img

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক উজ্জ্বল পুরুষ

প্রকাশিত :  ১১:০৫, ০৫ আগষ্ট ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১১:০৯, ০৫ আগষ্ট ২০২৫

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক উজ্জ্বল পুরুষ
গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসীন নেতা শ্রী পঙ্কজ ভট্টাচার্যের সাথে লেখক সংগ্রাম দত্ত
সংগ্রাম দত্ত: পঙ্কজ ভট্টাচার্য ১৯৩৯ সালের ৬ আগস্ট চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবার ছিল রাজনৈতিকভাবে সচেতন, যা তার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক জীবনে প্রভাব ফেলেছিল। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এবং ১৯৫৯ সালে ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণের কারণে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ১৯৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এবং পরে নির্বাহী সভাপতি নির্বাচিত হন।

পঙ্কজ ভট্টাচার্য ষাটের দশকে পাকিস্তানি সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৬৬ সালে তাকে "স্বাধীন বাংলা ষড়যন্ত্র মামলা"য় গ্রেপ্তার করা হয় এবং তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ১৯ দিন কাটান। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর উপ-কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতার পর তিনি  প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিনি তিন জোটের যৌথ ঘোষণাপত্র প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৯৩ সালে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত গণফোরামের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। পরে তিনি "সমাজিক আন্দোলন" নামে একটি প্রগতিশীল প্ল্যাটফর্ম গঠন করেন এবং ২০১৩ সালে ঐক্য ন্যাপ প্রতিষ্ঠা করেন।

পঙ্কজ ভট্টাচার্যের স্ত্রী ছিলেন নারী অধিকারকর্মী রাখী দাস পুরকায়স্থ, যিনি ২০২২ সালে মৃত্যুবরণ করেন। এই দম্পতির কোনো সন্তান ছিল না। পঙ্কজ ভট্টাচার্য ২০২৩ সালের ২৩ এপ্রিল ঢাকার হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। 
পঙ্কজ ভট্টাচার্য ছিলেন একজন আপসহীন রাজনীতিবিদ, যিনি কখনো পদ-পদবির জন্য রাজনীতি করেননি। তিনি রাজনীতিকে একটি অঙ্গীকার হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন এবং আজীবন গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও প্রগতিশীলতার পক্ষে লড়াই করেছেন। তার আত্মজীবনী "আমার সেই সব দিন" ২০২৩ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি মূল্যবান দলিল হিসেবে বিবেচিত।
পঙ্কজ ভট্টাচার্যের জীবন ও কর্ম বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

img

প্রথম সপ্তাহেই জমজমাট ইসলামী বইমেলা

প্রকাশিত :  ০৯:৪৮, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসীন নেতা শ্রী পঙ্কজ ভট্টাচার্যের সাথে লেখক সংগ্রাম দত্ত

শুরুতেই জমে উঠেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত মাসব্যাপী ইসলামী বইমেলা । সাধারণত প্রথম সপ্তাহে মেলায় দর্শনার্থী ও ক্রেতার ভিড় তুলনামূলক কম থাকে, কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। শুরু থেকেই পাঠক-দর্শনার্থীর উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো, ফলে মেলায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।

শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ছুটির দিনে বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে দর্শনার্থীর ভিড় ছিল উপচেপড়া। কেউ বই দেখেছেন, কেউ কিনেছেন, আবার কেউ লিটলম্যাগ কর্নারে বসে আড্ডা দিয়েছেন তরুণ লেখক ও পাঠকদের সঙ্গে। নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের অনুষ্ঠানও হয়েছে।

গার্ডিয়ান পাবলিকেশনসের জেনারেল ম্যানেজার নাজমুল হুদা জানান, এবারের মেলায় শুরু থেকেই পাঠকের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘মেলা শুরু হয়েছে মাত্র এক সপ্তাহ আগে, এর মধ্যেই পাঠকদের আনাগোনা বেড়েছে। এবারের বইমেলা নিয়ে প্রচারণাও বেড়েছে। শুরু থেকেই মূলধারার গণমাধ্যমে মেলার খবর প্রকাশ হওয়ায় পাঠকের আগ্রহও বেড়েছে।’

এখন পর্যন্ত সীরাত ও শিশু বিষয়ক বইয়ের প্রতি পাঠকের আগ্রহ বেশি বলে জানান তিনি। শুক্রবার ছুটির দিনে বেচাবিক্রিও তুলনামূলক বেড়েছে।

সমকালীন প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী আরিফুল হক জানান, এবারের বইমেলা একেবারেই ভিন্ন। প্রথমবারের মতো বিদেশি প্রকাশনী অংশ নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘অন্য দিনের তুলনায় আজ বেশ ভালোই বিক্রি হচ্ছে। সামনে বিদেশি প্রকাশনীর অংশগ্রহণ আরও বাড়বে ইনশাআল্লাহ।’

মেলায় ঘুরতে আসা তাশরীফ মাহমুদ নামে এক পাঠক বলেন, ‘এখনো ঘুরে ঘুরে বই দেখছি, আড্ডা দিচ্ছি। আজ বই কিনবো না, সামনের সপ্তাহ থেকে পছন্দের বই কেনা শুরু করবো।’

প্রতি বছরের মতো এবারও রবিউল আওয়াল মাস উপলক্ষে মাসব্যাপী ইসলামী বইমেলার আয়োজন করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এবারের মেলায় ১৯৯টি স্টল বসানো হয়েছে। এতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, দেশের স্বনামধন্য ইসলামী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ও পুস্তক ব্যবসায়ীরা অংশ নিয়েছেন। পাশাপাশি মিশর, লেবানন ও পাকিস্তানের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানও অংশগ্রহণ করেছে।

এ ছাড়া মেলায় রয়েছে লেখক কর্নার, ফুড কর্নার, আলোচনা সভা ও কবিতা পাঠের আয়োজন। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এবং ছুটির দিনে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে।