অতীতের অন্যান্য বিপ্লবীদের জীবনও স্মরণীয়। ক্ষুদিরাম বসু, কানাইলাল দত্ত, বাঘা যতিন, সূর্য সেনরা—তাঁরা সবাই মৃত্যুকে অবজ্ঞা করে দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়েছেন। তাদের সাহস, নিষ্ঠা এবং আদর্শ ইতিহাসকে অনন্য করেছে। প্রীতিলতার জীবন নারীশক্তির চিরন্তন প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তার সাহস আমাদের স্মরণ করায়, নারীর শক্তি কখনো কম নয়, এবং সঠিক প্রেরণা পেলে তিনি দেশের জন্য যে কোনো অবদান রাখতে সক্ষম।

আজকের প্রজন্মের জন্য এটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ যে তারা তাদের শিকড় জানতে পারে, সেই ইতিহাস বোঝে এবং গৌরব অনুভব করে। আমাদের সন্তানরা সেই অদম্য সাহসী পূর্বপুরুষদের উত্তরাধিকারী। আমরা যদি ইতিহাসের পাঠশালা থেকে শিক্ষা নিই, তবে শুধু শিখে থামা নয়, সেই আদর্শকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রীতিলতার জীবন আমাদের শেখায় সততা, সাহস এবং দেশপ্রেমের মূল্যবোধকে জীবন্ত রাখা কতটা জরুরি।

নারীর মর্যাদা, স্বাধীনতার চেতনা এবং সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা—এই মূল্যবোধ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পৌঁছে দেওয়াই আমাদের কর্তব্য। প্রীতিলতার জীবন দেখায়, একজন নারী শিক্ষা, কর্মসংস্থান, সমাজসেবা এবং দায়িত্বশীলতার মাধ্যমে দেশ ও সমাজকে শক্তিশালী করতে পারে। তার আত্মত্যাগ শুধু ইতিহাস নয়, বরং আমাদের প্রতিদিনের জীবনেও পথপ্রদর্শক।

আজ আমরা প্রীতিলতার আত্মত্যাগকে স্মরণ করি এবং অঙ্গীকার করি—নারীশক্তির মর্যাদা, দেশপ্রেম এবং সমাজসেবার চেতনা আমরা জীবিত রাখব। ইতিহাসের উজ্জ্বল নক্ষত্রদের জীবন আমাদের শেখায় কখনো ভয় পাওয়া বা পিছপা হওয়া উচিত নয়। প্রীতিলতার সাহসী জীবন আমাদের জন্য চিরন্তন শিক্ষা, যা আমাদের গর্বিত করে এবং আমাদের মনে করায়—অতীতকে সম্মান এবং ভবিষ্যতের প্রজন্মের কাছে সেই আদর্শ পৌঁছে দেওয়া অপরিহার্য।

আজ, প্রীতিলতার স্মরণে আমাদের উচিত শুধুমাত্র তার আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করা নয়, বরং তার জীবন ও আদর্শ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে সমাজে নারীর ক্ষমতায়ন, ন্যায় এবং দেশপ্রেমকে বাস্তবে রূপ দেওয়া। প্রীতিলতার সাহসী মনোবল আমাদের শেখায়, নারীর শক্তি সীমাবদ্ধ নয়, এবং সঠিক পথে নেতৃত্বের মাধ্যমে তিনি সমাজে বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম। তার জীবন একটি অনন্ত প্রেরণা, যা আমাদের স্মরণ করায়—সত্যিকারের সাহস, নিষ্ঠা এবং দেশপ্রেম কোনো সময়ের জন্য পুরুষ বা নারীর সঙ্গে সীমাবদ্ধ নয়।

প্রতিটি প্রজন্মের কাছে প্রীতিলতার জীবন স্মরণ করানো প্রয়োজন। কারণ তার জীবন আমাদের শিক্ষা দেয় যে, সাহস, নৈতিকতা, দেশপ্রেম এবং নারীশক্তি মিলিয়ে এক অসাধারণ সমাজ গঠন সম্ভব। প্রীতিলতার চেতনা শুধু অতীতের ইতিহাস নয়, বর্তমান ও ভবিষ্যতের প্রজন্মের জন্য এক অনন্ত দীক্ষা। তার আত্মত্যাগ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, যে সাহস ও নিষ্ঠা থাকলে মানুষ—নারী বা পুরুষ—দেশ ও সমাজের উন্নয়নের পথ সুগম করতে পারে।

২৪ সেপ্টেম্বর, প্রীতিলতার স্মরণে আমরা শুধুমাত্র ইতিহাসের পাতায় তাকাই না, বরং তাঁর জীবন ও আদর্শ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে নিজের জীবন ও সমাজকে সমৃদ্ধ করি। সাহসী বিপ্লবী, অনুপ্রেরণার প্রতীক এবং নারীশক্তির অবিস্মরণীয় প্রতিচ্ছবি—প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার আমাদের চিরকাল স্মরণ করিয়ে দেবেন, যে সত্যিকারের দেশপ্রেম এবং সাহস কোনো লিঙ্গের সীমারেখায় আবদ্ধ নয়।

img

বাংলাদেশের ইতিহাসে রাণী ভবানী ও নাটোর রাজবাড়ী: অর্ধবঙ্গেশ্বরীর গৌরবগাথা

প্রকাশিত :  ০৯:২৫, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

সংগ্রাম দত্ত

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত নাটোর জেলা একসময় ছিল রাজকীয় ঐশ্বর্যের কেন্দ্রস্থল। এই জেলার সদর উপজেলায় অবস্থিত বিখ্যাত রাণী ভবানী রাজবাড়ী, বাংলার ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায়ের সাক্ষী। জমিদারি প্রথার উত্থান-পতনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই রাজবংশের নাম, যেখান থেকে এক নারী – রাণী ভবানী – সমগ্র বাংলার “অর্ধবঙ্গেশ্বরী” হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন।

নাটোর রাজবংশের সূচনা: অষ্টাদশ শতকের শুরুতে নাটোর রাজবংশের যাত্রা শুরু হয়। ১৭০৬ খ্রিস্টাব্দে পরগণা বানগাছির জমিদার গণেশ রায় ও ভবানীচরণ চৌধুরী রাজস্ব প্রদানে ব্যর্থ হয়ে চাকরিচ্যুত হন। তাঁদের জমিদারি কেড়ে নিয়ে দেওয়ান রঘুনন্দন তাঁর ভাই রামজীবনের নামে বন্দোবস্ত নেন। এই রামজীবনই ছিলেন নাটোর রাজবংশের প্রথম রাজা।

রাজা রামজীবন ১৭০৬ খ্রিস্টাব্দে (মতান্তরে ১৭১০ খ্রিস্টাব্দে) জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৭৩৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর নিজ সন্তান না থাকায় জীবদ্দশায় এক পুত্র দত্তক নেন—রামকান্ত।

রাণী ভবানীর আগমন:১৭৩০ খ্রিস্টাব্দে রাজা রামজীবনের দত্তকপুত্র রামকান্তের সঙ্গে বিয়ে হয় রাণী ভবানীর। রাজা রামকান্তের মৃত্যুর পর ১৭৪৮ সালে নবাব আলীবর্দী খাঁ রাণী ভবানীর হাতে জমিদারি পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেন।

রাণী ভবানীর জন্ম ১৭২৩ সালে বগুড়া জেলার আদমদিঘি থানার ছাতিয়ানগ্রাম গ্রামে। তাঁর পিতা আত্মারাম চৌধুরী ও মাতা জয়দুর্গা দেবী। অল্প বয়সেই তিনি রাজবংশের বধূ হিসেবে নাটোরে আসেন।

অর্ধবঙ্গেশ্বরী রাণী ভবানী: রাণী ভবানীর রাজত্বকালে নাটোর রাজবাড়ির প্রভাব বিস্তৃত হয় এক বিশাল অঞ্চলে। তাঁর জমিদারি ছড়িয়ে ছিল বর্তমান বাংলাদেশের রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, কুষ্টিয়া, যশোর, রংপুর জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ও মালদহ পর্যন্ত।

ইংরেজ লেখক হলওয়েলের হিসাবে, তাঁর জমিদারি থেকে বার্ষিক রাজস্ব আয় হতো প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা, যা তৎকালীন সময়ের এক বিরাট অঙ্ক। দক্ষ প্রশাসন, প্রজাহিতৈষী মনোভাব ও দানশীলতার কারণে প্রজারা তাঁকে ভালোবেসে “অর্ধবঙ্গেশ্বরী” নামে অভিহিত করেছিল।

প্রজাদের কল্যাণে দানশীল রাণী: রাণী ভবানীর জীবনযাপন ছিল অনাড়ম্বর, কিন্তু সমাজসেবায় তাঁর দৃষ্টান্ত অনন্য। তিনি শত শত মন্দির, অতিথিশালা ও রাস্তা নির্মাণ করেন। প্রজাদের জন্য পুকুর খনন করে পানীয় জলের ব্যবস্থা করেন এবং শিক্ষা বিস্তারে অনুদান প্রদান করেন।

১৭৫৩ সালে তিনি কাশীতে (বর্তমান বারাণসী) ভবানীশ্বর শিব ও দুর্গাবাড়ী, দুর্গাকুণ্ড ও কুরুক্ষেত্রতলা নামক পবিত্র স্থান নির্মাণ করেন। তাঁর উদ্যোগেই হাওড়া থেকে কাশী পর্যন্ত দীর্ঘ সড়কপথ নির্মিত হয়, যা তখন পরিচিত ছিল “রাণী ভবানী রোড” বা “বেনারস রোড” নামে।

ধর্মীয় অবদান ও দেবোত্তর সম্পত্তি: বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর শক্তিপীঠ উন্নয়নে রাণী ভবানীর অবদান আজও স্মরণীয়। কথিত আছে, তিনি প্রতি বছর দু’বার হাতি বহর নিয়ে ভবানীপুরে যেতেন।

পাকিস্তান আমলে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলেও রাণী ভবানী স্টেটের উত্তরাধিকারীরা ২৬২ একর জমি দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে ভবানীপুর শক্তিপীঠের নামে দানপত্রে নিবন্ধন করে দেন। বর্তমানে ঐ জমির একটি বড় অংশ প্রভাবশালী মহলের দখলে চলে গেছে, যার পুনরুদ্ধারে আদালতে একাধিক মামলা চলছে।

তারাপীঠে অবদান ও বামাক্ষ্যাপার নিয়োগ: বীরভূম জেলার বিখ্যাত তারাপীঠ মন্দিরও তাঁর জমিদারির অন্তর্গত ছিল। ভগ্নপ্রায় অবস্থায় থাকা মন্দিরটি তিনি পুনর্নির্মাণ করেন এবং কিংবদন্তি সাধক বামাক্ষ্যাপাকে মন্দিরের পুরোহিত হিসেবে নিয়োগ দেন।

রাণী ভবানীর রাজবাড়ি, স্থাপত্য ও ঐতিহ্য: নাটোর রাজবাড়ি নির্মাণ শুরু হয় ১৭০৬-১৭১০ সালের মধ্যে। রাজবাড়ির আয়তন প্রায় ১২০ একর, যেখানে ছোট-বড় ৮টি ভবন, ৭টি পুকুর, এবং দুটি স্তরের বেষ্টনী প্রাচীর রয়েছে।

রাজবাড়ি বিভক্ত দুই ভাগে—বড় তরফ ও ছোট তরফ। এখানকার প্রধান মন্দিরগুলো হলো শ্যামসুন্দর মন্দির, আনন্দময়ী কালিবাড়ি ও তারকেশ্বর শিবমন্দির।

রাজবংশের রাজধানী স্থাপনের জন্য রামজীবন ভাতঝাড়ার বিল এলাকা নির্বাচন করেন, যা পরবর্তীতে “নাট্যপুর” নাম ধারণ করে “নাটোর” নামে পরিচিত হয়।

জীবনের শেষ অধ্যায়: দত্তক পুত্র রামকৃষ্ণের হাতে জমিদারি দায়িত্ব অর্পণ করে রাণী ভবানী মুর্শিদাবাদ জেলার বড়নগরে চলে আসেন এবং সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ভাগীরথী নদীর তীরে তিনি নির্মাণ করেন ১০০টি শিবমন্দির, যার কিছু আজও টিকে আছে।

তাঁর মৃত্যুর পর ওয়ারেন হেস্টিংস তাঁর রংপুরের জমিদারি দখল করেন। দীর্ঘ ও কর্মবহুল জীবনের পর রাণী ভবানী ১৮০২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর, ৭৯ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন।

বর্তমান অবস্থা: নাটোর রাজবাড়ি আজ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ও পর্যটন স্থাপনা। ১৯৮৬ সাল থেকে রাজবাড়ির পুরো এলাকা জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে “রাণী ভবানী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও যুবপার্ক” নামে পরিচালিত হচ্ছে।

রাণী ভবানী কেবল নাটোর বা রাজশাহীর ইতিহাসে নয়, সমগ্র বাংলার ইতিহাসে এক আলোকবর্তিকা—যিনি প্রমাণ করেছিলেন, নারীর নেতৃত্বও রাজনীতি ও প্রশাসনে সমান সফল হতে পারে। তাঁর স্মৃতি, দানশীলতা ও প্রজাহিতৈষী মনোভাব আজও বাংলার মাটিতে কিংবদন্তি হয়ে আছে।